Advertisement
E-Paper

তোলাবাজদের হামলা, জখম ঠিকা শ্রমিকেরা

সাংসদ বলেছিলেন রাস্তা তৈরির কাজে যেন বাধা সৃষ্টি না হয়। দেড় মাসের মধ্যে সেখানে চাহিদামত তোলার টাকা দিতে না পারায় ভরসন্ধেয় দুষ্কৃতীদের হামলায় জখম হলেন রাস্তা তৈরির কাজে যুক্ত ঠিকা শ্রমিকদের কয়েক জন। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগের তির শাসক দলেরই মদত পুষ্ট তোলা আদায়কারীদের দিকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা,

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:২৩

সাংসদ বলেছিলেন রাস্তা তৈরির কাজে যেন বাধা সৃষ্টি না হয়। দেড় মাসের মধ্যে সেখানে চাহিদামত তোলার টাকা দিতে না পারায় ভরসন্ধেয় দুষ্কৃতীদের হামলায় জখম হলেন রাস্তা তৈরির কাজে যুক্ত ঠিকা শ্রমিকদের কয়েক জন। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগের তির শাসক দলেরই মদত পুষ্ট তোলা আদায়কারীদের দিকে। মঙ্গলবার রাতে মারধর করা ছাড়াও দুষ্কৃতীরা শ্রমিকদের মজুরির জন্য বরাদ্দ কয়েক লক্ষ টাকা লুঠ করে বলেও অভিযোগ। আহতদের মধ্যে আজারুল বৈদ্য নামে এক জনকে সংকটজনক অবস্থায় বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদ করলে স্থানীয় দুই গ্রামবাসীর বাড়িতে ঢুকে মারধর করা হয় এবং যথেচ্ছ লুঠপাট চালানো হয়। মহিলাদের শ্লীলতাহানিও হয়। পুলিশকে জানালে তাঁদের খুনের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

বসিরহাটের পিঁফার আটকড়িয়া গ্রামে ওই ঘটনার পর ঠিকাদার সংস্থা এবং গ্রামবাসীর পক্ষে পুলিশের কাছে ১২ জনের নামে দু’টি আলাদা অভিযোগ জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে বসিরহাট থানার আইসি গৌতম মিত্র বলেন, “মারধর, শ্লীলতাহানি, ভাঙচুর এবং ছিনতাইয়ের লিখিত অভিযোগ পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে যায়। দুষ্কৃতীরা খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।”

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার ৫ কোটি ২১ লক্ষ টাকায় বসিরহাটের শাঁখচূড়া-নিমদাঁড়িয়া থেকে পিঁফার রামনগর পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। কাজ করার দায়িত্ব পায় ব্রিটানিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড নামে একটি সংস্থা। কাজ শুরুর পর থেকেই কিছু লোক নানা ভাবে সংস্থার ম্যানেজারকে তোলা নিয়ে চাপ দিতে থাকে বলে অভিযোগ। এ দিন ওই ম্যানেজার বলেন, “কাজের প্রয়োজনে মাঝে মধ্যেই টাকা দিয়ে মেটানোর চেষ্টা করেছি। দুষ্কৃতীদের দাবি ছিল, ওদের লক্ষাধিক টাকা দিতে হবে।” গ্রামবাসীর একাংশ দাবি করেন, বেশির ভাগ অভিযুক্তই শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত । তারা দু’টি গোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই রাস্তার কাজ নিয়ে ঝামেলা চরমে পৌঁছেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ছিল শ্রমিকদের সাপ্তাহিক বেতনের দিন। কিন্তু সন্ধে নামতেই রাস্তার পাশে শ্রমিকদের শিবিরে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ দা, কুড়ুল নিয়ে হামলা চালায় কয়েক জন দুষ্কৃতী। ম্যানেজার পালিয়ে যান। তারা বেতনের টাকা লুঠ করতে যাচ্ছে দেখে শ্রমিকরা বাধা দিলে গণ্ডগোল বাড়ে। ওই সময়েই দুষ্কৃতীদের হাতে তিন জন শ্রমিক জখম হন। ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে দুষ্কৃতীরা হাবিব আক্তার মণ্ডল ও গোলাম মোস্তাফা মোল্লা নামে দুই গ্রাম বাড়িতে হামলা চালায়।

ঠিকাদার সংস্থার সিভিল কন্ট্রাক্টর সিরাজুল করিম, ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক আনারুল খান বলেন, “রাস্তা তৈরি করতে গেলে ২ লক্ষ টাকা দিতে হবে বলে দাবি করেছিল দুষ্কৃতীরা। অত টাকা দেওয়া সম্ভব নয় জানিয়ে দেওয়ার পরেও এই ঘটনা ঘটল। প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা এবং অন্য জিনিসপত্র নিয়ে ওরা পালিয়েছে। পুলিশকে জানানো হলে খুনের হুমকি দেওয়া হয়।” রাস্তার কাজ বন্ধ রেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা।

গত দেড় মাস আগে এই রাস্তার শিলান্যাস ও কাজের উদ্বোধন করেন সাংসদ ইদ্রিস আলি। তখন তিনি বলেছিলেন, কোনও ভাবে ঠিকাদার সংস্থার কাজে যেন বাধা না দেওয়া হয়। কোনও বিষয়ে কারও অভিযোগ থাকলে তা যেন দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে মিটিয়ে নেওয়া হয়। এ দিন রাস্তার কাজ বন্ধের জন্য দলের কেউ জড়িত শুনে ইদ্রিস বলেন, “কে কোন দলের সঙ্গে যুক্ত সেটা বড় কথা নয়। পুলিশকে বলা হয়েছে, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা যে দলের হোক তাদের গ্রেফতার করতে হবে। উন্নয়ন কাজে বাধা বরদাস্ত করা হবে না।”

southbengal basirhat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy