Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

উড়ালপুলের জন্য শুরু হল সমীক্ষা

যশোর রোডের তীব্র যানজট সমস্যা মেটাতে প্রস্তাবিত দু’টি উড়ালপুল তৈরির জন্য সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হল। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার থেকে ওই কাজ শুরু হয়েছে।

মাপজোকের কাজ চলছে। — নিজস্ব চিত্র।

মাপজোকের কাজ চলছে। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাবরা শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৬ ০৩:২২
Share: Save:

যশোর রোডের তীব্র যানজট সমস্যা মেটাতে প্রস্তাবিত দু’টি উড়ালপুল তৈরির জন্য সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হল।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার থেকে ওই কাজ শুরু হয়েছে। চলবে সোমবার পর্যন্ত। রোজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সমীক্ষার কাজ চলছে। বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘দু’টি উড়ালপুল তৈরির জন্য সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদের স্থানীয় জয়গাছি সুপার মার্কেট এলাকায় হকার্স মার্কেট তৈরি করে দেওয়া হবে। ওই মার্কেট তৈরির জন্য দরপত্র ডাকার কাজ শীঘ্রই হবে।’’ পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস, থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কর্তারা এই কাজ করছেন। নীলিমেশবাবু বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ১ নম্বর রেলগেট থেকে নগরউখরা মোড় পর্যন্ত সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। তাতে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত হিসাবে ৪৫৬ জনের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।’’

হাবরার বাসিন্দারা যানজট সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বহু বছর ধরেই শহরে উড়ালপুল তৈরির দাবি জানিয়েছেন। রাজনৈতিক দলগুলির কাছ থেকে বহু প্রতিশ্রুতি পেলেও এত দিন তা পূরণ হয়নি। নানা জটিলতায় বার বার আটকে গিয়েছে যশোর রোড সম্প্রসারণের কাজ। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে যশোর রোড সম্প্রসারণের কাজে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। দিন কয়েক আগে জেলাশাসকের দফতরে ওই কাজ কী ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়েও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। তারপরেই কাজে গতি এসেছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবরা শহরে যশোর রোডে উপর বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখায় দু’টি রেলগেট আছে। তীব্র যানজটের অন্যতম প্রধান কারণ হল, ওই গেট দু’টি। রেলগেটের কারণে যানের গতি এখানে থমকে গিয়েছে।

বারাসত থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার যশোর রোড সম্প্রসারণের অঙ্গ হিসাবে হাবরায় দু’টি উড়ালপুল তৈরির প্রস্তাব নিয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। দু’টি উড়ালপুল হবে প্রায় ১২০০ মিটার দীর্ঘ। একটি বিটি কলেজ মোড় থেকে শুরু করে ২ নম্বর রেলগেট পেরিয়ে শেষ হবে দেশবন্ধু পার্কের সামনে। অন্যটি তার ১০০ মিটার পর থেকে শুরু হয়ে ১ নম্বর রেলগেট পেরিয়ে শেষ হবে পোস্ট অফিস মোড়ের কাছে। ওই কাজের জন্য প্রাথমিক কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। খরচ ধরা হয়েছে ২৩০ কোটি টাকা। উড়ালপুল দু’টি ১৪ মিটার করে চওড়া হবে। তার নীচ দিয়ে ১১ মিটার চওড়া রাস্তাও হবে।

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত রাস্তার পাশে সে সব সরকারি জায়গা জবরদখল করে রাখা হয়েছে, তা এখন চিহ্নিত করা হচ্ছে। প্রয়োজনে কিছু জমি অধিগ্রহণও করা হতে পারে। সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করতে গিয়ে মাপজোক করা হচ্ছে। একটি ফর্মও তাঁদের দিয়ে পূরণ করানো হচ্ছে। তাতে তাঁরা কত দিন ধরে ব্যবসা করছেন, পুরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া হয়েছে কিনা— এমন নানা তথ্য থাকছে।

যশোর রোড সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপ রয়েছে প্রশাসনের উপরে। যশোর রোডে ফুটপাত বলতে কিছু নেই। সবই বেদখল হয়ে গিয়েছে। বেআইনি কারণে রাস্তা দিয়ে হাঁটা যায় না। বড় দোকানের সামনে ছোট ছোট অস্থায়ী দোকান তৈরি হয়েছে। সড়কের উপরে যত্রতত্র গজিয়ে উঠেছে বেআইনি গাড়ির পার্কিং। ১০ মিনিটের পথ পেরোতে কাজের দিন সকালে সময় লাগে প্রায় ৪০ মিনিট। জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘যশোর রোড সম্প্রসারণ আমরা করবই। এতে সকলের সহযোগিতা চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Survey flyover
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE