E-Paper

বেশি মধু মিলবে এ বার, আশাবাদী বন দফতর

এ বার মধুর দাম অনেকটাই বাড়িয়েছে বন দফতর। গত বছর কেজি প্রতি ১৮০ টাকা করে দাম পেয়েছেন মৌলেরা। এর সঙ্গে ২০ টাকা বাড়তি দেওয়া হত মধু সংগ্রহের পারিশ্রমিক হিসেবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:৩৩
মধু সংগ্রহ করছেন মৌলেরা। —ফাইল চিত্র।

মধু সংগ্রহ করছেন মৌলেরা। —ফাইল চিত্র।

সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায় শুক্রবার থেকে শুরু হল মধু সংগ্রহ। সজনেখালি ও বসিরহাট দু’টি রেঞ্জের অন্তর্গত বনাঞ্চলে মধু সংগ্রহের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন মৌলেরা। এ বার সুন্দরবন থেকে সংগৃহীত মধুর জন্য বাড়তি দাম দেওয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বন দফতর। সে কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বার অনেক বেশি মৌলে মধু সংগ্রহে যাচ্ছেন। তা ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় মৌচাকও বেশি হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। ফলে সব মিলিয়ে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বার অনেক বেশি মধু মিলবে বলে আশাবাদী বন দফতর।

বন দফতর সূত্রের খবর, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায় এ বার ৭৫টি দল মধু সংগ্রহ অভিযানে নেমেছে। ৫৭৬ জন মৌলে আগামী একমাস ধরে দু’দফায় সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে মধু সংগ্রহ করবেন। সেই মধু তাঁরা বিক্রি করবেন বন দফতরের কাছে। গত বছর ৪৩টি দলে প্রায় ৩০০ জন মৌলে মধু সংগ্রহ করতে বেরিয়েছিলেন।

এ বার মধুর দাম অনেকটাই বাড়িয়েছে বন দফতর। গত বছর কেজি প্রতি ১৮০ টাকা করে দাম পেয়েছেন মৌলেরা। এর সঙ্গে ২০ টাকা বাড়তি দেওয়া হত মধু সংগ্রহের পারিশ্রমিক হিসেবে। বন দফতর জানিয়েছে, চলতি বছর থেকে গুণমান বিচার করে দু’টি ভাগে ভাগ করা হবে সংগৃহীত মধু। মধুতে ২৩ শতাংশের বেশি জল থাকলে সেই মধু বন দফতর কেজি প্রতি ২২৫ টাকা করে দাম দেবে। অন্য দিকে, ২৩ শতাংশের কম জল থাকলে সেই মধুর দাম কেজি প্রতি ২৫০ টাকা করে পাবেন মৌলেরা। পাশাপাশি, প্রতি কেজিতে এ বারও ২০ টাকা করে পারিশ্রমিক পাবেন তাঁরা। সুন্দরবনের মধুর চাহিদা গত দু’তিন বছরে যথেষ্ট বেড়েছে। সে কারণে এর বাজার দরও বর্তমানে অনেকটাই বেশি। মৌলেরা যে ভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহ করেন, তাতে এই বাড়তি দাম তাঁদের আরও উৎসাহিত করবে বলেই দাবি বন দফতরের। গত বছর সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের অন্তর্গত এলাকা থেকে ১২ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহ করেছিলেন মৌলেরা। মৌলের সংখ্যা বাড়ায় এ বার আরও বেশি পরিমাণ মধু মিলবে বলেই আশাবাদী বন দফতর। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বার প্রায় দ্বিগুন সংখ্যা মৌলে মধু সংগ্রহে গিয়েছেন। আশা করছি ১৬ থেকে ২০ মেট্রিক টন মধু মিলবে।”

বেশি মধু পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী মৌলেরাও। কুলতলির দেউলবাড়ির বাসিন্দা গোপাল পৈলান বলেন, “গত দু’বছরে তেমন বড় ঝড় হয়নি। ফলে বড় মৌচাক পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমপান, ইয়াসের জন্য গত দু’তিন বছর মৌমাছি অনেক কম ছিল জঙ্গলে। এ বার প্রচুর মৌমাছি আছে। ফলে মধু বেশি হবে। দাম বাড়ানোয় অনেক বেশি মৌলে এ বার জঙ্গলে যাচ্ছেন।”

মৌলেদের নিরাপত্তার জন্য ‘অপারেশন গোল্ডেন হানি’ নামক বিশেষ ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে মৌলেরা সুন্দরবনের যে এলাকায় মধু সংগ্রহ করবেন, বন দফতরের একটি টহলদারি দলও সেখানে থাকবে। মৌলেরা সমস্যায় পড়লে, টহলদারি দল দ্রুত পৌঁছে সাহায্য করবে। অন্য বছরের মতো মৌলেদের জন্য মাথা-পিছু পাঁচ লক্ষ টাকা বিমার ব্যবস্থাও করেছে বন দফতর।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Honey Sundarbans Forest Departemnt

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy