Advertisement
E-Paper

না পাওয়া ঋণ শোধের চাপ

ওই বছরের নভেম্বর মাসে নিগমের তরফে চিঠি দিয়ে টাকা মঞ্জুরের কথা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের শাখায় যোগাযোগ করতে বলা হয়। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান, অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি। বিষয়টি নিয়ে সংখ্যালঘু দফতরে খোঁজ নিতে গেলে সেখানকার আধিকারিকেরা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ১৩:০০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বাম জমানায় রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম ঋণ মঞ্জুর করেছিল। কিন্তু অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি। অথচ সুদ-সহ টাকা শোধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এই অভিযোগ নিয়ে এক ব্যক্তি বিশ বছর ধরে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে ঘুরে চলেছেন। প্রতিকার মেলেনি।

সৈয়দ আলি আহদ নামে ওই ব্যক্তি উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার খাসপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জানান, স্নাতক হওয়ার পরে বেলেঘাটার লেদার টেকনোলজি ইন্সটিটিউট থেকে ডিপ্লোমা করে দেগঙ্গার বেড়াচাপায় জুতোর কারখানা করার জন্য রাজ্য সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্তনিগমে আবেদন‌ করেছিলে‌ন। ১৯৯৭ সালে ৮৫,৫০০ টাকা মঞ্জুর হওয়ার চিঠি আসে। সেই মতো একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বারাসত শাখায় তিনি সাড়ে ৪ হাজার টাকা জমা দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলে‌‌ন।

ওই বছরের নভেম্বর মাসে নিগমের তরফে চিঠি দিয়ে টাকা মঞ্জুরের কথা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের শাখায় যোগাযোগ করতে বলা হয়। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান, অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি। বিষয়টি নিয়ে সংখ্যালঘু দফতরে খোঁজ নিতে গেলে সেখানকার আধিকারিকেরা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ।

আহদের অভিযোগ, টাকা না পেলেও এক বছর পরে ঋণের কিস্তি শোধের নোটিস আসে। বিত্ত নিগমের অফিসে বিষয়টি জানিয়েও লাভ হয়নি। উল্টে ‘রিকভারি এজেন্ট’ টাকা আদায়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। ২০০৯ সাল থেকে চলছে এই পরিস্থিতি। কখনও ব্যাঙ্কের চিঠি আসে তো কখনও বাড়িতে হাজির হয় রিকভারি এজেন্ট।

আহদের অভিযোগ, নিগমের লোকজন টাকা আত্মসাতে জড়িত থাকতে পারেন। ২০০১ সালে তৎকালীন বিভাগীয় মন্ত্রীকে তিনি বিষয়টি জানান। সংশ্লিষ্ট জেনারেল ম্যানেজারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এর পরে দেগঙ্গা থানায় এবং সিআইডিতেও ঘটনার তদন্ত চেয়ে অভিযোগ করেন। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। পরে হাবরার তৎকালীন বিধায়ক তপতী দত্ত বিধান‌সভায় বিষয়টি তোলেন।

আহদের দাবি, ‘‘আমার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। টাকা কোথায় গেল, তথ্যের অধিকার আইনে তা জানতে চেয়েও উত্তর পাইনি। যে টাকা পেলামই না, তা শোধ করতে হবে বলে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমার ভবিষ্যৎ ওরা নষ্ট করে দিয়েছে। ঋণের টাকা না পাওয়ায় কারখানা তুলে দিতে হয়। এখন আমার আটচল্লিশ বছর বয়স। সংসার চালাতে মহারাষ্ট্রে নির্মাণ সংস্থায় করণিকের কাজ করতে হচ্ছে।’’

ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক জানান, তাঁদের হাতে ঋণ দেওয়ার (লোন ডিসবার্সমেন্ট) যথেষ্ট নথিপত্র আছে। এরপরে যদি কারও কোনও বক্তব্য থাকে, তা হলে তা দেখতে হবে নিগমকে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও চিঠি দিয়ে প্রতিকার চেয়েছেন আহদ। রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ বলেন, ‘‘এই বিষয়টি বাম আমলের। উনি আমাকে লিখিত জানালে তদন্ত করে প্রতিকারের চেষ্টা করব।’’

West Bengal Govt West Bengal Interest West Bengal Minorities Development & Finance Corporation দেগঙ্গা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy