E-Paper

শিক্ষিত যুবকদের গ্রামে কাজের সুযোগ দরকার

ওঁরা সকলে নতুন প্রজন্মের ভোটার। কেউ কলেজ পড়ুয়া, কেউ পড়াশোনা শেষ করে চাকরি খুঁজছেন। পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে বহু আকাঙ্ক্ষা ওঁদের। গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থান নিয়েও স্বপ্ন দেখেন।

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২৩ ০৯:২৩
স্কুলের মাঠে চলছে আড্ডা। নিজস্ব চিত্র

স্কুলের মাঠে চলছে আড্ডা। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP

শৌভিক ঘোষ: মিলন, এ বার তো প্রথম ভোট দিবি। গ্রামের কী কী উন্নয়ন দরকার বলে মনে করিস?

মিলন ইসলাম: গ্রামে দীর্ঘ দিন ধরে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। এখন বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের পাইপ লাইন এসেছে। তবে সেই জল দিনে একবার অল্প সময়ের জন্য মেলে। পঞ্চায়েতের কোনও কোনও প্রান্তে এখনও জলের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। এটা সবার আগে ঠিক করা দরকার।

শৌভিক: সেটা ঠিক। কিন্তু গ্রামের কেউ কেউ পানীয় জল বাড়িতে পেয়ে অপচয় করেন। আবার এই পঞ্চায়েতের অন্য প্রান্তে জলের হাহাকার। প্রশাসনের উচিত, শক্ত হাতে এর মোকাবিলা করা।

অমিত চক্রবর্তী: কলেজে পড়তে পড়তে এখন চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু গ্রামে কোনও ভাল গ্রন্থাগার নেই। যেটা আছে, সেটা বেশির ভাগ দিন বন্ধ থাকে। প্রয়োজনীয় বই মেলে না। সরকারি চাকরির অবস্থাও তো খুব আশাপ্রদ নয়।

শৌভিক ঘোষ: গ্রামের স্কুলগুলিতে অনেক শিক্ষকের পদ শূন্য। নিয়োগ জরুরি। এলাকার শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা মেধার ভিত্তিতে কাজ পেলে ভাল।

সুশান্ত প্রামাণিক: গ্রামে ক্রীড়া প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকা দরকার। সকলে তো আর পড়াশোনায় একই রকম ভাল হয় না।

মিলন ইসলাম: সেই সঙ্গে গ্রামের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি দরকার। এখন কেউ অসুস্থ হলে সান্ডেলেরবিল ব্লক প্রাথমিক হাসপাতাল যেতে হয়। কিন্তু সেখানে উন্নত পরিষেবা মেলে না। একটু জটিল কিছু হলেই বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। এটা খুবই সমস্যার।

শৌভিক ঘোষ: সত্যিই, এত পুরনো একটা ব্লক হাসপাতাল, অথচ সেখানে ইসিজি, এক্স-রে-সহ বিভিন্ন পরীক্ষা হয় না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও নেই। এই হাসপাতালের উন্নতি দরকার।

অমিত চক্রবর্তী: পরিবেশের বিষয়টাও গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামে বিভিন্ন সময় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নেওয়া হয়। তবে পরিচর্যার অভাবে বেশিরভাগ গাছ বাঁচানো যায় না। অন্য দিকে, মানুষ নিজেদের স্বার্থে গাছ কেটে ফেলছেন। নতুন করে গাছ লাগানো যেন ক্রমশ কমছে। পাশাপাশি, নিকাশি নালাগুলির পরিষ্কার হয় না দীর্ঘ দিন। মশা-মাছির উপদ্রব হচ্ছে।

শৌভিক ঘোষ: ম্যানগ্রোভ পর্যাপ্ত পরিমাণে সব জায়গায় লাগানো হচ্ছে না। তাই বিভিন্ন সময়ে বাঁধ ভেঙে যায়। বাঁধ দুর্বল হওয়ার বড় কারণ ইটভাটা। এই সমস্যার দিকে প্রশাসনের নজর দেওয়া দরকার।

সুশান্ত প্রামাণিক: গ্রামের বেশ কিছু রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। যেমন হাসপাতালে যাওয়ার মূল রাস্তা সাপুর মোড় থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত রাস্তাটা ভেঙেচুরে গিয়েছে। এ ছাড়া, গ্রামের বেশ কিছু রাস্তায় আলো থাকলেও জ্বলে না। রক্ষণাবেক্ষণের অভাব আছে। এবার প্রথম ভোট দেব। যারাই ক্ষমতায় আসুক, চাইব এই সমস্যাগুলোর সমাধান করুক।

মিলন: সত্যি কিছু রাস্তা সংস্কার হওয়া জরুরি। আমি জন্মের পর থেকে যে সব রাস্তা খারাপ দেখেছি, সেগুলি এখনও পর্যন্ত ঠিক হল না। কবে সংস্কার হবে কে জানে। নবীনগঞ্জ খেয়াঘাটের অবস্থা দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল। এরও সংস্কার দরকার।

অমিত: গ্রামে একটা সংস্কৃতি কেন্দ্র থাকাও জরুরি। তা না হলে সবাই শুধু ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ছে। ছেলেমেয়েদের কাছে অবসর যাপনের কোনও ব্যবস্থা নেই।

সন্দীপ চক্রবর্তী: আমিও এ বার প্রথম ভোটার। আগে দেখেছি, ভোটকে কেন্দ্র করে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয় এলাকায়। রাজনৈতিক দলগুলির কাছে আমার প্রত্যাশা, পরিস্থিতি যেন উত্তপ্ত না হয়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Panchayat Election Hingalganj

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy