Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জল ঠেলে ক্লাসে আসে ছেলেমেয়েরা

এখনও বর্ষা পুরোপুরি নামেনি। ক’দিনের ছিটেফোঁটা বৃষ্টিতেই মাঠ ভর্তি জল। আর সেই জল পেরিয়েই যেতে হচ্ছে বসিরহাটের সোলাদানা অবৈতনিক বিদ্যালয় এবং সোলাদানা এমএসকে স্কুলের পড়ুয়াদের।

স্কুল-ফেরতা হাঁটুজলে। ছবি: নির্মল বসু।

স্কুল-ফেরতা হাঁটুজলে। ছবি: নির্মল বসু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬ ০৮:২০
Share: Save:

এখনও বর্ষা পুরোপুরি নামেনি। ক’দিনের ছিটেফোঁটা বৃষ্টিতেই মাঠ ভর্তি জল। আর সেই জল পেরিয়েই যেতে হচ্ছে বসিরহাটের সোলাদানা অবৈতনিক বিদ্যালয় এবং সোলাদানা এমএসকে স্কুলের পড়ুয়াদের।

পড়ুয়া, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা কিছু দিন ধরে হাতে জুতো নিয়ে খালি পায়ে জলের উপর দিয়ে স্কুলে যাচ্ছেন। এলাকার নিকাশি বেহাল বলেই এমন অবস্থা হয় বলে জানালেন ক্ষিপ্ত অভিভাবকেরা। তাঁদের বক্তব্য, সমস্যাটা শুধু এ বারের নয়। বছরের পর বছর ধরে চলছে এই পরিস্থিতি। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে নিকাশি নালার সংস্কার হওয়া উচিত। শিক্ষকদের মতে, তা না হলে স্কুল চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

শাঁকচুড়ো-বাগুণ্ডি পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী জহুরুল হক বলেন, ‘‘বিষয়টি আমরা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। জল একটু কমলেই বালি ফেলে আগে মাঠ উচুঁ করার কাজ শুরু হবে। আগামী দিন কুড়ির মধ্যে নিকাশি নালাও সংস্কার হবে।’’

সোমবার সোলাদানা স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, স্কুলের সামনের মাঠে হাঁটু সমান জল। তার উপর দিয়ে প্যান্ট, স্কার্ট গুটিয়ে স্কুলে ঢুকছে পড়ুয়ারা। সোলাদানা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অন্নপূর্ণা রায় বলেন, ‘‘একটু বৃষ্টিতেই স্কুলের মাঠে হাঁটু-সমান জল জমে যায়। নিকাশি নালাগুলি বন্ধ হয়ে রয়েছে বলেই এই অবস্থা। অথচ পাশেই ইছামতী নদী। কিন্তু তা-ও মাঠের জল নামে না।’’ জল ভেঙে ক্লাসে আসতে গিয়ে অনেক পড়ুয়া পড়ে গিয়ে জলে হাবুডুবু খায়। হাত-পা ভাঙার ঘটনাও ঘটেছে। পোশাক, ব্যাগ ভিজে যায়। এ ভাবে চলতে থাকলে যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে বলে মনে করেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

সোলাদানা এমএসকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিকাশি নালা পরিষ্কার হয় না। সে কারণে, এক দিন বৃষ্টি হলেই মাঠে জল জমে যায়। আর সেই জল প্রায় পনেরো দিনের মতো থাকে। পঞ্চায়েত প্রধানকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’ এ সময়ে অভিভাবকেরা পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠাতে চান না। মাঠের পাশে থাকা বাথরুমের ময়লা ওই জলে মিশে যায়। দূষিত জলের জন্য নানা চর্মরোগ হয়।

অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া রকেয়া খাতুন, মামিনা খাতুন, পঞ্চম শ্রেণির আসিক বিল্লা ঢালি ও সেলিম মোল্লারা বলে, ‘‘বৃষ্টি হলেই পড়াশোনার ক্ষতি হয়। জল পেরিয়ে রোজ স্কুলে আসা যায় না। ফলে ক্লাসের পড়ায় পিছিয়ে পড়ি।’’ শুধু স্কুল নয়, ওই মাঠে এলাকার ছেলেদের ফুটবলের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু জলের জন্য তা-ও বন্ধ থাকে। এলাকার ফুটবলার বাকি বিল্লা মণ্ডল-সহ কয়েকজনের উদ্যোগে ওই মাঠে ফুটবল প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বাকি বিল্লা বলেন, ‘‘এখানে বহু ছেলে ফুটবলের প্রশিক্ষণ নেয়। বহু নামী ফুটবলারও এই মাঠে খেলে গিয়েছেন। মাটি ফেলে মাঠ উচুঁ না করার জন্যই জল জমে। তা ছাড়া, বাজারের পাশ দিয়ে যাওয়া নিকাশি নালা দীর্ঘদিন পরিষ্কার হয় না। সেই কারণেও অল্প বৃষ্টিতে জল জমে যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water log student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE