Advertisement
E-Paper

পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল বাগদার পাঁচ শ্মশানযাত্রীর

মৃতদেহ সত্‌কার করতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল পাঁচ জনের। আহত হয়েছেন প্রায় ৩৯ জন। রবিবার রাত ১১ টা নাগাদ কৃষ্ণনগর-দত্তফুলিয়া রাজ্য সড়কের উপরে উলাশী এলাকায় শববাহী গাড়িটি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। সে সময় পিছন দিক দিয়ে একটি দশ চাকার লরি দ্রুত গতিতে এসে ওই ধাক্কা মারে। শশ্মানযাত্রী-সহ গাড়িটি পাশের একটি পুকুরে উল্টে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে তখনই শুরু হয় উদ্ধারকাজ। রাস্তার গাড়ি থামিয়ে অনককেই নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫৩
পুকুর থেকে তোলা হয়েছে শ্মশানযাত্রীদের গাড়িটি। নিজস্ব চিত্র।

পুকুর থেকে তোলা হয়েছে শ্মশানযাত্রীদের গাড়িটি। নিজস্ব চিত্র।

মৃতদেহ সত্‌কার করতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল পাঁচ জনের। আহত হয়েছেন প্রায় ৩৯ জন। রবিবার রাত ১১ টা নাগাদ কৃষ্ণনগর-দত্তফুলিয়া রাজ্য সড়কের উপরে উলাশী এলাকায় শববাহী গাড়িটি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। সে সময় পিছন দিক দিয়ে একটি দশ চাকার লরি দ্রুত গতিতে এসে ওই ধাক্কা মারে। শশ্মানযাত্রী-সহ গাড়িটি পাশের একটি পুকুরে উল্টে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে তখনই শুরু হয় উদ্ধারকাজ। রাস্তার গাড়ি থামিয়ে অনককেই নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।

আহতদের প্রথমে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও ১৪ জনকে আশঙ্কাজনক আবস্থায় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই দু’জনের মৃত্যু হয়। অন্য একজন কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন। প্রায় ২০ জনকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

রবিবার দুপুর ২ টো নাগাদ বয়স জনিত কারণে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানার মোস্তাফাপুরের বাসিন্দা দুলিবালা মণ্ডলের (৯৫) মৃত্যু হয় নিজের বাড়িতেই। তাঁর আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা মৃতদেহ দাহ করার জন্য নবদ্বীপ শ্মশানে নিয়ে আসছিলেন। এ দিনের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধার নাতি উজ্জ্বল মণ্ডলের (৩০)। বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পতেই তাঁর মৃত্যু হয়। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে মৃত্যু হয় উজ্জ্বলবাবুর শ্বশুর শঙ্কর বৈদ্য (৫০) ও এক প্রতিবেশী সমীর বিশ্বাসের (৩০)। সোমবার সকালে ওই পুকুরে আর এক দফা তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় মণ্ডল পরিবারের প্রতিবেশী কমল রায়(২৯) ও প্রসেনজিত্‌ বিশ্বাসের (২৭) মৃতদেহ।

দুর্ঘটনা ঘিরে এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তাঁদের অভিযোগ দুর্ঘটনার খবর পেয়েও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় রামনগর-বড়চুপরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত। তাঁরা জানান রবিবার গভীর রাতে দুর্ঘটনার পর সেখানে ছুটে আসেন স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যরা। তাঁরাই জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে উদ্ধার করেন আহতদের। হাত লাগান বেশ কয়েকজন মহিলাও। তারপর হাঁসখালি থানার পুলিশ আসে। ক্রেন দিয়ে জল থেকে তোলা হয় শববাহী গাড়িটি।

স্থানীয় বাসিন্দা সাবির বিশ্বাস বলেন, বিল্টু গোলদারদের ক্ষোভ মিটছে না। তাঁরা একযোগে জানিয়েছেন, “আমাদের পঞ্চায়েতে একটা অ্যাম্বুল্যান্স আছে। কিন্তু বারবার ফোন করলেও সে অ্যাম্বুল্যান্স আসেনি। শেষে চালকের বাড়িতে গেলে সে আসতে পারবে না বলে সোজা জানিয়ে দেয়।” তাঁদের অভিযোগ এতবড় একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেল। আথচ উদ্ধার কাজে পঞ্চায়েত কোনও ভাবেই এগিয়ে এল না। প্রধানের স্বামী ও উপপ্রধান একবার ঘুরে গিয়েছেন মাত্র।

যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের প্রধান লক্ষ্মী হালদার বলেন, ‘‘পুকুররের জল যে পাম্প মেশিন দিয়ে তোলা দরকার সেটা আমাদের জানানই হয়নি। আর ওই আ্যাম্বুল্যান্স চালকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সোমবার বিকেলে মৃতদের আত্মীয়স্বজনরা শক্তিনগর পুলিশ মর্গে এসে ভিড় করেন। মৃতদেহ হাতে পাওয়ার পরে গোটা হাসপাতাল চত্ত্বর জুড়েই কান্নার রোল। সকালেই পরিবারের অন্য সদস্যরা এসে বৃদ্ধা দুলিবালা মণ্ডলের মৃতদেহ নিয়ে চলে যান নবদ্বীপ শ্মশানে। সেখানেই তাঁর মৃতদেহ সত্‌কার করা হয়। এ দিকে গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন দুলিবালা মণ্ডলের বড় ছেলে প্রভাস মণ্ডল। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তিনি বলেন, ‘‘উলাশি থেকে একজন আত্মীয় গাড়িতে উঠবার কথা ছিল। তাই দাঁড়িয়েছিলাম। এভাবে দুর্ঘটনায় আমরা অন্য প্রিয়জনকে হারাবো ভাবতে পারিনি।’’

road accident bagda southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy