Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Bonhooghly

বনহুগলিতে বিক্ষোভ প্রত্যাহার পড়ুয়াদের, তবে চলবে ধর্না

সোমবার রাতে ওই কলেজে স্নাতক স্তরের দ্বিতীয় বর্ষের এর পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলেজ পরিচালনায় কর্তৃপক্ষের একাধিক গাফিলতির দিকে আঙুল তুলে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন পড়ুয়ারা।

অবস্থানে অনড় পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।

অবস্থানে অনড় পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:০২
Share: Save:

প্রায় দু’দিন ধরে বিক্ষোভের পরে বুধবার তা প্রত্যাহার করে নিলেন বনহুগলির জাতীয় গতিশীল দিব্যাঙ্গন সংস্থানের (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর লোকোমোটর ডিজ়এবিলিটিজ় বা এনআইএলডি) পড়ুয়ারা। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে সেখানে পুনরায় পরিষেবা স্বাভাবিক হবে। তবে পড়ুয়াদের শর্ত অনুযায়ী, সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা চিকিৎসা পরিষেবায় অংশ নেবেন না। বরং কলেজ ও সংস্থা চত্বরে চলবে ধর্না।

সোমবার রাতে ওই কলেজে স্নাতক স্তরের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া প্রিয় রঞ্জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলেজ পরিচালনায় কর্তৃপক্ষের একাধিক গাফিলতির দিকে আঙুল তুলে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন পড়ুয়ারা। সংস্থার দরজা আটকে দেওয়ায় রোগী পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকেন শিক্ষক, থেরাপিস্ট থেকে আধিকারিকেরা। যদিও কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই ছাত্রের মৃত্যুর পিছনে র‌্যাগিং রয়েছে। র‌্যাগিংয়ের কারণেই মৃত্যু বলে পুলিশে অভিযোগ করেছেন মৃতের পরিজনেরাও। সূত্রের খবর, তারই ভিত্তিতে পুলিশ ৩০৬ নম্বর ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করে তদন্ত শুরু করেছে। ওই ছাত্রের ঘর থেকে পাওয়া চিরকুটের হাতের লেখা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

বিক্ষোভের জেরে এ দিন সকালেও এনআইএলডি-র দরজা বন্ধ করে রাখেন পড়ুয়ারা। ফলে অসংখ্য রোগী হাসপাতালে এসে ফিরে যান। এনআইএলডি-র অধিকর্তা পতিতপাবন মোহান্তি ও অন্যান্য আধিকারিক, শিক্ষকেরা দরজার বাইরেই রোগীদের পরিষেবা দেন। কৃত্রিম পায়ের জন্য মঙ্গলবার মালদহ থেকে আসা মহাবীর ঘোষ চিকিৎসা না পেয়ে এক রাত রাস্তাতেই থেকে গিয়েছিলেন। কিন্তু এ দিনও পরিষেবা না পেয়ে তিনি ফিরে যান। রিহ্যাবিলিটেশন সংস্থায় ভর্তি রোগীর পরিজনেরাও এ দিন দেখা করতে পারেননি। দুপুর পর্যন্ত কয়েক বার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে অধিকর্তা কথা বললেও জট কাটেনি। তখন তিনি জানান, পড়ুয়াদের দাবি মতো ডেপুটি ডিরেক্টরের (প্রশাসন) পদ থেকে এক শিক্ষককে সরানো হয়েছে।

এর পরে পড়ুয়ারা দাবি তোলেন, কলেজে এক-এক জন শিক্ষক বা আধিকারিক একাধিক পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে রয়েছেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। দুপুরে অধিকর্তা ফের পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনা করে জানান, তাঁদের দাবি ন্যায্য হলে তা পূরণ করা হবে, তবে তা লিখিত দিতে হবে। তখন পড়ুয়ারা অভিযোগ করেন, বিক্ষোভ করার জন্য পরীক্ষায় কম নম্বর দেওয়া হবে বলে তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তা নিয়ে অধিকর্তা পড়ুয়াদের আশ্বাস দিলে সন্ধ্যায় তাঁরা লিখিত ভাবে দাবিপত্র জমা দেন।

ওই দাবিপত্রে দাবি করা হয়েছে— কলেজের দায়িত্বে এক জনকে থাকতে হবে, পুরোমাত্রায় কলেজ প্রশাসনের দায়িত্বে কাউকে থাকতে হবে, কেন্দ্রীয় দলকে আসতে হবে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়ারা চিকিৎসা পরিষেবা দেবেন না, দুর্ব্যবহারকারী কর্মীদের ক্ষমা চাইতে হবে। অধিকর্তা বলেন, “বিষয়গুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।”

বিক্ষোভকারীদের পক্ষে নীলকণ্ঠ ভট্টাচার্য বলেন, “শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে রোগীদের ভোগান্তির জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। প্রিয় রঞ্জনের মৃত্যুর নেপথ্যে কর্তৃপক্ষের গাফিলতি-সহ নিজেদের দাবিগুলি লিখিত ভাবে জানিয়েছি। ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে সুরাহা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bonhooghly Students Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE