Advertisement
E-Paper

মহিলার সঙ্গে অসভ্যতা, সাসপেন্ড কনস্টেবল

হাসপাতাল চত্বরে নিজের কোয়ার্টারে কাজ করছিলেন এক স্বাস্থ্যকর্মীর স্ত্রী। হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই সেখানে ঢুকে পড়েন এক পুলিশকর্মী। ঘরে ঢুকে সামনে থাকা একটা চেয়ার টেনে নিয়ে তাতে বসেও পড়েন। ওই তরুণীকে বলেন, “তোমায় তো দেখতে বেশ সুন্দর। আমার সামনে নাচ-গান করতে হবে।” অপরিচিত আগন্তুকের এ হেন আবদার শুনে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় মহিলার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৫ ০১:০৯

হাসপাতাল চত্বরে নিজের কোয়ার্টারে কাজ করছিলেন এক স্বাস্থ্যকর্মীর স্ত্রী। হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই সেখানে ঢুকে পড়েন এক পুলিশকর্মী। ঘরে ঢুকে সামনে থাকা একটা চেয়ার টেনে নিয়ে তাতে বসেও পড়েন। ওই তরুণীকে বলেন, “তোমায় তো দেখতে বেশ সুন্দর। আমার সামনে নাচ-গান করতে হবে।”

অপরিচিত আগন্তুকের এ হেন আবদার শুনে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় মহিলার। কিন্তু নাছোড় ওই পুলিশকর্মী মহিলাকে নাচ-গান করার জন্য জোরাজুরি করতে থাকেন। আর কিছু না হোক, তাঁর দিকে তাকিয়ে একবার যেন প্রাণখুলে হাসেন মহিলা, এমন অনুরোধও করেন।

পুলিশ কর্মীর অভব্য আচরণের প্রতিবাদ করায় মহিলার মাকে মারধর করে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া বলে অভিযোগ। ঘরের মধ্যে জিনিশপত্র ভাঙচুর করে তাণ্ডব চালিয়ে পালান ওই পুলিশ কর্মী।

এমন ঘটনায় হতবাক ওই মহিলা ও তাঁর পরিবারের লোকজন। খবর যায় পুলিশের কাছে। কাছেই একটি দোকান থেকে মদ্যপ অবস্থায় ওই কনস্টেবলকে আটক করে পুলিশ। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানান, জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। আপাতত ওই পুলিশ কর্মীকে দোলতলা পুলিশ লাইনে রাখা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুর হাসপাতাল চত্বরে কয়েকটি ঘরে স্বাস্থ্যকর্মীরা পরিবার নিয়ে বাস করেন। সেখানে পুলিশ চৌকিও আছে। এ দিন দুপুর সাড়ে ১১টা নাগাদ এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর কোয়ার্টারে এসেছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী পার্থ বিশ্বাস। ওই চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর স্ত্রী যখন দরজা খুলে পার্থবাবুকে সঙ্গে কথা বলার সময়ে সেখানে হাজির হন জয়ন্ত।

অভিযোগ, সজনে ডাঁটা পাড়তে চেয়ে পার্থবাবুকে সরিয়ে সোজা বাড়ির অন্দরমহলে ঢুকে পড়েন ব্যারাকের ওই পুলিশকর্মী। সে সময়ে তিনি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলে অভিযোগ। সজনে গাছে ওঠার পরিবর্তে ঘরের মধ্যে ঢুকে ওই স্বাস্থ্যকর্মীর স্ত্রীকে তাঁর সামনে নাচ-গান করতে হবে বলে জোরজার শুরু করেন ওই পুলিশ কর্মী। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে পার্থবাবু ছোটেন ওই মহিলার স্বামীকে খবর দিতে।

এ দিকে একজন পুলিশকর্মী ঘরের মধ্যে ঢুকে এমন ব্যবহার শুরু করায় রীতিমতো ঘাবড়ে গিয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন ওই মহিলা। তা দেখে এগিয়ে আসেন তাঁর বৃদ্ধা মা। অভিযোগ, বৃদ্ধাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন জয়ন্ত। প্রবল রাগে ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর শুরু করেন।

তত ক্ষণে এলাকার মানুষ ঘটনার কথা জানতে পেরে কোয়ার্টারের বাইরে জড়ো হতে শুরু করেছে। মহিলার স্বামী বিএমওএইচ সুরজ সিংহের কাছে সাহায্যের আবেদন করেন। সুরজবাবু বলেন, “জেলায় বৈঠকে ছিলাম। সে সময়ে উনি মোবাইলে ফোন করে জানান, ঘরে পুলিশ ঢুকে গোলমাল পাকিয়েছে। থানায় ফোন করে ওই পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানাই।”

তত ক্ষণে অভিযুক্ত পুলিশকর্মীকে গ্রেফতারের দাবিতে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে জনতা। বেগতিক বুঝে এলাকা ছেড়ে পালান মদ্যপ পুলিশকর্মী। এমন সময় পুলিশের কাছে খবর আসে, কার্তিকপুর এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে ঢুকে হামলা চালাচ্ছে এক পুলিশকর্মী। দেগঙ্গা থানার পুলিশ গিয়ে সেখান থেকেই জয়ন্তকে আটক করে। পরে দেগঙ্গা থানায় ওই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়।

হাসপাতাল কোয়ার্টারের কয়েক জন আবাসিক বলেন, “অনেক দিন হল এখানে পুলিশকর্মীরা আছেন। আগে কখনও এমন কাণ্ড ঘটেনি। এ বার যা হল, তাতে আমরা নিরাপত্তার অভাববোধ করছি।”

ঘটনার পর এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই মহিলা, ভয়ে জানালা-দরজা পর্যন্ত বন্ধ করে রেখেছেন তিনি।

southbengal misbehave suspended constable deganga
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy