জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের মন্তব্যে বিতর্ক। ফাইল চিত্র।
তৃণমূল সরকারের আমলে তৃণমূলকর্মীদের চাকরি দিলে অন্যায় কিসের! ব্রাত্য বসু, মদন মিত্র, সাবিনা ইয়াসমিনের পর আরও এক তৃণমূলের জনপ্রতিনিধির গলায় এই সুর শোনা গেল। এ বার এই নিয়ে সরব হলেন জগদ্দলের তৃণমূলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। বিধায়ক বলেছেন, ‘‘বামফ্রন্টের আমলে যদি বামকর্মীরা চাকরি পান, তা হলে তৃণমূল সরকারের আমলে তৃণমূলকর্মীদের চাকরি দিলে অন্যায় কিসের!’’ সোমনাথের এই মন্তব্যে পাল্টা সরব হয়েছে বিজেপি এবং সিপিএম।
শিক্ষায় নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে ধর্মতলায় দীর্ঘ দিন ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এই আবহে তৃণমূলকর্মীদের চাকরি দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন ব্রাত্য বসু থেকে মদন মিত্র। যা নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে রাজনীতির অলিন্দে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য জানিয়েছেন, তাঁর কোটার চাকরি তিনি দলের লোককেই দেবেন। তাঁর যুক্তি, যাঁরা তাঁর সঙ্গে বছরের পর বছর দেওয়াল লিখন করেছেন, মিছিলে হেঁটেছেন, তাঁর কোটার চাকরি তো তিনি তাঁদেরই দেবেন। ব্রাত্য এ-ও জানান যে, এই চাকরি আবার তিনি দেবেন। খোদ শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে নানা মহলে।
ব্রাত্যের পর তৃণমূলকর্মীদের চাকরি দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। তিনিও বলেন, ‘‘সুযোগ পেলেই তৃণমূলকর্মীদের চাকরি দেব।’’ একই কথা শোনা যায় তৃণমূলের আরও এক বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিনের গলায়। তিনিও তৃণমূলকর্মীদের চাকরি দেওয়ার কথা বলেন। এ বার একই সুর শোনা গেল জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়কের গলায়। বলেছেন, ‘‘অনেক কথা হচ্ছে, আমরা নাকি চাকরি দিয়েছি, অনেক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত আছি। আমি বলি, দলের ছেলেরা যদি চাকরি পেয়ে থাকে, তা হলে অন্যায় কিসের! তারা সারাদিন আমাদের সঙ্গে থাকে। দলে আছে, দলের চাকরি পেয়েছেন।’’
সম্প্রতি সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তীর নিয়োগ ঘিরে প্রশ্ন তুলেছেন ব্রাত্য। এই প্রসঙ্গ টেনে এর পরই সুজনকে নিশানা করেন সোমনাথ। বলেছেন, ‘‘ভুলে গেলেন সুজনবাবু? তখন তো চিরকুটে চাকরি হত। বামফ্রন্টের আমলে যদি বামকর্মীরা চাকরি পান, তা হলে তৃণমূল সরকারের আমলে তৃণমূলকর্মীদের চাকরি দিলে অন্যায় কিসের!’’ একই সঙ্গে বিধায়ক জানান যে, অন্যায়কে তাঁর দল প্রশ্রয় করে না।
সোমনাথের এই বক্তব্যে ঘিরে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য গার্গী চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘উনি তো বিধায়ক হওয়ার যোগ্য ছিলেন না। কথার ঠিক নেই। তৃণমূল দেউলিয়া হয়ে গিয়েছেন। এই কথাবার্তা সেই দেউলিয়াপনার ফল। এক জন বিধায়ক কেউ এ কথা বলতে পারেন! আমার দলের লোক চাকরি পাবে! শেষের শুরু হয়েছে।’’ বিজেপি নেত্রী ফাল্গুনী পাত্র বলেছেন, ‘‘দলে এই ভাবে চাকরি হয় কি না জানা নেই। যাঁরা রাস্তায় বসে আছেন, পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পাননি, যাঁদের ওএমআর শিট জালিয়াতি হয়েছে, তাঁরা তৃণমূলে ভোট দেয়নি এটা বলতে পারেন? যাঁরা তৃণমূলে থেকে তোলাবাজি করবেন, গুন্ডামি করবেন, গণতন্ত্র হরণ করবেন তাঁদেরই চাকরি পাওয়ার অধিকার রয়েছে! এটাই তৃণমূল বিধায়ক বলতে চাইলেন তো? মানুষ এর জবাব দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy