Advertisement
E-Paper

হাঁ করা পথ, ভিড়-যানজটে রোজ জেরবার

ছবিটা ব্যারাকপুর স্টেশন এবং লালকুঠির মাঝে ঘোষপাড়া রোডের। গর্ত বাঁচিয়ে চলতে গিয়ে হচ্ছে তীব্র যানজট। দশ মিনিটের পথ যেতে চল্লিশ মিনিট লেগে যাচ্ছে। ভ্যাপসা গরমে যানজটে ঠায় দাঁড়িয়ে মেজাজ হারাচ্ছেন যাত্রী থেকে চালক। রোজই লেগে যাচ্ছে বচসা, হাতাহাতি।

বিতান ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৭ ০২:১৮
নারদ-নারদ: শুক্রবার সকালে ব্যারাকপুরের ঘোষপাড়া রোড। অটোর সঙ্গে ভ্যানের ধাক্কার পরে এ ভাবেই রাস্তা আটকে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন দুই চালক। সামনেই দর্শক পুলিশ। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।

নারদ-নারদ: শুক্রবার সকালে ব্যারাকপুরের ঘোষপাড়া রোড। অটোর সঙ্গে ভ্যানের ধাক্কার পরে এ ভাবেই রাস্তা আটকে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন দুই চালক। সামনেই দর্শক পুলিশ। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।

মাত্র আধ কিলোমিটার রাস্তা। পুরো রাস্তা জুড়ে বড় বড় গর্ত। কিন্তু প্রায় রোজকার বৃষ্টিতে জল জমে থাকার জন্য রাস্তা আর গর্ত আলাদা করে বোঝা যাচ্ছে না। ফলে সাইকেলই হোক বা গাড়ি, গর্তে চাকা পড়লে তা তুলতে প্রাণান্ত অবস্থা হচ্ছে। ঝাঁকুনির চোটে ছিটকে পড়ছেন আরোহীরা। পরিস্থিতি সামলাতে দিন কয়েক আগেই তাপ্পি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গাড়ির চাপে, বিশেষত ভারী গাড়ি চলাচল করায় সেই পিচ উঠে আবার গর্তের হাঁ-মুখ বেরিয়ে পড়েছে।

ছবিটা ব্যারাকপুর স্টেশন এবং লালকুঠির মাঝে ঘোষপাড়া রোডের। গর্ত বাঁচিয়ে চলতে গিয়ে হচ্ছে তীব্র যানজট। দশ মিনিটের পথ যেতে চল্লিশ মিনিট লেগে যাচ্ছে। ভ্যাপসা গরমে যানজটে ঠায় দাঁড়িয়ে মেজাজ হারাচ্ছেন যাত্রী থেকে চালক। রোজই লেগে যাচ্ছে বচসা, হাতাহাতি।

গত তিন বছরে ব্যারাকপুর চিড়িয়ামোড় থেকে স্টেশন পর্যন্ত অংশে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দোকান। তার সঙ্গে দিনভর রয়েছে টোটো, অটো, রিকশার ভিড়। হাঁটার জায়গা কার্যত নেই। স্টেশন থেকে লালকুঠির মুখে ব্যারাকপুর উড়ালপুল পর্যন্তও একই অবস্থা। জনসংখ্যা আর যানবাহন,

দুই-ই বেড়েছে প্রবল ভাবে। কিন্তু রাস্তা বাড়ানোর জায়গা নেই। তার মধ্যেই বাদ সেধেছে এই গর্ত।

বৃহস্পতিবারই গর্তে চাকা পড়ে বিকল হয়ে গিয়েছিল ভিড়ে ঠাসা একটি বাস। কিন্তু গাড়ির ভিড়ে রাস্তার এমন অবস্থা হয়েছিল যে প্রথমে ক্রেন পর্যন্ত ঢোকানো যায়নি। শেষে কোনও রকমে ক্রেন এনে ৪০ মিনিট পরে বাসটিকে সরানো হয়। এক মহিলা সন্তানকে নিয়ে সাইকেলে ফিরছিলেন। আচমকা গর্তে চাকা পড়ায় রাস্তায় ছিটকে পড়েন তাঁরা। ভাগ্যক্রমে বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি। শুক্রবারও একটি বস্তা বোঝাই সাইকেল ভ্যান ও অটো পাশাপাশি চলতে গিয়ে গর্তে চাকা পড়ে গায়ে গায়ে ঘষা লাগে। হাতাহাতি বেধে যায় অটো ও ভ্যান চালকের মধ্যে। সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খান ট্র্যাফিক সার্জেন্ট।

গাড়ির চাপ বাড়তে থাকায় ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে অতিরিক্ত ট্র্যাফিক পুলিশ নামানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল ২০১৪ সালে। বাড়ানো হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারও। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন থেকে পুলিশকর্তা সকলেই মানছেন, রাস্তার তুলনায় গাড়ি এতই বেড়েছে যে রাশ টানা যাচ্ছে না। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক ট্র্যাফিক কর্তা বলেন, ‘‘গাড়ি বাড়বে, মানুষ বাড়বে। কিন্তু রাস্তা কোথায়? উড়ালপুল হয়ে সময় বেঁচেছে ঠিকই। কিন্তু সেখান থেকে নামার পরে আবার যে কে সেই।’’

সারানো রাস্তা ফের ভাঙল কেন, তা নিয়ে অবশ্য পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। ‘আমরা বিষয়টি দেখছি’ বলেই দায় এড়িয়েছেন তাঁরা। ব্যারাকপুর মহকুমা প্রশাসনের তরফে পূর্ত দফতরকে অবিলম্বে এ দিকে নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার ব্যারাকপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে হাজির ছিলেন পূর্ত কর্তারা। ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামী বলেন, ‘‘ওই অংশটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত সেখানে মেরামতির কথা বলেছি।’’

Barrackpore Traffic Jam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy