স্বামীর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে জড়াল স্ত্রীর নাম। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট থানার পুরাতন বাজার এলাকার দাসপাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম বিশ্বজিৎ দাস (২৯) ওরফে বাবু। বাড়ির রান্নাঘরে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখা যায়। প্রতিবেশীরা দরজা ভাঙার পরে দেহ উদ্ধার করে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানায়, মৃতের বাবা নরেন দাসের লিখিত অভিযোগ পেয়ে বৌমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নরেনবাবু লটারির টিকিট বিক্রেতা। তাঁর দুই মেয়ে, এক ছেলে। বাবু ট্রাক চালাতেন। মাস দ’শেক আগে তাঁর বিয়ে হয় বসিরহাটের নিমদাঁড়িয়া–কোদালিয়া পঞ্চায়েতের ঘুসুড়ি গ্রামের বিশাখার সঙ্গে।
বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ লেগে ছিল বলে পারিবারিক সূত্রের খবর। দুর্গাপুজোর অষ্টমীতে স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন বাবু। রবিবার সস্ত্রীক বাড়ি ফেরেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দাসপাড়ার বাড়িতে আসেন বিশাখার দাদা গুরুপদ দাস। তাঁর সঙ্গে আরও দু’জন ছিলেন। অভিযোগ, সে সময়ে বাবুর সঙ্গে গুরুপদর কোনও বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। বচসা চলাকালীন বিশাখা ও তাঁর দাদা বাবুকে নানা ভাবে হুমকি দেন বলেও অভিযোগ।
পুলিশ জানায়, বেশি রাতে বাড়ি ফেরে খাওয়া-দাওয়া সেরে শুয়েছিলেন বাবু। ভোর রাতে বাথরুমে যেতে গিয়ে রান্না ঘরের আলো জ্বলতে দেখে সন্দেহ হয় বাবুর মা সরস্বতীদেবীর। ভেতর থেকে বন্ধ দরজার ফাঁক দিয়ে ছেলেকে ঝুলতে দেখেন তিনি। চিৎকার-চেঁচামেচিতে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। সকলে এসে দরজা ভেঙে বাবুকে উদ্ধার করে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। মৃতের আত্মীয়-পরিজন, প্রতিবেশীদের অভিযোগ, স্ত্রীর অত্যাচার এবং তাঁর ভাইয়ের হুমকির জেরেই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন শান্তশিষ্ট স্বভাবের বাবু।
তাঁর মা বলেন, ‘‘সামান্য আয়ে স্ত্রীর অতিরিক্ত চাহিদা পূরণের সামর্থ্য ছিল না ছেলের। যখন যা খুশি চাইত বৌমা। কিনে দিতে না পারলে বাবুকে গালিগালাজ করত।’’ বাবুর বোন শিলাও বলেন, ‘‘শখ মেটাতে না পারায় বৌদির হাতে ভাইকে মার পর্যন্ত খেতে হয়েছে।’’
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে বিশাখা বলেন, ‘‘সাংসারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ছোটখাট গণ্ডগোল হতো না, এমনটা নয়। তবে তা কখনও এমন পর্যায়ে পৌঁছয়নি যে আত্মহত্যার মতো ঘটনা ঘটবে।’’