সাগর দাস।
গোল করার পরেই মাটিতে উপুড় হয়ে লুটিয়ে পড়েছিলেন আঠেরো বছরের তরুণ। সতীর্থেরা ভেবেছিলেন, গোলের আনন্দে এমন করছেন ওই যুবক। কিন্তু কয়েক মিনিট কাটার পরেও তিনি না ওঠায় বন্ধুরা কাছে গিয়ে দেখেন, অচৈতন্য হয়ে গিয়েছেন ওই যুবক। এর পরেই তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মঙ্গলবার বিকেলে বেলঘরিয়ায় এমন ভাবেই মৃত্যু হল এক যুবকের। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সাগর দাস। উষুমপুর বটতলার বাসিন্দা ওই যুবক উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে কয়েক দিন আগে কলেজে বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, বটতলার বাসিন্দা, পেশায় রিকশাচালক বরুণ দাসের একমাত্র ছেলে সাগর ছোট থেকেই ফুটবল-পাগল। বাবার তেমন আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় বড় কোনও ফুটবল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হতে পারেননি তিনি। তবে ছোট থেকেই পাড়ার মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই দিন বিকেলে পাড়ার ক্লাবেই ক্যারম খেলছিলেন সাগর। সাড়ে ৪টে নাগাদ ফুটবল খেলতে যাওয়ার জন্য বন্ধুরা তাঁকে ডাকতে আসেন। তখন তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় একটি মাঠে ফুটবল ম্যাচ খেলতে যান সাগর। সেখানে গোল করার পরে সকলে যখন হুল্লোড় করছেন, তখন মাঠেই মাথা নিচু করে লুটিয়ে পড়েন সাগর। ফের খেলা শুরু করার জন্য বাঁশি বেজে গেলেও উঠে দাঁড়াননি তিনি। তখন অন্য সঙ্গীরা তাঁকে ডাকতে গিয়ে দেখেন, মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছে ওই যুবকের। পড়ে আছেন সংজ্ঞাহীন অবস্থায়। স্থানীয় লোকজনই তাঁকে সাগর দত্ত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোযণা করেন।
ছোট থেকেই ডিফেন্সে খেলতেন সাগর। বিশ্বকাপের প্রতিটি খেলাই দেখছিলেন নিয়মিত। তবে আর্জেন্টিনা হেরে যাওয়ার পরে কিছুটা মুষড়ে পড়েছিলেন। পাড়ার মাঠে ম্যাচ খেলে অনেক সুনামও
কুড়িয়েছিলেন সদ্য কলেজে ভর্তি হওয়া ওই যুবক। বুধবার তাঁর পিসতুতো দাদা দীপ কয়াল বলেন, ‘‘খুব ভাল ফুটবল খেলত। ওকে বলেছিলাম, ভাল রেজাল্ট করে কলেজে ভর্তি হলে তবে ফুটবল কোচিং ক্লাসে ভর্তি করে দেব।’’ পরিজনেরা জানান, অ্যালার্জির সমস্যা ছাড়া আর কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল না সাগরের। এ দিন তাঁর পিসি পুতুল কয়াল বলেন, ‘‘গোল করে ছেলেটাই চলে গেল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy