Advertisement
E-Paper

ডাকাতের হাত থেকে রড কেড়ে নিলেন বধূ

মাথায় রডের বাড়ি খেয়েও দমে যাননি। উল্টে ডাকাতের হাত থেকে সেই রড কেড়ে নিয়ে তাকেই তাড়া করে ডাকাতি রুখেছেন বাড়ি বৌ। চিত্‌কার-চেঁচামিচি করে লোক জড়ো করে সাহসী-সঙ্গত করেছেন তাঁর শাশুড়িও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৪৭
সাহসিনী বনিতা। —নিজস্ব চিত্র।

সাহসিনী বনিতা। —নিজস্ব চিত্র।

মাথায় রডের বাড়ি খেয়েও দমে যাননি। উল্টে ডাকাতের হাত থেকে সেই রড কেড়ে নিয়ে তাকেই তাড়া করে ডাকাতি রুখেছেন বাড়ি বৌ। চিত্‌কার-চেঁচামিচি করে লোক জড়ো করে সাহসী-সঙ্গত করেছেন তাঁর শাশুড়িও।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের ভ্যাবলা স্টেশনের কাছে। বড় রাস্তার পাশেই বাড়ি ইমারতি ব্যবসায়ী নির্মলচন্দ্র দাসের। সেই বাড়িতেই চড়াও হয়েছিল দুষ্কৃতীরা। খবর পেয়ে পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে। বছর তিরিশের মহিলার সাহসিকতায় মুগ্ধ বসিরহাট থানার আইসি গৌতম মিত্র জানান, দুষ্কৃতীদের ধরতে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্মলবাবু ছেলে রাকেশকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন ট্যাটঁরায় নিজের দোকানে। রাত তখন প্রায় সাড়ে ৭টা। দোতলার ঘরে নির্মলবাবুর স্ত্রী শিবাণীদেবী টিভি দেখছিলেন। পাশের ঘরে সাত বছরের ছেলে রৈবতককে পড়াচ্ছিলেন শিবাণীদেবীর বৌমা বনিতা। হঠাত্‌ দরজায় খট খট শব্দ। কে এসেছে জানতে চান বনিতা। উত্তর মেলেনি। কৌতুহলবশত উঠে দরজা খুলতে যান তিনি।

পুলিশ জানিয়েছে, দরজা সামান্য খুলতেই বাইরে দাঁড়ানো কেউ একজন রড় দিয়ে সজোরে আঘাত করে বনিতাদেবীর মাথায়। মাথা ফেটে রক্তে ভেসে যায় মুখ। ওই অবস্থাতেও ভয় না পেয়ে বনিতা ঝাঁপিয়ে পড়েন দুষ্কৃতীর উপরে। মহিলার রুদ্রমূর্তি দেখে থতমত খেয়ে যায় ওই দুষ্কৃতী। সেই সুযোগে তার হাত থেকে রড কেড়ে নিয়ে ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে চিত্‌কার জোড়েন বনিতা। দুষ্কৃতীরা দোতলায় উঠে শিবাণীদেবীর ঘর আগেভাগেই বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়েছিল। তিনি বেরোতে পারেননি ঠিকই, কিন্তু জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে চিত্‌কার-চেঁচামিচি শুরু করেন।

এক দিকে শাশুড়ির চিত্‌কার, অন্য দিকে বৌমার রুদ্রমূর্তির কাছে শেষ পর্যন্ত হার মানে দুষ্কৃতীরা। দোতলার ছাদে ওঠার সিঁড়ি ধরলেও আশপাশের মানুষ বেরিয়ে পড়েছে বুঝে দুষ্কৃতীরা নীচের দিকে নেমে যায়। একতলায় সিঁড়ির ঘরের পিছনে গোডাউনের দরজা খুলে পালিয়ে যায় তারা।

এ দিন অভিজ্ঞতার কথা শোনাচ্ছিেলেন বনিতাদেবী। বললেন, “বাইরে কে ডাকছে তা দেখতে সবে অর্ধেক দরজা খুলেছি, অমনি কে যেন রড দিয়ে মাথায় ঘা মারল। মাথা ফেটে চোখ-মুখ রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। আঘাতের চোটে পড়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে বুঝতে পারি, বাড়িতে ডাকাত পড়েছে। একরত্তি ছেলেটা ঘরে। তাই নিজেকে কোনও রকমে সামলে নিয়ে সামনে থাকা হনুমান টুপিতে মুখ-ঢাকা লোকটার দিকে তেড়ে যাই। ওর হাত থেকে রডটা কেড়ে নিয়ে ওকেই তাড়া করি।” ওই মহিলার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি বলেন, “ওর সাহসিকতা আর বুদ্ধির জোরেই বড় ধরনে বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেলাম।”

southbengal basirhat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy