Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মাঝরাতে মহিলার কান্না, পড়শিরা ধরলেন গৃহকর্তাকে

গভীর রাতে বাড়ির মধ্যে থেকে মহিলার কান্নাকাটির শব্দ শুনে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। রবিবার রাতে বাড়িতে গ্রামের কেউ কেউ দেখেন, এক মহিলা কাঁদছেন। তাঁর অভিযোগ, কয়েক দিন আগে বিয়ের নাম করে তাঁকে নিয়ে এসে সহবাসের পরে এখন বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ কথা শুনে গ্রামের মানুষ দেগঙ্গার কলসুর গ্রামে ওই বাড়ির মালিক পঙ্কজ বিশ্বাসকে মারধর করে তুলে দেন পুলিশের হাতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৪০
Share: Save:

গভীর রাতে বাড়ির মধ্যে থেকে মহিলার কান্নাকাটির শব্দ শুনে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। রবিবার রাতে বাড়িতে গ্রামের কেউ কেউ দেখেন, এক মহিলা কাঁদছেন। তাঁর অভিযোগ, কয়েক দিন আগে বিয়ের নাম করে তাঁকে নিয়ে এসে সহবাসের পরে এখন বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ কথা শুনে গ্রামের মানুষ দেগঙ্গার কলসুর গ্রামে ওই বাড়ির মালিক পঙ্কজ বিশ্বাসকে মারধর করে তুলে দেন পুলিশের হাতে। সোমবার মহিলার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে অপহরণ এবং ধর্ষণের মামলা রুজু করে পুলিশ পঙ্কজকে গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ জানায়, গত কয়েক বছর ধরে কলসুর পঞ্চায়েত ভবনের কাছে একটি দোতলা বাড়িতে থাকে পঙ্কজ নামে বছর পঁয়ত্রিশের ওই ব্যক্তি। আটেকের এক বালকও থাকে তার সঙ্গে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, আজব প্রকৃতির মানুষ পঙ্কজ। দীর্ঘ দিন ধরে থাকা সত্ত্বেও এলাকার মানুষের সঙ্গে বড় একটা মেলামেশা করে না। মাঝে মধ্যে বড় বড় গাড়িতে অপরিচিত কিছু মানুষ আসে। বারান্দায় রঙিন কাচ লাগানো থাকায় বাইরে থেকে দেখে বোঝার জো নেই, ভিতরে আর কে আছে। কিন্তু রবিবার রাতে মহিলার কান্নার শব্দ শুনে স্থানীয় মানুষ এগিয়ে আসেন।

পুলিশের কাছে ওই মহিলা জানিয়েছেন, গত এক মাস আগে হাবরায় তাঁর বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিল পঙ্কজ। তারপর থেকে মোবাইলে যোগাযোগ করত। মেয়ের বাবা গরিব ভ্যানচালক। বড়লোক বাড়িতে মেয়ের বিয়ে দিতে রাজি ছিলেন না তিনি। পঙ্কজের স্বভাব-চরিত্র ভাল নয় বলেও খবর পেয়েছিলেন তিনি। ওই তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, এত সব জানার পরেও পঙ্কজ বার বার ফোন করায় তার প্রেমে পড়ে যান। দিন দশেক আগে সে এক কাপড়ে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন। তাঁকে মোটর বাইকে নিয়ে নিজের বাড়িতে তোলে পঙ্কজ। অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়েটির সঙ্গে সহবাস করে পঙ্কজ। কিন্তু দিন দুয়েক আগে মুম্বই থেকে আসা একটি ফোনের সূত্রে তরুণী জানতে পারেন, তাঁকে বিক্রির ছক কষা হচ্ছে। প্রতিবাদ করলে স্বমূর্তি ধরে ওই ব্যক্তি। তরুণীকে মারধর করা হয়। কাউকে কিছু বললে ফল মারাত্মক হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়। তরুণীকে দরজায় তালা দিয়ে বাইরে যেত পঙ্কজ।

রবিবার রাতে সে সব নিয়েই বচসা, মারধরের জেরে তরুণী কান্নাকাটি করছিলেন। যা কানে আসে পঙ্কজের বাড়ির ভাড়াটে অরুণ কাবাসির। তিনি খবর দেন প্রতিবেশীদের। ধরা পড়ে পঙ্কজ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই ব্যক্তি বিয়ের প্রলোভনে ফাঁসিয়ে আগেও কয়েক জন মহিলাকে মুম্বই নিয়ে গিয়েছে। সোমবার বারাসত আদালতের বিচারক পঙ্কজকে দু’দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

de ganga woman crying live in southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE