করোনায় আক্রান্ত বৃদ্ধাকে দরজা ভেঙে উদ্ধার করেও শেষরক্ষা হল না।
মর্মান্তিক ছবি হুগলির চুঁচুড়ায়। করোনায় আক্রান্ত বৃদ্ধাকে দরজা ভেঙে উদ্ধার করেও শেষরক্ষা হল না। শ্বাসকষ্টে মৃত্যু হল তাঁর। চুঁচুড়ার ফুলপুকুরের বাসিন্দা আভা দত্ত (৭৬) বাড়িতে একাই থাকছিলেন। কারণ তাঁর ছেলে অভিজিৎ ও তাঁর স্ত্রী করোনা আক্রান্ত। তাঁরা থাকছিলেন চুঁচুড়া শহরের নারকেল বাগান এলাকার একটি বাড়িতে। বৃহস্পতিবার সকালে অভিজিৎ জানতে পারেন যে, তাঁর মা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বিকেলে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় বৃদ্ধার। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন হয়। পরিস্থিতি দেখে অভিজিৎ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে ফোন করে সাহায্য চান।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ফুলপুকুরে পৌঁছে যান ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা। বাড়িতে গিয়ে দেখেন, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। জানালা দিয়ে বৃদ্ধাকে ডাকতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি বিছানায় বসে মেঝে থেকে ওষুধ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা তাঁকে বিছানাতেই বসে থাকতে বলেন। ওষুধ নিতে গিয়ে মেঝেতেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। এর পর দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুল্যান্সে করে ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
বৃদ্ধার ছেলে অভিজিৎ বললেন, "মায়ের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে জানতে পেরে 'চুঁচুড়া আরোগ্য' নামে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে খবর দিয়েছিলাম। তারা চেষ্টা করেছে। সময় মতো একটু অক্সিজেন পেলে হয়ত মা বেঁচে যেতেন।" বৃদ্ধাকে বাঁচাতে না পেরে আফসোস রয়েছে 'চুঁচুড়া আরোগ্য'-র সদস্যদেরও। কোভিডে বহু অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। কোভিড আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি করা থেকে মৃতদেহ সৎকার, সবই করছেন তাঁরা। সংস্থার সদস্য ইন্দ্রজিৎ দত্ত বললেন, "বৃদ্ধাকে চোখের সামনে অক্সিজেনের জন্য কাতরাতে দেখা খুব বেদনার। একটু আগে খবর পেলে হয়ত বাঁচানো যেত। আমাদের আবেদন, এই সময়ে কোনও বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে বাড়িতে একা রেখে যাবেন না। সঙ্গে এক জন লোক অন্তত থাকুন। যিনি প্রয়োজনে সাহায্যটুকু করতে পারবেন।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy