Advertisement
E-Paper

নিষ্প্রদীপ বেহাল সেতু, বাড়ছে দুষ্কৃতীদের উপদ্রব

দিন হোক বা রাত, যে কোনও সময়ই সেতু দিয়ে যেতে গেল হাত পা ভাঙছে, মাথা ফাটছে। আবার সেতুতে চলে দুষ্কৃতীদের হামলাও। এমনই বেহাল দশা বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ এবং হিঙ্গলগঞ্জ থানার মধ্যে কাঠাখালি সেতুর। বিশেষ করে মহিলাদের পক্ষে সন্ধ্যার পর এই সেতু দিয়ে ওঠানামা করা বিপজ্জনক। তবু এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনও নজর নেই বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৫০
পায়ে পায়ে বিপদ। ইনসেটে, রাতের বেলা এই চেহারা নেয় সেতু। —নিজস্ব চিত্র।

পায়ে পায়ে বিপদ। ইনসেটে, রাতের বেলা এই চেহারা নেয় সেতু। —নিজস্ব চিত্র।

দিন হোক বা রাত, যে কোনও সময়ই সেতু দিয়ে যেতে গেল হাত পা ভাঙছে, মাথা ফাটছে। আবার সেতুতে চলে দুষ্কৃতীদের হামলাও। এমনই বেহাল দশা বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ এবং হিঙ্গলগঞ্জ থানার মধ্যে কাঠাখালি সেতুর। বিশেষ করে মহিলাদের পক্ষে সন্ধ্যার পর এই সেতু দিয়ে ওঠানামা করা বিপজ্জনক। তবু এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনও নজর নেই বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এই সেতুটি ২০০০ সালে উদ্বোধন করেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। হাসনাবাদ থানার বরুণহাট এবং হিঙ্গলগঞ্জ থানার গৌড়েশ্বর নদীর উপর বর্তমান এই সেতু। দীর্ঘদিন এই সেতুর কোনও সংস্কার হয় না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। অভিযোগ, সেতুর দু’ধারের ফুটপাতের স্ল্যাব ভেঙে পড়েছে। এমনকী সেতুর উপর বিদ্যুৎতের খুঁটিগুলি পর্যন্ত চুরি হয়ে গিয়েছে। ফলে ওই সেতুতে বেড়েছে দুষ্কৃতীর উপদ্রব। চুরি ছিনতাই তো আছেই তার সঙ্গে মহিলাদের শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটে। বার বার এ বিষয়ে পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

সেতুতে যাত্রীদের রাতের বেলা চলাচলের সুবিধার্থে লাগানো হয়েছিল বেশ কিছু আলো। এতে সীমান্ত এলাকার পাচারকারীদের কাজকর্মে অসুবিধা হত বলে জানায় বাসিন্দারা। এই আলোগুলি ভেঙে এখন স্ট্যান্ডগুলিও ভেঙে ফেলছে দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ। কাঠাখালি সেতুর ওপারে সামসেরনগর পর্যন্ত হিঙ্গলগঞ্জের ৯টি পঞ্চায়েতের শতাধিক গ্রামের কয়েকহাজার মানুষ যাদের নিত্য যাতাযাতের পথ হল এই সেতু। স্থানীয় বাসিন্দা রতন বৈদ্য, ভবেন মাহাতরা বলেন, “উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেয় সব দলের নেতা-মন্ত্রীরা। কিন্তু কিছুই হয় না। আলো না থাকার কারণে রাতে সেতুর উপর ওঠা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মহিলারা তো এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় পান।”

বসিরহাট থেকে গাড়িতে করে যদি সুন্দরবন যেতে হয় তা হলে তিনটি নদীর সেতু পার হতে হয়। এই সেতু হওয়ার পর এলাকার মানুষ মনে করেছিলেন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য হয়তো বাকি দুটি নদীর উপরেও সেতু তৈরি করা হবে। এতে একদিকে যেমন সুন্দরবনে পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে। তেমনি এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি হবে। আবার প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষকেরা এই সেতুগুলি দিয়ে তাদের ফসল শহরের বাজারে অনায়াসে পৌঁছতে পারতেন। সাহেবখালি নদীর উপর সেতুর কাজ শুরু হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু তা বার বার বিভিন্ন কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে আবার কাঠাখালি সেতুও বেহাল।

তবে সম্প্রতি স্থানীয় পঞ্চায়েতের উদ্যোগে সাংসদের টাকায় একটা হাইমাস লাইট লাগানোয় বরুণহাট বাজারের দিকে কিছুটা অন্ধকার কেটেছে। বাসিন্দাদের দাবি, এরকম আলো লাগাতে হবে কাঠাখালিতেও। স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য আমিরুল ইসলাম বলেন, “সেতু রেলিংয়ে ফাটল ধরেছে। সেতুর উপর আলোর অভাবে ফুটপাতের স্ল্যাব এবং বিদ্যুৎতের খুঁটি চুরি হচ্ছে। নিরাপত্তা নেই। সীমান্ত এলাকায় সেতুর সংস্কারের পাশাপাশি পথচারীদের নিরাপত্তার জন্য আলোর ব্যবস্থা করা জরুরি।” মহকুমাশাসক শেখর সেন বলেন, “কাঠাখালি সেতু তৈরির দায়িত্ব ছিল পূর্ত ও সড়ক দফতরের উপর। এখন এই সেতু সংস্কারের দায়িত্ব পায় পূর্ত দফতর। দফতর পরিবর্তনের কারণে মেরামতে সামান্য দেরি হচ্ছে। তবে খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। সংশ্লিষ্ট দফতরকে বলা হয়েছে সেতুর উপর দ্রুত আলোর ব্যবস্থা করতে।”

southbengal basirhat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy