মহিলাদের সঙ্গে কথা বলছেন নেত্রী। সোমবার নির্মল বসুর তোলা ছবি।
সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উপরে শাসক দলের নির্যাতনের অভিযোগ সরেজমিনে দেখতে হাড়োয়ার ব্রাহ্মণচক গ্রামে ঘুরে গেলেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাট।
লোকসভা ভোটের শেষ পর্বে, গত ১২ মে ব্রাহ্মণচক গ্রাম থেকে শতাধিক সিপিএম কর্মী-সমর্থক মিছিল করে স্লোগান দিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সময়ে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা তাঁদের আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। বোমা-গুলি চলে। উভয় পক্ষের কয়েক জন গুলিবিদ্ধ হয়। হামলার ঘটনায় মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল মিনাখাঁর তৃণমূল বিধায়ক উষারানি মণ্ডল ও তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয়ের বিরুদ্ধে। দু’পক্ষের কয়েক জন ধরা পড়ে। তবে সম্প্রতি পুলিশের দেওয়া চার্জশিট থেকে বাদ গিয়েছে বিধায়ক ও তাঁর স্বামীর নাম।
কিন্তু ওই এলাকার সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, ভোটের পর থেকেই নানা সময়ে হামলা চালাচ্ছে তৃণমূল। জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। চাষ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই সোমবার গ্রামে এসেছিলেন বৃন্দা। তিনি বলেন, “মা-মাটির সরকার গরিব কৃষকদের কাছ থেকে জমি কেড়ে নিয়ে তা জোতদারদের হাতে তুলে দিচ্ছে। সিপিএম করায় নির্যাতনের মাত্রা বাড়ছে। পুরুষদের গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে।” সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের নাম তদন্ত থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে বলেও তাঁর অভিযোগ।
এ দিন প্রবল বৃষ্টির মধ্যে গ্রামে এসে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন বৃন্দা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলে নেত্রী রেখা গোস্বামী-সহ অনেকে। বৃন্দার দাবি, বাম জমানায় পাট্টা দেওয়া ১৬০ বিঘা জমি শাসক দলের লোকজন দখল করেছে। এলোকেশী মণ্ডল, যমুনা নস্কররা নেত্রীকে বলেন, “তৃণমূল না করলে গ্রামে থাকা যাবে না বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে গ্রাম ছেড়েছে শতাধিক পুরুষ। অসহায় মহিলারা বাচ্চাদের নিয়ে কোনও রকমে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। রাস্তায় বের হলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে সাহস পাচ্ছি না।” তরুণ নস্কর, অলোকেশ নস্করদের মতো সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা প্রতিনিধি দলের কাছে অনুরোধ করেন, “আমরা কোনও অবস্থাতেই দল ছাড়ব না। শুধু আমাদের পাশে থাকার জন্য নেতাদের একটু বলুন।”
মৃত্যুঞ্জয়বাবুর দাবি, হুমকি দেওয়া বা তার জেরে গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গ্রামে পুলিশ ফাঁড়ি করা হয়েছে। হুমকি-মারধরের অভিযোগ ওঠার কথা নয়। পুলিশ টহল দিচ্ছে। পুলিশ কর্তাদের একাংশ এ-ও জানিয়েছেন, ওই ফাঁড়িতে হামলা-মারধর-হুমকির মতো কোনও অভিযোগ গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এখানে দায়ের হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy