Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ব্যথায় ওষুধ লাগিয়ে দিস, বলে গেল দুষ্কৃতীরা

ফের ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা বাগদায়। এ বারের ঘটনাস্থল, স্থানীয় কুজারবাগি এলাকা। কিছু দিন আগেই কুলিয়া গ্রামে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা রাতের অন্ধকারে কোদালিয়া নদী পেরিয়ে এসে একটি বাড়িতে ডাকাতি করে পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। রবিবার রাতে ফের ডাকাতির ঘটনা ঘটায় এলাকার মানুষ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। সোমবার বিকেলে ডাকাতির ঘটনার তদন্তে বাগদা থানায় আসেন উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়।

সন্ধ্যাদেবীর বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

সন্ধ্যাদেবীর বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাগদা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫১
Share: Save:

ফের ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা বাগদায়। এ বারের ঘটনাস্থল, স্থানীয় কুজারবাগি এলাকা। কিছু দিন আগেই কুলিয়া গ্রামে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা রাতের অন্ধকারে কোদালিয়া নদী পেরিয়ে এসে একটি বাড়িতে ডাকাতি করে পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। রবিবার রাতে ফের ডাকাতির ঘটনা ঘটায় এলাকার মানুষ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। সোমবার বিকেলে ডাকাতির ঘটনার তদন্তে বাগদা থানায় আসেন উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ডাকাতির মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” পুলিশ জানিয়েছে, ডাকাতির ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে স্থানীয় পাঁচপোতা এলাকা থেকে এ দিন সন্ধ্যায় জুলফিকার আলি ওরফে জুলু নামে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, জেরায় সে ডাকাতির কথা কবুল করেছে। জুলুর বিরুদ্ধে অতীতেও বহু ডাকাতির অভিযোগ আছে পুলিশের খাতায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত ২টো নাগাদ এক দল সশস্ত্র দুষ্কৃতী হামলা চালায় কুজারবাগি গ্রামের বৈদ্যনাথ বিশ্বাসের বাড়িতে। অভিযোগ, বৈদ্যনাথবাবুর বাড়ি থেকে তারা প্রায় ১০ ভরি সোনার গয়না লুঠ করে নিয়ে গিয়েছে। দোতলা বাড়ির একতলার ঘরে বৈদ্যনাথবাবু ও দোতলার ঘরে তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যাদেবী বৌমা পিঙ্কিকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন। সন্ধ্যাদেবী প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। ছেলে জাহাজে কাজ করে। কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। সন্ধ্যাদেবী বলেন, “রাত ২টোর সময়ে ঘরের বাইরে শব্দ শুনে ঘুম থেকে উঠে আলো জ্বালাই। উঠোনে গিয়ে দেখি। কিছু দেখতে না পেয়ে ফের ঘুমিয়ে পড়ি। কিছু ক্ষণ পরে ফের একটা জোরে শব্দ শুনি। দুষ্কৃতীরা গ্রিলের তালা ভেঙে আমার স্বামীর ঘরে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে তাঁকে মারধর করে।” সন্ধ্যাদেবী জানান, দোতলা থেকে থেকে নামতে গেলে দুষ্কৃতীরা উপরে এসে মাথায় বন্দুক ও গলায় ভোজালি ঠেকিয়ে বলে, “৫ লক্ষ টাকা তুলেছিস, ওটা আমাদের দিয়ে দে।” পরিবারের তরফে দুষ্কৃতীদের জানানো হয়, তাঁরা ব্যাঙ্ক থেকে কোনও টাকা তোলেননি। তখন তারা সোনার গয়না দিতে বলে। সন্ধ্যাদেবীই আলমারির চাবি খুলে গয়না বের করে দেন। পিঙ্কিদেবী বলেন, “শাশুড়িকে যখন দুষ্কৃতীরা নীচে নিয়ে যাচ্ছিলেন, আমি জানলা খুলে চিত্‌কার করি। ঘরে ছিটকিনি দেওয়া ছিল। দুষ্কৃতীরা লাথি মেরে তা ভেঙে ঘরে ঢুকে আমার দিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে। গায়ে যা গয়না ছিল সব খুলে দিয়েছি।”

গোলমাল বুঝে গ্রামের কয়েক জন বেরিয়ে এসেছিলেন। দুষ্কৃতীরা তাঁদের বোমা মারার ভয় দেখিয়ে পালিয়ে যায়। সন্ধ্যাদেবীকে বলে যায়, তিনি যেন তার স্বামীর আঘাতের জায়গায় ওষুধ লাগিয়ে দেন। একটি ঘরে সকলকে আটকে বাইরে থেকে ছিটকিনি দিয়ে যায় তারা। পরে এলাকার বাসিন্দারা এসে সকলকে উদ্ধার করেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

robbery kujarbagi bagda southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE