Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Death

বারুইপুরে পুকুরে তৃণমূল নেতার দেহ, সন্দেহ খুন

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুকুরের এক দিকে পড়ে ছিল ওই নেতার জুতো ও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কাগজপত্র।

সুবীর ঘোষ

সুবীর ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:১৮
Share: Save:

বাড়ি থেকে কিছুটা দূরের একটি পুকুরে মিলল তৃণমূলের এক স্থানীয় নেতা ও প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যের মৃতদেহ। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে বারুইপুর থানা এলাকার মদারহাটের ঘোষপাড়ায়। মৃতের নাম সুবীর ঘোষ (৬৩)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুকুরের এক দিকে পড়ে ছিল ওই নেতার জুতো ও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কাগজপত্র। উল্টো দিক থেকে পাওয়া যায় তাঁর দেহ। সোমবার রাতভর তল্লাশির শেষে মঙ্গলবার ভোরে জাল ফেলে দেহটি তোলা হয়। পুলিশ দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে। সুবীরবাবুর পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে খুন করে বা ধাক্কা মেরে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এই মৃত্যু কোনও দুর্ঘটনার কারণে ঘটেনি বলেই তাঁদের দাবি। যদিও দেহে আপাত ভাবে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি বলেই পুলিশ জানিয়েছে।

বারুইপুর পুলিশ জেলার কর্তারা জানান, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ দিন সকালে ঘটনাস্থলে যান বারুইপুরের মহকুমাশাসক এবং আইসি। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, সুবীরবাবুর বাড়ি ঘোষপাড়ায়। তাঁর এক মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তিনি মদারহাট পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সদস্য ছিলেন। বর্তমানে এলাকায় বুথ সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন।

তাঁর স্ত্রী উমা ঘোষ বললেন, ‘‘সোমবার বিকেলে উনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড বিলির কাজ করছিলেন। রাত ৯টায় ফোনে জানান, ঘণ্টাখানেক পরে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু ১১টার পর থেকে ওঁকে আর ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার পরে আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করি। রাতে পুকুরের কাছে জুতো ও স্বাস্থ্যসাথীর কাগজপত্র দেখতে পাওয়া যায়। ভোরে জাল ফেলে দেহ তোলা হয়।’’

পরিজনদের অভিযোগ, সুবীরবাবুকে খুনই করা হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, দুর্ঘটনাবশত সুবীরবাবু পুকুরে পড়ে গিয়ে থাকলে জুতো এবং কাগজপত্রও তাঁর সঙ্গে জলে পড়ত। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও বক্তব্য, ‘‘উনি মদ্যপান করতেন ঠিকই। কিন্তু নেশার ঘোরে কেউ পুকুরে পড়ে গেলে তিনি তো জুতো এবং কাগজপত্র সমেতই পড়বেন। সেগুলো পড়ে রইল কী ভাবে?’’

এ দিকে, এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন বারুইপুর পশ্চিমের তৃণমূল নেতৃত্ব। বারুইপুর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য গৌতম দাসের অভিযোগ, ‘‘পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। ওঁকে নিশ্চিত ভাবেই খুন করা হয়েছে। এই খুনের ঘটনায় এক বিজেপি সমর্থক জড়িত বলে অনুমান। দুর্গাপুজোর সময়ে ওই সমর্থকের সঙ্গে বিদ্যুতের খুঁটি বসানো নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল সুবীরবাবুর। ওই বিজেপি সমর্থক খুনের হুমকিও দিয়েছিল।’’ যদিও এ দিন বিকেল পর্যন্ত এই ঘটনায় থানায় কোনও খুনের অভিযোগ দায়ের হয়নি। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

এ দিন বিকেলে বিধানসভার অধ্যক্ষ তথা বারুইপুর পশ্চিম কেন্দ্রের বিধায়ক বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মৃতের বাড়িতে আসেন। তিনিও এই ঘটনায় খুনের অভিযোগ তুলেছেন। তাঁরও সন্দেহ, খুনের পিছনে বিজেপি সমর্থকদের হাত রয়েছে। তবে বিজেপির জেলা নেতৃত্বের তরফে এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও ডাহা মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death TMC Leader Baruipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE