রাস্তার দু’পাশে আগাছায় ভরা জঙ্গল। অন্ধকারাচ্ছন্ন বেহাল রাস্তায় এমনিতেই বিপদের হাতছানি। সন্ধ্যা নামলেই পথচলতি মানুষের সংখ্যা কমে যায়। এমনই অবস্থা ভাঙড় ২ ব্লকের বিজয়গঞ্জ বাজার মেলার মাঠ থেকে তেঁতুলতলা ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তার।
কয়েক দিন আগে ওই রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফেরার সময়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন তৃণমূল নেতা রাজ্জাক খান। এই ঘটনার পর থেকে সন্ধ্যা নামলেই মানুষের আনাগোনা আরও কমে যাচ্ছে। অনেকে আবার ঘুরপথে চকমরিচা গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ওই রাস্তাটি বেহাল। তার উপরে ভাঙড় খালপাড়ের ওই রাস্তার দু’পাশ আগাছার জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। অতীতেও ওই রাস্তায় খুন-সহ একাধিক পথ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।
রাজ্জাক খুনের পরে কয়েক বার তাঁর বাড়িতে যান ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙড়ের তৃণমূলের পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা। চকমরিচা গ্রামের বাসিন্দারা বেহাল রাস্তা সংস্কারের পাশাপাশি আগাছা সাফ করে রাস্তার পাশে আলো লাগানোর আবেদন করেন তাঁর কাছে। সওকাত বলেন, ‘‘ওই রাস্তা সংস্কার করার জন্য রাজ্জাক বহু বার আমাকে বলেছিলেন। আমি সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তার আগেই দুষ্কৃতীরা ওঁকে প্রাণে মেরে ফেলল।’’
মুসলিমা খাতুন নামে এক স্কুল ছাত্রীর কথায়, ‘‘সন্ধ্যা নামার আগেই স্কুল সেরে এবং টিউশন পড়ে বাড়ি ফিরতে হয়। দিনের বেলাতেও ফাঁকা ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে যেন গা ছমছম করে!’’
তৃণমূল নেতা আহসান মোল্লা বলেন, ‘‘যে ভাবে রাজ্জাককে খুন করা হয়েছে, তাতে সন্ধ্যার পরে ওই এলাকায় দলীয় কোনও কর্মসূচিতে যেতে আমারও ভয় করবে। এমনিতেই আমরা আতঙ্কে রয়েছি।’’
আইএসএফের জেলা পরিষদ সদস্য রাইনুর হক জানালেন, সন্ধ্যার পরে ওই রাস্তায় যেতে গা ছমছম করে তাঁরও। সন্ধ্যার পরে ওই পথে না যাওয়ার চেষ্টা করেন বলে জানালেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘প্রশাসনকে অনুরোধ করব, অবিলম্বে যেন রাস্তাটি সংস্কার করার পাশাপাশি জঙ্গল পরিষ্কার করা হয়।’’
চালতাবেড়িয়া পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে একশো দিনের কাজ বন্ধ থাকায় ওই রাস্তার দু’পাশের জঙ্গল পরিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে ভাঙড় ২ বিডিও পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, পথের সাথী প্রকল্পে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বলা আছে। আশা করা যায়, দ্রুত কাজ শুরু হবে। তিনি আরও জানান, পঞ্চায়েতকে বলা হয়েছে, জঙ্গল পরিষ্কার করার জন্য। রাস্তায় আলো লাগানোর বিষয়েও সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানানো হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)