অবৈধ মেছোভেড়ির প্রতিবাদের জেরেই কি খুন হলেন তৃণমূল নেতা? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে ক্যানিংয়ের ইটখোলার বক্রাবনি গ্রামে। বুধবার গভীর রাতে কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে চিকিৎসকেরা দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম বক্রাবনির বাসিন্দা পিয়ার আলি সর্দারকে (৪৫) মৃত ঘোষণা করেন। ইটখোলার ওই অঞ্চল সদস্য দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয় বেআইনি মেছোভেড়ি উৎখাত করা নিয়ে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন। খুনের অভিযোগে বৃহস্পতিবার পুলিশ বক্রাবনির বাসিন্দা আসরাফ আলি শেখ, সালাউদ্দিন শেখ এবং ক্যানিংয়ের দাঁড়িয়ার বাসিন্দা মইনুদ্দিন নাইয়াকে গ্রেফতার করে।
বুধবার সন্ধেয় ইটখোলা বাজার থেকে মোটর বাইকে বাড়ি ফেরার পথে পিয়ার আলিকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা বোমা মারে এবং গুলি চালায়। তাঁর সঙ্গী হাসা আলি মোল্লা ঘটনাস্থল থেকে পালাতে সক্ষম হন। পরে ক্যানিং থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের ওই বেআইনি মেছোভেড়ির জন্য নদীবাঁধ ভেঙে বহু বার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফলে গ্রামের মানুষও পিয়ার আলির সঙ্গে আন্দোলনে সামিল ছিলেন।
গত ১৩ অক্টোবর বক্রাবনি গ্রামে খুন হন মেছোভেড়ির মালিক আব্দুর রহমান মোল্লার বৌদি হাসনাবানু বিবি। হাসনাবানুর স্বামী আব্দুল ওহাব মোল্লা সে সময়ে পিয়ার আলি ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, হাসনাবানু-খুনে আব্দুল ওহাবের ভাই আব্দুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী ইসমিনা বিবিই মূল অভিযুক্ত। পুলিশের দাবি, গ্রেফতার করা হলে জেরায় তারা স্বীকার করে, পিয়ার আলিকে ফাঁসানোর জন্যই তারা এই খুনের চক্রান্ত করেছিল।
পুলিশের অনুমান, প্রথম বার মিথ্যে মামলায় ফাঁসাতে ব্যর্থ হয়ে, মেছোভেড়ি নিয়ে পুরনো আক্রোশের জেরেই পিয়ার আলিকে খুন করা হল। গ্রামবাসীদের দাবি, “উনিও আমাদের সঙ্গে ওই মেছোভেড়ি উচ্ছেদের দাবিতে লড়াই চালাচ্ছিলেন। তাই এমন অকালে ওঁকে চলে যেতে হল।”
ধৃত আসরাফ আলি ও সালাউদ্দিন আব্দুল ওহাবের বোনের স্বামী এবং ছেলে। ঘটনায় বাকি জড়িতদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। ইটখোলা পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান খতিব সর্দার বলেন, “অবৈধ মেছোভেড়ি নিয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে পরিকল্পিত ভাবে ওঁকে খুন করল মেছোভেড়ির মালিকেরা। আমরা চাই, পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করুক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy