ভয়াবহ: এখানেই মহরআলিকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
বাবাকে গুলি করে, গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। শনিবার রাত ৯টা নাগাদ বনগাঁ থানার কেউটিপাড়া এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম মহরআলি গোলদার (৪৫)। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। শনিবার রাতেই তাঁর ছেলে আসানুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বনগাঁর পুলিশ সুপার তরুণ হালদার বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, পারিবারিক অশান্তির জেরে আসানুর তার বাবাকে খুন করেছে। খুনের ধরণ দেখে মনে হচ্ছে, পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছে। কোথা থেকে ধৃত আগ্নেয়াস্ত্র জোগাড় করল, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহর কাঠ কাটার কাজ করতেন। দুই ছেলে হাসানুর ও আসানুর। আসানুর বড়। পেশায় গাড়ির চালক। পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, মহর নেশা করতেন। স্ত্রী তহমিনাকে মারধর করতেন বলে অভিযোগ। স্ত্রীকে মেরে ফেলতে বার কয়েক দা নিয়ে তাড়াও করেছেন বলে জানাচ্ছেন পাড়া-পড়শিরা। ছেলেরা বাধা দিলে তাদেরও মারধর করতেন মহর।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতেও মহর নেশা করে বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে মারধর করেন। আসানুর প্রতিবাদ জানায়। বাবা-ছেলের মধ্যে তর্কাতর্কি বাধে। তহমিনা বৌমাকে নিয়ে পাশে এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান। বাবা-ছেলের গোলমাল তখনও থামেনি।
পুলিশ জানতে পেরেছে, কিছুদিন আগে পাকা বাড়ি তৈরির জন্য বাবার থেকে কিছু টাকা ধার নেয় আসানুর। শনিবার রাতে গোলমাল চলাকালীন সে প্রসঙ্গ ওঠে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে টাকা ফেরত চান মহর।
অভিযোগ, গোলমালের মাঝে আসানুর গুলি চালিয়ে দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে যান মহর। অভিযোগ, তাঁর শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় আসানুর। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পোড়া দেহ উদ্ধার করে।
তহমিনা বলেন, ‘‘বিয়ের পর থেকেই স্বামী নেশা করে মারধর করত। ছেলেরা বড় হয়েছে। তারা প্রতিবাদ করত। ছেলেরা আমাকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।’’ শনিবারের ঘটনা প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘মাকে মারধর করা হয় তো মেনে নিতে পারেনি। রাগের মাথায় এই কাণ্ড করেছে।’’ খুনের কথা অস্বীকার করছে না আসানুর নিজেও। তার কথায়, ‘‘ ‘‘পারিবারিক সমস্যা ছিল। সে জন্য রাগের মাথায় বাবাকে মেরে ফেলেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy