অবরোধ: গ্রামবাসীদের। ভাঙড়ের গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
আমপানের ক্ষতিপূরণের টাকা মেলেনি কেন, তার কৈফিয়ৎ চেয়ে পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙড় ২ ব্লকের ভোগালি ২ পঞ্চায়েতের বানিয়াড়া শেখপাড়ায়। এ দিন ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য শেখ তাহেরের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামের কয়েকশো মানুষ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ওই এলাকায় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত গরিব পরিবারগুলিকে ন্যূনতম একটা ত্রিপল পর্যন্ত দেননি পঞ্চায়েত সদস্য। ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়েও তিনি স্বজনপোষণ করছেন বলেও অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের।
বিক্ষোভের খবর পয়ে পুলিশ এলে রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে পথ অবরোধ করেন গ্রামবাসী। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে এই পরিস্থিতি চলে। পরে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।
স্থানীয় বাসিন্দা রোজিনা বিবি, মোরশেদ মোল্লারা বলেন, “ওই পঞ্চায়েত সদস্য এলাকার মানুষের জন্য কোনও কাজ করছেন না। গরিব মানুষ জবকার্ড পাচ্ছেন না। এখনও গ্রামের অনেকের রেশন কার্ড নেই। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী রেশনের বিনামূল্যের খাদ্যশস্যও অনেকে ঠিকমতো পাচ্ছেন না। আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এখনও পর্যন্ত কোনও ক্ষতিপূরণের টাকা ঢোকেনি। কেন টাকা ঢুকছে না তা পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে জানতে গেলে তিনি কোনও সদুত্তর দিচ্ছেন না।”
পঞ্চায়েত সদস্য শেখ তাহের অবশ্য বলেন, “আমি নিয়ম মেনে এলাকার প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদনপত্র পঞ্চায়েত অফিসে জমা দিয়েছি। কেউ যদি প্রমাণ দিতে পারেন যে আমি আমার পরিবারের কারও নামে ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি বা স্বজনপোষণ করেছি— তা হলে আমি সদস্যের পদ থেকে ইস্তফা দেব। ওরা আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’
সদস্যের পাশেই দাঁড়িয়েছেন ভোগালি ২ পঞ্চায়েতের প্রধান মোদাচ্ছের হোসেন। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত সদস্যকে হেনস্থা করতে বিরোধী দলের মদতে গ্রামের কিছু মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। আমরা পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ওই এলাকার প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের আবেদনপত্র ব্লক অফিসে জমা দিয়েছি। ধীরে ধীরে সকলের অ্যাকাউন্টেই ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকছে।” বিক্ষোভকারী কওসার মোল্লা বলেন, “আমরা কোনও দলের ঝান্ডা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে আসিনি। আমাদের ন্যায্য অধিকারের জন্য পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে এসেছিলাম। প্রয়োজনে আমরা আবারও দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলনে নামব।”
ভাঙড় ২ বিডিও কৌশিককুমার মাইতি বলেন, “এ রকম একটা গন্ডগোল হয়েছে বলে শুনেছি। আমার কাছে এখনও পর্যন্ত কেউ কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি। এখনও পর্যন্ত আমার ব্লক এলাকায় ২৯ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়েছে। তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy