শান্তিপুরের শাড়ি ব্যবসায়ী তোতন রায়কে খুনের অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে চার মাঝি এবং গাড়ির চালককে গ্রেফতার করল বলাগড় থানার পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম রাজু সাহা, মহাবীর চৌধুরী, ভীম ধর, অভিজিৎ ওরফে পাপ্পু চৌধুরী এবং অমৃত মহলাদার। এঁদের মধ্যে রাজু তোতনের গাড়ির চালক। অমৃত ছিলেন ফেরিঘাটের অফিসঘরে, বাকিরা ছিলেন ভেসেলে।
মাঝিরা দাবি করেছিলেন, তোতনকে গঙ্গা থেকে উদ্ধার করে পাড়ে তোলা হয়। তার পরে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। বুধবার তোতনের বাবা ফণীভূষণবাবু বলাগড় থানায় ছেলের নিখোঁজ ডায়েরি করেন। বৃহস্পতিবার সকালে শান্তিপুরের ঘোড়ালিয়ার পালপাড়া ঘাটের কাছে তোতনের দেহ উদ্ধার হয়। এর পরেই ফণীভূষণবাবু শান্তিপুর থানায় রাজু এবং ফেরিঘাটের লোকজনের নামে ছেলেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার রাতেই শান্তিপুর থানার তরফে সেই অভিযোগ বলাগড় থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে খুন এবং দেহ লোপাটের চেষ্টার ধারা দিয়ে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে বলাগড় থানার পুলিশ। রাতেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের শুক্রবার চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক চোদ্দো দিন জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, তোতনের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে মাঝিরা এখন অন্য কথা বলছেন। তাঁরা জানান, তোতনকে তাঁরা জল থেকে তুলতে পারেননি। তাহলে প্রথমে ওই দাবি করেছিলেন কেন? মাঝিদের যুক্তি, সম্প্রতি পাশের কালনা ফেরিঘাটে নৌকোডুবির পরে জনরোষে যে ভাবে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল, এ ক্ষেত্রেও তেমনটা হতে পারে ভেবে তাঁরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। তাই ওই কথা বলে বলেছিলেন। যদিও পরিবারের দাবি, তোতনের কাছে তিন লক্ষ টাকা-সহ অন্যান্য দামি জিনিস ছিল। সে সবের লোভেই তাঁকে খুন করে দেহ জলে ফেলে দেওয়া হয়। ঘটনার সময় ঘাটের সিসি টিভি বন্ধ ছিল। ‘অপরাধ’ চাপা দিতেই এমনটা করা হয়েছিল কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তোতনের পরিবার। তদন্তকারীরা এক অফিসার জানান, ধৃতদের বক্তব্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে। ঠিক কী কারণে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেই তা পরিষ্কার হবে।
এ দিকে, শুক্রবারেও গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাটে গোলমালের আশঙ্কায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। এ দিনও ফেরিঘাট বন্ধ ছিল। ফেরিঘাটের পরিকাঠামো এবং নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে আজ, শনিবার জেলা প্রশাসনের তরফে বলাগড় বিডিও অফিসে বৈঠক ডাকা হয়েছে। রাত ১০টার পর যাতে ঘাটে পারাপার না হয়, সে জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy