‘দাগি’-র তালিকায় নাম রয়েছে পানিহাটির বিধায়কের পূত্রবধূর। শনিবার সন্ধ্যায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বেআইনি ভাবে চাকরি প্রাপকদের তালিকায় এই নাম প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে শোরগোল শুরু হয়েছে পানিহাটিতে। বিরোধীদের কটাক্ষ, পুরো পানিহাটি ‘ঘোষ পরিবার’-এর নিয়ন্ত্রণে!
অযোগ্যদের তালিকায় ১২৬৯ নম্বরে নাম রয়েছে পানিহাটির তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষের বড় পুত্রবধূ শম্পা ঘোষের। ২০১৬ সালে তিনি নৈহাটির মহেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা পদে নিযুক্ত হন। শিক্ষক নিয়োগে যোগ্য-অযোগ্যের বিতর্কের সময় থেকেই শম্পার নিয়োগ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। এই আবহেই সম্প্রতি পানিহাটি মহাবিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির সভানেত্রী করা হয় শম্পাকে। কী ভাবে তাঁকে ওই পদে বসানো হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল স্থানীয় স্তরে, শাসকদলের অন্দরেই।
শনিবার দাগি তালিকায় শম্পার নাম প্রকাশিত হতেই বিতর্ক আরও বেড়েছে। বিরোধীদের কটাক্ষ, গোটা পানিহাটি জুড়ে রাজনীতি থেকে নিয়োগ, স্কুল পরিচালন কমিটি— সর্বত্র একটি বিশেষ ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর যে পরিবারতন্ত্র চলছে, তার প্রমাণ আবারও মিলল। শম্পার নিয়োগ বিতর্কিত হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে ক্ষমতাবলে অন্য স্কুলের পরিচালন কমিটির সভানেত্রী করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ। পূত্রবধূকে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে শিক্ষিকার চাকরি বিধায়কই পাইয়ে দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ বিরোধীদের।
যদিও রবিবার কোনও বিষয়েই মন্তব্য করতে চাননি শম্পা। আর নির্মল বলেন, ‘‘হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে এ বিষয়ে মামলা চলছে। সবটাই আদালতের নির্দেশে হয়েছে। এ বার আদালতেই সত্য-মিথ্যা বেরিয়ে আসবে।’’ বিজেপি নেতা কৌশিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভাই, ছেলে, মেয়ে, বৌমাকে সমস্ত পদে বসিয়ে পানিহাটি পরিচালনার নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখতে চান বিধায়ক। বহু বছর ধরে এই সংস্কৃতি চলছে।’’ কৌশিকের প্রশ্ন, ‘‘তৃণমূল দল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কত দিন ধরে এমন নির্মল ঘোষদের হাতে পানিহাটির মানুষকে অত্যাচারিত হওয়ার জন্য ছেড়ে রাখবেন?’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)