রেশ কাটেনি কসবা-কাণ্ডের। তার মধ্যেই সোনারপুরে তৃণমূলের এক যুব নেতার ‘কীর্তি’ ঘিরে তৈরি হল বিতর্ক। সম্প্রতি প্রতীক দে নামে ওই নেতার একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার)। সেখানে দেখা যায়, একটি ঘরের মধ্যে চেয়ারে বসে সিগারেটে সুখটান দিচ্ছেন প্রতীক। চেয়ারের পিছনে দাঁড়িয়ে তাঁর মাথা টিপে দিচ্ছেন এক ছাত্রী। সোনারপুর মহাবিদ্যালয়ের ইউনিয়ন রুমেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। তৃণমূলের অন্দরেও প্রশ্ন উঠেছে। যদিও স্থানীয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতৃত্ব অভিযোগ মানেননি। তাঁদের দাবি, চক্রান্ত করে ভুয়ো ভিডিয়ো ছড়ানো হয়েছে।
চল্লিশোর্ধ্ব প্রতীক সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভা এলাকার ‘দাপুটে’ যুব নেতা বলে পরিচিত। স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি তাঁকে এলাকার ছাত্র সংগঠন দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সোনারপুর মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রপরিষদের কোঅর্ডিনেটর পদেও তাঁকে বসানো হয়। প্রসঙ্গত, বছরখানেক আগে এই প্রতীকের বিরুদ্ধেই শারীরিক ও মানসিক হেনস্থার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি পাপিয়া হালদার। মঙ্গলবার পাপিয়া বলেন, “সেই সময়ে আমার সঙ্গে যা হয়েছিল, সব দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছিলাম। তার পরেও দল ব্যবস্থা না নিয়ে কার্যত পদোন্নতি দিয়েছে। ফলে এ ধরনের ঘটনা হতই।”
কসবা-কাণ্ডের পরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতাদের নানা কীর্তি নিয়ে সরব হয়েছেন সোনারপুরের বাসিন্দা, তৃণমূলের নিলম্বিত(সাসপেন্ডেড) ছাত্র-নেত্রী রাজন্যা হালদার। এ দিন তিনি বলেন, “যাঁর বিরুদ্ধে এর আগে এক জনপ্রতিনিধি এমন অভিযোগ এনেছিলেন, তিনি এই দায়িত্ব কী ভাবে পেলেন? তিনি কলেজে ঢুকলেনই বা কী ভাবে? এটা বাঞ্ছনীয় নয়।”
সিপিএমের নেতা, আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলি মৈত্র ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি। তাঁর মদতেই এই সব নেতা কলেজে ঢুকে ছাত্রীদের দিয়ে মাথা টেপাচ্ছেন। ইউনিয়ন রুমটাকে পার্লার বানিয়ে ফেলেছেন। লাভলি মৈত্রের একের পর এক কাজে সোনারপুরবাসীর মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।”
এই প্রসঙ্গে প্রতীক বা বিধায়কের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তাঁরা ফোন ধরেননি। রাজপুর টাউন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কার্যকরী সভাপতি আকাশ ঘোষের দাবি, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে বদনাম করতে ভুয়ো ভিডিয়ো ছড়ানো হয়েছে।” প্রতীক দে ছাত্র পরিষদ বা সোনারপুর মহাবিদ্যালয়ের কোনও পদে নেই বলেও দাবি করেন তিনি। ভিডিয়োয় প্রথম বর্ষের যে ছাত্রীকে মাথা টিপতে দেখা যায়, তিনিও ভিডিয়োটি ভুয়ো বলে দাবি করেছেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)