Advertisement
০২ মে ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

ক্যানিং ১ ব্লকে নিরঙ্কুশ তৃণমূল, লড়াই জমে উঠবে গোসাবায়

গোসাবায় গ্রাম পঞ্চায়েতে আসন ২২৮টি। তৃণমূল সব ক’টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে ২০০টি আসনে। সিপিএম দিয়েছে ৩২টি আসনে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

প্রসেনজিৎ সাহা
গোসাবা  শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৩ ০৯:০১
Share: Save:

মনোনয়ন-পর্বে ক্যানিংয়ে প্রবল অশান্তি হয়েছে। শাসকের অত্যচারে বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি বলে অভিযোগ ওঠে। বোমাবাজি হয়, গুলি চলে, রক্ত ঝরে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হলে দেখা গেল, সেই ক্যানিং ১ ব্লক সম্পূর্ণ বিরোধীমুক্ত। পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ— সব আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। পাশের গোসাবা ব্লকে অবশ্য সব দলই মনোনয়ন জমা দিয়েছে শান্তিপূর্ণ ভাবে। ফলে এখানে ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ আসনে ভোটাভুটি হবে।

গোসাবায় গ্রাম পঞ্চায়েতে আসন ২২৮টি। তৃণমূল সব ক’টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে ২০০টি আসনে। সিপিএম দিয়েছে ৩২টি আসনে। আরএসপি দিয়েছে ৬২ আসনে। নির্দল হিসাবে মনোনয়ন দিয়েছেন ৭৬ জন। গ্রাম পঞ্চায়েতে মাত্র ৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। ২২৮টি আসনে ৬১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্য দিকে, পঞ্চায়েত সমিতির ৪২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পাঁচটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছে। এই ৪২টি আসনে ১২৭ জন প্রার্থী লড়াই করছেন। বিজেপি ৩৭টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। সিপিএম ৬টি এবং আরএসপি ১৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। পাশাপাশি, নির্দল ২৩টি আসনে এবং আরএসপি ১৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। জেলা পরিষদের তিনটি আসনেও এখানে লড়াই হবে সব দলের মধ্যে।

তবে বিরোধীদের থেকেও বেশি গোসাবায় শাসকের মধ্যে কোন্দল মাথাব্যথার কারণ। এখানে ব্লক তৃণমূলের নেতা তথা জেলা পরিষদের বিদায়ী সদস্য ও এ বারের প্রার্থী অনিমেষ মণ্ডল গোষ্ঠীর সঙ্গে কোন্দল রয়েছে বিধায়ক সুব্রত মণ্ডল গোষ্ঠীর। বিধায়ক গোষ্ঠীর লোকজন ভোট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। দলের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন অনিমেষ। শেষে দলের উচ্চ নেতৃত্ব দু’পক্ষের মধ্যে আসন ভাগাভাগি করে দেন। কিছু প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলেও এখনও অনেক আসনে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ প্রার্থী নির্দল হিসাবে লড়ছেন। অনিমেষ বলেন, “আমরা হিংসার রাজনীতি করি না। ভোট মানে গণতন্ত্রের উৎসব। এখানে বিরোধীরা কেউ অভিযোগ করতে পারবেন না যে আমরা বাধা দিয়েছি।” নির্দল হয়ে যাঁরা দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়ছেন, তাঁদের সম্পর্কে অনিমেষ বলেন, “যাঁরা দলের লোক হয়েও নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে, তাঁদের সম্পর্কে কিছু বলার নেই। দলের নির্দেশ মেনে বহু প্রার্থীই নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। যাঁরা করেননি, তাঁদের বিষয় দল বুঝবে। এখানে তৃণমূল প্রার্থীরা সব আসনেই জিতবেন বলে আমরা আশাবাদী।”

বিজেপিও এ বার ২০০টি আসনে তাঁদের মনোনয়ন জমা দিয়েছে। এই ব্লকে তৃণমূলের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী তারাই। বিজেপি নেতা তথা এ বার জেলা পরিষদের প্রার্থী সঞ্জয় নায়েক বলেন, “তৃণমূল এর আগে এলাকায় সরকারি প্রকল্পের টাকা নিয়ে যা দুর্নীতি করেছে, মানুষ যদি ভোট দেওয়ার সুযোগ পান, তা হলে তাঁদের ছুড়ে নদীর জলে ফেলে দেবেন।”

এখানে আরএসপি ও সিপিএম আলাদা আলাদা ভাবে প্রার্থী দিয়েছে। বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনে বামেদের নিজেদের মধ্যেও লড়াই রয়েছে। এ বিষয়ে এলাকার সিপিএম নেতারা মুখ খুলতে চাননি। তবে আরএসপি নেতা অনিলচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “আমাদের নিজেদের মধ্যে জোট না হলেও বেশির ভাগ জায়গাতেই আমরা শাসকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছি। যেখানে সিপিএম প্রার্থী দিয়েছে, সেখানে আমরা দিইনি। দু’একটি পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে সিপিএম ও আরএসপি একই সঙ্গে লড়াই করছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE