Advertisement
E-Paper

সংসদের প্রধান চার পদে ছাত্রীরাই

তৃণমূলের অন্দরের খবর, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদে ছাত্রীদের গুরুত্ব দেওয়া হোক। তাঁর ইচ্ছে অনুযায়ী ওখানকার কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের চারটি গুরুত্বপূর্ণ পদ-সহ পাঁচটি পদে এলেন ছাত্রীরা। সাম্প্রতিক অতীতে এমনটা দেখা যায়নি বলে জানাচ্ছে শিক্ষা শিবির।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৩৬
অবশেষে মিষ্টিমুখ। ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে নানা উত্তেজনার পরে সদ্য মনোনীত সভানেত্রী রুমানা আখতার (বাঁ দিকে) ও সাধারণ সম্পাদক লগ্নজিতা চক্রবর্তীর থেকে মিষ্টি নিয়ে খেলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ। বুধবার সুদীপ্ত ভৌমিকের তোলা ছবি।

অবশেষে মিষ্টিমুখ। ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে নানা উত্তেজনার পরে সদ্য মনোনীত সভানেত্রী রুমানা আখতার (বাঁ দিকে) ও সাধারণ সম্পাদক লগ্নজিতা চক্রবর্তীর থেকে মিষ্টি নিয়ে খেলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ। বুধবার সুদীপ্ত ভৌমিকের তোলা ছবি।

তৃণমূলের অন্দরের খবর, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদে ছাত্রীদের গুরুত্ব দেওয়া হোক। তাঁর ইচ্ছে অনুযায়ী ওখানকার কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের চারটি গুরুত্বপূর্ণ পদ-সহ পাঁচটি পদে এলেন ছাত্রীরা। সাম্প্রতিক অতীতে এমনটা দেখা যায়নি বলে জানাচ্ছে শিক্ষা শিবির।

ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে শাসক দলের ছাত্র শাখা টিএমসিপিতে চূড়ান্ত খেয়োখেয়ির মধ্যেও দেখা যাচ্ছে, পদ বণ্টনে ক্ষমতাসীন জয়া দত্তের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীরই পাল্লা ভারী। নতুন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সভানেত্রী মনোনীত হয়েছেন রুমানা আখতার। ১৯ জানুয়ারি কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের মারামারিতে তিনিই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সহ-সভানেত্রী সুনীতি মুর্মু। সাধারণ সম্পাদিকা হয়েছেন লগ্নজিতা চক্রবর্তী। পত্রিকা সম্পাদিকার পদ পেয়েছেন মৌমিতা দাশগুপ্ত। এই চার জনই জয়া-গোষ্ঠীর। তবে যিনি সহ-সাধারণ সম্পাদিকার পদ পেয়েছেন, সেই সায়নী সরকার টিএমসিপি-র প্রাক্তন সভাপতি অশোক রুদ্রের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর সমর্থক বলে ওই সংগঠন সূত্রের খবর। কোষাধ্যক্ষ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আর ক্রীড়া সম্পাদকের পদ গিয়েছে ছাত্রদের দখলে। এ দিন যে-আট জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন ছাত্রী এবং তিন জন ছাত্র। গোষ্ঠী-বিভাজনের দিক থেকে ছাত্রছাত্রী মিলিয়ে ছ’জন জয়ার দিকে। বাকি দু’জন অশোক-সমর্থক।

জয়া-গোষ্ঠীর তরফে মণিশঙ্কর মণ্ডল এবং অশোক-গোষ্ঠীর আব্দুল কায়ুম মোল্লা ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক-পদের দাবিদার। গত সোমবার মণিশঙ্কর ও কায়ুমকে নিজের বাড়িতে ডেকে আলোচনা করেন শিক্ষামন্ত্রী। তারও আগে, গত শনিবার পার্থবাবু ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, নিজেরা সর্বসম্মতিতে প্রার্থী ঠিক করতে না-পারলে সাধারণ সম্পাদকের পদে কোনও ছাত্রীকে বসানো হবে। শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদে কোনও পদই পাননি মণিশঙ্কর বা কায়ুম। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে মুখবন্ধ খামে কমিটির সদস্যদের নাম এসে পৌঁছয় রেজিস্ট্রার সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। বুধবার বেলা ১টা নাগাদ উপাচার্য আশুতোষ ঘোষের ঘরে কায়ুম, মণিশঙ্কর-সহ কয়েক জনকে বসিয়ে সেই খাম খুলে নাম ঘোষণা করা হয়।

কয়েক মাস ধরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমসিপি-তে চূড়ান্ত গোষ্ঠী-কাজিয়া চলছিল। এক দিকে প্রাক্তন সভাপতি অশোকের গোষ্ঠী। অন্য দিকে বর্তমান সভানেত্রী জয়ার দলবল। ছাত্রভোটের ঠিক আগে দুই গোষ্ঠীর বৈরিতা চরমে পৌঁছয়। ১৯ জানুয়ারি জয়া বহিরাগতদের নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকার পরে সংঘর্ষ হয় দফায় দফায়। পরিস্থিতি এমনই সঙ্গিন হয়ে ওঠে যে, হস্তক্ষেপ করতে হয় শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। দফায় দফায় দু’পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। জয়াকে তিরস্কার করেন মুখ্যমন্ত্রীও। তবে ছাত্র সংসদে শেষ পর্যন্ত জয়া-গোষ্ঠীরই আধিপত্য থাকল।

এ দিন নাম ঘোষণার পরে বেরোনো বিজয় মিছিলে দেখা যায়নি অশোক গোষ্ঠীর সায়নীকে। সকলে মিলে একসঙ্গে মিষ্টি খাওয়ার সময়েও দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন তিনি। মিছিলে যোগ দেননি কায়ুমও। সায়নী বলেন, ‘‘সভানেত্রী এবং সাধারণ সম্পাদক নিজেরা মিছিলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি কিছুই জানতাম না। তাই যাইনি। মিষ্টি খাওয়ানোর কথাও জানতাম না।’’

গোষ্ঠী-কাজিয়ার কথা মানতে চাননি সদ্য সাধারণ সম্পাদিকার পদে আসা লগ্নজিতা। তিনি বলেন, ‘‘কোনও গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ অনুসরণ করে আমরা একসঙ্গেই চলবো।’’

Calcutta University
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy