Advertisement
E-Paper

গলা কেটে স্বামীকে খুন, গ্রেফতার স্ত্রী

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত দম্পতির মধ্যে। এটা জানার পরেই অনিতাকে আটক করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ০৩:১২
সঞ্জীবন এবং অনিতা মণ্ডল।

সঞ্জীবন এবং অনিতা মণ্ডল।

বাড়ির পিছনের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হল এক ব্যক্তির গলা কাটা দেহ। স্বামীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর স্ত্রী, অনিতা মণ্ডলকে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে নিমতায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সঞ্জীবন মণ্ডল (৪০)।

তদন্তকারীরা জেনেছেন, নিমতার পূর্ব আলিপুর এলাকায় স্ত্রী ও বছর পনেরোর ছেলেকে নিয়ে থাকতেন কাঠমিস্ত্রি সঞ্জীবন। ঘটনার রাতে তিনি বাড়িতে একাই ছিলেন। এক আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছেন বলে সন্ধ্যায় অনিতা বাড়ি থেকে বেরোন। ছেলে আবির পাড়ার এক বন্ধুর সঙ্গে খেলতে গিয়েছিল। সেখানেই সে খবর পায়, তাদের ঘরে চাপ চাপ রক্ত পড়ে রয়েছে। তড়িঘড়ি ছেলে বাড়ি ফিরে জানতে পারে, বাড়ির পিছনেই মিলেছে বাবার গলা কাটা দেহ। প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানান, রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বাড়ি ফিরে অনিতা তাঁদের জানায়, ঘরে রক্ত পড়ে রয়েছে। সঞ্জীবনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সবাই মিলে খুঁজতে বেরিয়ে বাড়ি থেকে কয়েক গজ দূরের জঙ্গলে সঞ্জীবনের নলি কাটা দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর যায় নিমতা থানায়।

আবির বলে, ‘‘বাবার থেকে টিফিন খাওয়ার টাকা নিয়ে বন্ধুর কাছে গিয়েছিলাম। মা মাসির বাড়ি গিয়েছিল। এক বন্ধু এসে আমাকে বলল, ঘরে রক্ত পড়ে রয়েছে। মা আমাকে খুঁজছে।’’ সঞ্জীবনের ঘরের পাশেই তাঁর ভাই ও মায়ের ঘর। যদিও ওই রাতে ভাইয়ের পরিবারের দু’জন মহিলা ছাড়া কেউ ছিলেন না। মৃত যুবকের মা এক মাস ধরে মেয়ের বাড়িতে আছেন। ভাইও নিজের দোকানে ছিলেন। বাকি যাঁরা ছিলেন, তাঁরা কেউই কিছু টের পাননি বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। সঞ্জীবনের ভাইঝি পায়েল মণ্ডল বলেন, ‘‘কয়েক বার কাকার কাশির আওয়াজ পেয়েছিলাম। আর কিছু বুঝিনি। পরে কাকিমা এসে বলল, ঘরে রক্ত পড়ে থাকার কথা।’’ তদন্তকারীদের অনুমান, সঞ্জীবনের আশপাশে তাঁর পরিজনেদের অনুপস্থিতির সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছে খুনি।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত দম্পতির মধ্যে। এটা জানার পরেই অনিতাকে আটক করা হয়। জেরায় সে স্বীকার করে যে সন্ধ্যায় বেরোলেও পরে বাড়ি ফিরে আসে। প্রথমে সঞ্জীবনের গলায় ওড়না পেচিয়ে তাঁর শ্বাসরোধ করে। তার পরে স্বামীর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ছুরি দিয়ে নলি কেটে দেয় সে। ঘর থেকে সেই ওড়না এবং ছুরিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। কিন্তু একা কোনও মহিলার পক্ষে এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের গলা কেটে জঙ্গলে টেনে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব বলে অনুমান তদন্তকারীদের। তাই এই ঘটনায় অন্য কারও জড়িত থাকার সম্ভবনা বেশি বলেই মনে করছেন তাঁরা।

ব্যারাকপুরের ডিসি (জোন-২) আনন্দ রায় বলেন, ‘‘স্ত্রী জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করছেন, একাই কাজটি করেছেন। তবে ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে এনে জানার চেষ্টা করা হবে, এর পিছনে আর কারা রয়েছেন।’’

Crime Murder Arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy