Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

উৎসবে বাঘ-বিধবাদের সাহায্য 

প্রায় সাড়ে চারশো পরিবারের বিধবাদের হাতে পুজোর আগে নতুন শাড়ি, সন্তানদের জন্য জামাকাপড়, মশারি ও খাবার তুলে দিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাসন্তী শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪৮
Share: Save:

হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। তারপরেই বাঙালি মেতে উঠবে উৎসবে। কিন্তু সেই উৎসবের আলো হয় তো সব ঘরে পৌঁছবে না। প্রদীপের তলায় অন্ধকারের মতই এ বারও উৎসবের আনন্দ থেকে বহু দূরে থেকে যাবেন ওঁরা। সুন্দরবনের বাঘের আক্রমণে যাঁদের পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যের প্রাণ গিয়েছে কোনও না কোনও সময়ে। জঙ্গলে মাছ, কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের মুখে পড়ে আর বাড়ি ফেরা হয়নি যে পরিবারের স্বামী-ছেলের।

তবু বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে পরিবারগুলি। এমনই প্রায় সাড়ে চারশো পরিবারের বিধবাদের হাতে পুজোর আগে নতুন শাড়ি, সন্তানদের জন্য জামাকাপড়, মশারি ও খাবার তুলে দিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। শনিবার বাসন্তীতে এক অনুষ্ঠানে পরিবারগুলিকে সাহায্য করা হয়। বাঘের মুখে পড়ে যে মৎস্যজীবী বা মৌলেরা কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন, তাঁদেরও এ দিন নতুন বস্ত্র ও বিভিন্ন সাহায্য দেওয়া হয়েছে। বাঘের আক্রমণে পরিবারের রোজগেরে সদস্যের মৃত্যু বা আহত হওয়ার পরে যে সব পরিবারের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, এমন ৫২টি ছেলেমেয়েকে স্কুলে ফিরিয়েছে এই সংগঠন। তাদের হাতেও শিক্ষাবৃত্তি, পড়াশোনার সরঞ্জাম, নতুন জামা-কাপড় দেওয়া হয়েছে এ দিন।

সংগঠনের অন্যতম সদস্য অমল নায়েক বলেন, ‘‘আমি বাসন্তী হাইস্কুলের শিক্ষক। ছোট থেকেই সুন্দরবনে বড় হয়েছি। এই এলাকার মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা সামনে থেকে উপলব্ধি করেছি। দেখেছি, বাবাকে বাঘে ধরে নিয়ে যাওয়ার পরে সন্তানের পড়াশোনা কী ভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দেখেছি, সদ্য বিবাহিতার স্বামীকে বাঘে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরে তাঁকে কী ভাবে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।’’ গত চার বছর ধরে সংগঠন চলছে বলে জানান অমল। বহু মানুষের দানে পুষ্ট হয়েছে সংগঠন। এ দিন সুন্দরবনের আর এক প্রাক্তন শিক্ষক চন্দ্রশেখর দেবনাথ সঞ্চয় থেকে ১ লক্ষ টাকার অনুদান তুলে দেন অমলের হাতে।

সংগঠন সূত্রের খবর, সারা বছর ধরেই তাঁরা এই সব পরিবারগুলির পাশে সারা বছর নানা ভাবে থাকেন। তাঁদের নানা ভাবে স্বনির্ভর করে তোলার চেষ্টা হয়।

মঙ্গলা, উষা, গীতাদের মতো অনেক মহিলা সাহায্য পেলেন এ দিন। তাঁরা বলেন, ‘‘জঙ্গল আমাদের সব কেড়ে নিয়েছে। এই মানুষগুলো পাশে দাঁড়ানোয় আবার মনের জোর ফিরে পেয়েছি। ছেলেমেয়েরা ফের স্কুলে যাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2019 Basanti
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE