Advertisement
E-Paper

পর পর আক্রান্ত ব্যবসায়ী, স্বরূপনগর-বাদুড়িয়ায় উদ্বেগ

মোটর সাইকেল আরোহী দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে আতঙ্কিত উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগর এবং বাদুড়িয়ার ব্যবসায়ীরা। রাত হলেই মোটর বাইকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দুষ্কৃতীরা। কখনও কখনও গুলি ছুড়ছে। জখমও হচ্ছেন কেউ কেউ। তারপর ব্যবসায়ীদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে পালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। শনিবার রাতেও দুষ্কৃতীরা এক ব্যবসায়ীকে গুলিবিদ্ধ করে টাকা নিয়ে চম্পট দেয়। এই নিয়ে গত কয়েক দিনে কয়েক জন ব্যবসায়ী আক্রান্ত হয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:০৫

মোটর সাইকেল আরোহী দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে আতঙ্কিত উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগর এবং বাদুড়িয়ার ব্যবসায়ীরা। রাত হলেই মোটর বাইকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দুষ্কৃতীরা। কখনও কখনও গুলি ছুড়ছে। জখমও হচ্ছেন কেউ কেউ। তারপর ব্যবসায়ীদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে পালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা।

শনিবার রাতেও দুষ্কৃতীরা এক ব্যবসায়ীকে গুলিবিদ্ধ করে টাকা নিয়ে চম্পট দেয়। এই নিয়ে গত কয়েক দিনে কয়েক জন ব্যবসায়ী আক্রান্ত হয়েছেন। পুলিশ তদন্তে নামলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। উদ্ধার করা যায়নি টাকা। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে ব্যবসায়ী মহলে। অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব বন্ধ না হলে আন্দোলনে নামারও হুমকি দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেশ কয়েক লক্ষ টাকা একটি ব্যাগে নিয়ে মোটর বাইকে চেপে স্বরূপনগরের ডাকবাংলো-তরণীপুর রাস্তা ধরে গোবিন্দপুরের বাড়িতে ফিরছিলেন মতিয়ার সর্দার। পথে তাঁর সঙ্গে বাইকে ওঠেন পরিচিত এক ব্যবসায়ী আসরাফ সর্দার। টাকার ব্যাগটি সঙ্গীর হাতে দেন মতিয়ার। রাত পৌনে ৯টা নাগাদ বালকি হাইস্কুলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে পিছন থেকে দু’টি মোটর বাইকে চার দুষ্কৃতী হঠাত্‌ই গুলি ছুড়তে শুরু করে। মোটর বাইকের পিছন থেকে লাফ দিয়ে পড়েন আসরাফ। তার আগে অবশ্য টাকার ব্যাগটি হাত থেকে ফেলে দেন। হাতে-পিঠে দু’টি গুলি লাগে মতিয়ারের। তিনিও রাস্তায় ছিটকে পড়েন। দুষ্কৃতীরা টাকার ব্যাগ নিয়ে পালায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা এসে উদ্ধার করেন মতিয়ারকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ডাকবাংলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বসিরহাট হাসপাতাল হয়ে তাঁকে বারাসাতের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। রাতেই ঘটনাস্থলে যান পুলিশকর্তারা।

গত সোমবার রাতে স্বরূপনগরের হটাগঞ্জের বাসিন্দা ইমরান আলি গাজি কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে যাওয়ার সময়ে বাদুড়িয়ার তেঁতুলিয়া-মসলন্দপুর রাস্তায় রামচন্দ্রপুরের কাছে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন। দুষ্কৃতীদের গুলি লাগে মোটর বাইকে সওয়ার ওই ব্যবসায়ী পিঠে। তাঁরও টাকা-ভর্তি ব্যাগ নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। কয়েক দিন আগে, বাদুড়িয়ার ভাদুড়িয়া গ্রামের ব্যবসায়ী দেবুজিত রায় মোটর বাইকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে দু’টি বাইকে আসা দুষ্কৃতীরা তাঁকে মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেয়।

এই নিয়ে দেবুজিতবাবু তিন তিনবার এবং তাঁর বাবা বার দু’য়েক আক্রান্ত হলেন।

কয়েক দিন আগে গরু পাচারে বাধা দেওয়ায় বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন স্বরূপনগরের বালতি-নিত্যানন্দকাটি পঞ্চায়েতের খলসি গ্রামে কর্তব্যরত বিএসএফ জওয়ান রাশিকুল মণ্ডল।

এ ছাড়াও নানা ভাবে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ স্বরূপনগর-বাদুড়িয়ার মানুষ। জেলার এক পুলিশকর্তার দাবি, অভিযোগ পেলে সব ক্ষেত্রেই তদন্ত হয়। পাশাপাশি তিনি আরও জানান, অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও সহযোগিতা মেলে না। কারণ, সীমান্তবর্তী এলাকায় অনেকেই অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের থেকে টাকা লুঠপাট হলে সে খবর অনেক সময় চেপে যাওয়ার চেষ্টা হয়।

নিরাপত্তা চেয়ে স্বরূপনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন সমাজকর্মী বিপ্লবকুমার চৌধুরী। “তাঁর কথায়, অবিলম্বে সীমান্তের মানুষদের নিরাপত্তায় পুলিশের পক্ষে অবৈধ গরুপাচার বন্ধে উদ্যোগী না হলে মানব অধিকার রক্ষায় আদালতের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হতে হবে।” বিপ্লববাবু বলেন, “সীমান্তরক্ষীর মৃত্যুতে আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। সে কারণে একজন নাগরিক হিসাবে নিজেদের কর্তব্য এবং দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছি।” তাঁর অভিযোগ, এক শ্রেণির পুলিশকর্মী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সীমান্তরক্ষীর জন্য গরু পাচার বন্ধ হচ্ছে না। আগামী সাত দিনের মধ্যে গরু পাচার বন্ধে কোনও পদক্ষেপ না করা হলে আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে।

প্রসঙ্গ এ সব দেখেশুনে এক পুলিশকর্মীর বক্তব্য, যে পথে পাচারের গরু সীমান্ত পর্যন্ত এসে পৌঁছয়, সে সব রাস্তায় পাহারা বসালেই তো রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, বিহার থেকে রাজ্যের সীমান্তবর্তী গ্রামে গরু আসা বন্ধ হয়ে যায়। আসলে কেন্দ্র কিম্বা রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই গরুপাচার বন্ধ হচ্ছে না। সেই সূত্রে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবও চলছে।

basirhat attack on businessman swarupnagar-baduria southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy