Advertisement
E-Paper

কিশোরী মেয়ের শ্লীলতাহানি, ছুরির কোপ মাকে

নাবালিকা মেয়ের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মা। তাকে ছুরি মেরে জখম করে পালাল এক যুবক। বৃহস্পতিবার জগদ্দলের অ্যালায়েন্স জুটমিলের কুলিলাইনের এই ঘটনায় পুলিশ সময় মতো পদক্ষেপ করেনি বলে দাবি পরিবারটির। ঘটনাস্থলেও আসেনি। শুক্রবার স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহের হস্তক্ষেপে এফআইআর দায়ের হয়। তদন্তে নামে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ০২:১৬

নাবালিকা মেয়ের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মা। তাকে ছুরি মেরে জখম করে পালাল এক যুবক।

বৃহস্পতিবার জগদ্দলের অ্যালায়েন্স জুটমিলের কুলিলাইনের এই ঘটনায় পুলিশ সময় মতো পদক্ষেপ করেনি বলে দাবি পরিবারটির। ঘটনাস্থলেও আসেনি। শুক্রবার স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহের হস্তক্ষেপে এফআইআর দায়ের হয়। তদন্তে নামে পুলিশ। অভিযুক্ত যুবক পলাতক বলে জানিয়েছেন ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান সি সুধাকর। পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা গাফিলতির অভিযোগ মানেনি তিনি। বৃহস্পতিবার রাতে কেউ অভিযোগ জানাতে থানায় আসেনি বলেই তাঁর দাবি। সুধাকর বলেন, “শুক্রবার অভিযোগ পাওয়া মাত্রই ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ।”

যদিও পুলিশের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট অর্জুনবাবু বলেন, “যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এক জন মহিলা, সেখানে মেয়েদের নিরাপত্তা রক্ষায় আমরা সকলে যথেষ্ট সচেষ্ট। কিন্তু পুলিশ যদি এ ধরনের অভিযোগে গুরুত্ব না দেয়, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয়।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কুলিলাইনের বাসিন্দা বছর বারোর ওই নাবালিকা স্থানীয় একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। বাড়ির কাছেই স্কুল। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ সেখান থেকেই ফিরছিল সে। অভিযোগ, বাড়ির কাছে দাঁড়িয়েছিল বিনোদ ঠাকুর নামে বছর বত্রিশের এক যুবক। মেয়েটিকে সে মাঝে মধ্যেই উত্ত্যক্ত করত বলে অভিযোগ। ঘটনার দিন মেয়েটির ওড়না ধরে টানাটানি শুরু করে বিনোদ। অশ্লীল ইঙ্গিত করে। মেয়েটির হাত ধরেও টানে। কোনও মতে ওই কিশোরী ছুটে এসে ঢুকে পড়ে ঘরে। ঘটনা জানায় মাকে।

কিশোরীর বাবা মারা গিয়েছেন আগেই। দাদা মিলের শ্রমিক। তিনি সে সময়ে বাড়ি ছিলেন না। মেয়ের মা দেখেন, তখনও দরজার বাইরেই ঘোরাঘুরি করছে বিনোদ। বেরিয়ে এসে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন ওই মহিলা। বিনোদের সঙ্গে বচসা বাধে তাঁর। লোকজন জড়ো হয়ে যায়। তখনকার মতো সরে পড়ে অভিযুক্ত যুবক।

রাত ৮টা নাগাদ মেয়ে এবং পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে ঢিল ছোড়া দূরত্বে জগদ্দল থানায় যান ওই মহিলা। শ্লীলতাহানির ঘটনায় পুলিশ লিখিত অভিযোগ জমা দিতে বলে। সকলে ফিরে আসেন। পথে ফের বিনোদের মুখোমুখি হন ওই মহিলা। সে সময়ে আর এক প্রস্থ তর্কাতর্কি বাধে। সুতো কাটার ছোট ছুরি দিয়ে বিনোদ আচমকাই ওই মহিলার উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তখন আশপাশে পাড়া-পড়শিরাও ছিলেন। মেয়েটিও ছিল। সকলের চোখের সামনেই ছুরি দিয়ে মহিলাকে ফালা ফালা করে চম্পট দেয় বিনোদ।

ঘটনা টেলিফোনে পুলিশকে জানান পাড়ার লোকজন। এলাকায় আসার অনুরোধও করেন। কিন্তু পুলিশ ‘যাচ্ছি-যাব’ করে এড়িয়ে যায় বলে অভিযোগ মেয়েটির পরিবারের। জখম মহিলাকে রাতেই ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে পরে ভর্তি করা হয় কল্যাণী ইএসআই হাসপাতালে।

শুক্রবার সকালে বোনকে সঙ্গে নিয়ে ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহের কাছে ‘বিচার’ চাইতে গিয়েছিলেন ওই কিশোরীর দাদা। অর্জুনবাবু টেলিফোনে কথা বলেন জগদ্দল থানার আইসি গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। অবিলম্বে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এরপরে ফের ওই কিশোরী ও তার দাদা যায় থানায়। শ্লীলতাহানি ও মারধরের অভিযোগ দায়ের হয়। অর্জুনবাবু বলেন, “পুলিশ যদি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী থেকে বিষয়টি দেখত, তবে লিখিত আকারে অভিযোগপত্র তৈরিতে পরিবারটিকে সাহায্য করতে পারত। তা না করে তারা প্রথমে সকলকে ফিরিয়ে দেয় বলে শুনেছি। পরে দ্বিতীয় বার অভিযোগ পেয়েও পুলিশ কিন্তু ঘটনাস্থলে যায়নি।”

molestation minor girl southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy