Advertisement
E-Paper

সরকারি খাল দখলের অভিযোগ ক্যানিংয়ের তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে

সরকারি খাল ঘিরে মাছ চাষ করানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে। ক্যানিংয়ের হাটপুকুরিয়া পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার সেচ দফতরের একটি নিকাশি খাল জবরদখল করে প্রায় এক কিলোমিটার অংশে কাঠের পাটা ও নাইলনের জাল ফেলে মাছ চাষ করছেন তৃণমূলের হাটপুকুরিয়া অঞ্চল সভাপতি সিরাজ ঘরামির ঘনিষ্ঠ লোকজন। তাতে মদত দিচ্ছেন সিরাজ ঘরামি নিজে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৪ ০২:২২
এই খাল নিয়েই বিতর্ক। ছবি: সামসুল হুদা।

এই খাল নিয়েই বিতর্ক। ছবি: সামসুল হুদা।

সরকারি খাল ঘিরে মাছ চাষ করানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে। ক্যানিংয়ের হাটপুকুরিয়া পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার সেচ দফতরের একটি নিকাশি খাল জবরদখল করে প্রায় এক কিলোমিটার অংশে কাঠের পাটা ও নাইলনের জাল ফেলে মাছ চাষ করছেন তৃণমূলের হাটপুকুরিয়া অঞ্চল সভাপতি সিরাজ ঘরামির ঘনিষ্ঠ লোকজন। তাতে মদত দিচ্ছেন সিরাজ ঘরামি নিজে।

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে সিরাজ দাবি করেছেন, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ৭০ জন যুবক ওই খালে মাছ চাষ করছেন। এর সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁর বক্তব্য, “খালটি তো এমনিই পড়েছিল। সেখানে মাছচাষ হলে, সরকার যদি রাজস্ব পায়, তবে ক্ষতি কী?” কিন্তু আদৌ আইন মেনে ওই খাল লিজ নেওয়া হয়েছে কিনা, বা তাতে সরকার কোনও রাজস্ব পাচ্ছে কিনা, তার কোনও সদুত্তর অবশ্য দেননি ওই তৃণমূল নেতা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ও দক্ষিণ হাটপুকুরিয়া, দেবিষাবাদ এলাকার প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দা ওই খালের উপরে নির্ভরশীল। খালের জলেই এলাকার চাষবাস হয়। খালের মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন অনেকে। এ ছাড়া, এলাকার নিকাশির জল ওই খাল দিয়ে গোপালপুর, দাঁড়িয়া অঞ্চল হয়ে ঢোষাহাটের পিয়ালি নদীতে গিয়ে মেশে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই খালটি জবরদখল করে মাছ চাষ করা হচ্ছে। নিকাশি নালাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকী, চাষবাসের জন্যও ওই খালের জল নিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে গ্রামবাসীদের। তাঁদের দাবি, অঞ্চল সভাপতি সিরাজ ঘরামির নির্দেশে পঞ্চায়েত প্রধান প্রতিমা সর্দার ওই খালে তাঁর ঘনিষ্ঠদের মাছ চাষের অনুমতি দিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা আবু সিদ্দিক লস্কর, সহদেব মিদ্যাদের কথায়, “এ নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু তাতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে প্রশাসনের সব স্তরে জানিয়েছি আমরা।”

প্রতিমা সর্দারের বক্তব্য, “একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কয়েকজন ছেলে ওই খালে মাছ চাষ করবেন বলে আমার কাছে আবেদন করেছিলেন। আমি কোনও লিখিত অনুমতি দিইনি। জবরদখল হলে তা দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের।” সিরাজ ঘরামির মতো তাঁরও যুক্তি, “কিছু বেকার ছেলে যদি মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়, তবে অসুবিধা কোথায়?”

শুধু গ্রামবাসীরা নন, সিরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তৃণমূলের অন্যান্য নেতাদের একাংশও। ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ছুন্নত হালদার ও ওই এলাকার তৃণমূল নেতা সেলিম সর্দারও বলেন, “অঞ্চল সভাপতি কারও অনুমতি না নিয়ে, ইচ্ছে মতো তাঁর অনুগামী কয়েক জনকে দিয়ে সরকারি খাল জবরদখল করে মাছ চাষ করাচ্ছেন। এ নিয়ে আমরা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পরেশরাম দাসকে জানিয়েছি।”

পরেশরামববাবুর আবার বক্তব্য, “ওই এলাকায় খাল নিয়ে একটা সমস্যার কথা শুনেছি। পুরো বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। প্রশাসনকে বলব, সরকারি আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে।” মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য বলেন, “ওই এলাকায় সেচ দফতরের একটি খাল বেআইনি ভাবে দখল করে মাছ চাষ করা হচ্ছে শুনেছি। এ নিয়ে আমরা দফতরের সকলের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সংশ্লিষ্ট দফতরকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।”

canning tmc leader southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy