Advertisement
E-Paper

সে দিনের সঙ্গে ফারাক বিস্তর, সন্দেশখালিতে ফের হাজির ইডি, পুরোপুরি রণসাজে সিআরপি, পুলিশও

বুধবার সকাল ৭টা নাগাদ ৬ জন ইডি আধিকারিক ১২৫ জন সিআরপিএফ জওয়ানকে নিয়ে ২৫টি গাড়িতে চড়ে সন্দেশখালির সরবেড়িয়া গ্রামে পৌঁছন। আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল রাজ্য পুলিশও।

সারমিন বেগম

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:২৬
বুধবারের তল্লাশিতে প্রস্তুত হয়েই এসেছেন সিআরপিএফের জওয়ানেরা। ভিড় সামলাতে সঙ্গে রাখা হয়েছে কাঁদানে গ্যাসও (ডান দিকে)।

বুধবারের তল্লাশিতে প্রস্তুত হয়েই এসেছেন সিআরপিএফের জওয়ানেরা। ভিড় সামলাতে সঙ্গে রাখা হয়েছে কাঁদানে গ্যাসও (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

মাঝে ব্যবধান ১৯ দিনের। তার মধ্যেই বদলে গিয়েছে পুরো চিত্রপট। সে দিন ধারেকাছে দেখা মেলেনি রাজ্য পুলিশের। আর বুধবার আবারও একই জায়গায় পৌঁছলেন ইডি আধিকারিকরা। কিন্তু এ দিনের চিত্রপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। সন্দেশখালির সরবেড়িয়া গ্রাম যেন রাতারাতি পরিণত হয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে। রাজ্য পুলিশ এবং সিআরপিএফে ছয়লাপ এলাকা। আর কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের দেখা যাচ্ছে পুরোপুরি তৈরি হয়ে এসেছেন। দেখা মিলছে না সে দিন গোলমাল পাকানো ‘দাদার’ এক জনও ‘অনুগামী’কে।

প্রস্তুত রয়েছে রাজ্য পুলিশও।

প্রস্তুত রয়েছে রাজ্য পুলিশও। —নিজস্ব চিত্র।

গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। তদন্তকারী আধিকারিকদের সূত্রে খবর, রেশন দু্র্নীতিকাণ্ডের সূত্র ধরে শাহজাহানের বাড়িতে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেখানে তাঁরা প্রবল জনবিক্ষোভের মুখে পড়েন। গ্রামবাসীদের হাতে বেধড়ক মার খান তাঁরা। পালিয়ে প্রাণ বাঁচাতে হয় ইডি আধিকারিক এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। তিন জন ইডি আধিকারিককে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। এক জনের চোট ছিল গুরুতর। ওই দিন বাড়িতে গিয়ে যদিও শাহজাহানের দেখা মেলেনি। ইডির দাবি, শাহজাহানের বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছিলেন ৮০০ থেকে ১০০০ লোক। সকলেই তৃণমূল নেতার ‘অনুগামী’। এই ঘটনায় সন্দেশখালির ন্যাজাট থানায় পর পর তিনটি এফআইআর দায়ের হয়। ইডি একটি এফআইআর দায়ের করে। একটি এফআইআর করা হয় পুলিশের তরফে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে। এ ছাড়া, ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মহিলা ও শিশুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ তুলে একটি এফআইআর দায়ের হয় একই থানায়।

এই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বসিরহাট পুলিশ জেলার উচ্চপদস্থ কর্তাদের ইডি জানিয়েছিল, আবারও তারা শাহজাহানের গ্রামে যাচ্ছেন। বুধবার সকাল ৭টায় কলকাতা থেকে ২৫টি গাড়ির কনভয় নিয়ে সন্দেশখালিতে হাজির হন ৬ জন ইডি আধিকারিক। তাঁদের নিরাপত্তা দিতে হাজির যুদ্ধসাজে সজ্জিত শতাধিক সিআরপিএফ জওয়ান। ইডির সঙ্গেই ঘটনাস্থলে আসেন ন্যাজাট থানার ওসি। সেই সঙ্গেই বিশাল রাজ্যের পুলিশবাহিনী।

স্থানীয় সূত্রে খবর, রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি রয়েছে রাজ্য পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত র‌্যাফ। সকলকেই দেখা যাচ্ছে, হেলমেট পরিহিত, হাতে লাঠি বা আধুনিক অস্ত্র। শাহজাহানের বাড়ির ফটকে দাঁড়িয়ে রয়েছেন রাজ্য পুলিশের জওয়ানরা। সঙ্গে রয়েছেন সিআরপিএফ জওয়ানরাও। বাড়ি থেকে বড় রাস্তায় যাওয়ার জন্য রয়েছে এক চিলতে রাস্তা। সেই ১০০ মিটার রাস্তাও পুরোপুরি মোড়া খাকি, জলপাই পোশাক পরিহিত দীর্ঘদেহীদের দিয়ে। বড় রাস্তার দখলও পুরোপুরি নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে। জায়গায় জায়গায় তাঁরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। সাধারণ মানুষের আনাগোনাও একেবারেই হাতেগোনা। শাহজাহানের নামে রয়েছে একটি আস্ত বাজার। তারও দখল নিয়েছে রাজ্য পুলিস এবং সিআরপিএফ।

সব মিলিয়ে ৫ জানুয়ারির সঙ্গে ফারাক বিস্তর। বুধবার, যেন পুরোপুরি রণসজ্জায় সজ্জিত হয়ে তৃণমূল নেতার বাড়িতে অভিযানে নামল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। রাজ্য পুলিশও যোগ্য সঙ্গতে।

Enforcement Directorate Shahjahan Sheikh West Bengal Ration Distribution Case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy