Advertisement
E-Paper

মাংস কম পেয়ে বরপক্ষের ‘তাণ্ডব’, বিয়ে ভাঙল কনে

বাড়িতে ছিল উৎসবের পরিবেশ। রীতি মেনে কাজী এসে রেজিস্ট্রেশন করান। এর পরেই বরযাত্রীরা খেতে বসে মাংস কম দেওয়া হচ্ছে দাবি করে।

কাজল মির্জা

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২১ ০৬:৩৪
—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে শুরু হয়েছিল খাওয়াদাওয়া। হঠাৎই বরপক্ষ দাবি করে, পাতে মাংস কম পড়েছে। সে নিয়ে বচসা থেকে বেধে যায় হাতাহাতি। প্যান্ডেল তছনছ। মাথা ঠান্ডা হওয়ার পরে দুই পরিবারই মিটমাটের রাস্তায় যেতে চাইছিলেন। কিন্তু বেঁকে বসলেন কনে। সামান্য বিষয় নিয়ে এমন ধুন্ধুমার ঘটানো পরিবারের ছেলের সঙ্গে সংসার করবেন না জানিয়ে বিয়ে ভাঙলেন পূর্ব বর্ধমানের গলসির ওই তরুণী।

শনিবার গলসির বাহিরঘন্না গ্রামে কনের এমন সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন পরিজন থেকে পড়শিরা। তাঁর বাবা, পেশায় দিনমজুর সাজাহান মণ্ডল (নাম পরিবর্তিত) বলেন, ‘‘গোড়ায় খানিক দ্বিধায় ছিলাম। কিন্তু পরে মেয়ের সিদ্ধান্তই ঠিক বলে মনে হয়েছে। ওই শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ও ভাল থাকত না।’’ বছর একুশের ওই তরুণী প্রিয়ার (নাম পরিবর্তিত) সাফ কথা, ‘‘যারা সামান্য মাংসের জন্য বিয়েবাড়িতে ভাঙচুর করতে পারে, তাদের বাড়ির বৌ হতে পারব না।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার জনা সত্তর বরযাত্রী-সহ বিয়ে করতে আসেন গলসির বামুনাড়া গ্রামের বাসিন্দা সায়ন মণ্ডল। প্রিয়ার পরিবার জানায়, দুপুরে মসজিদে বিয়ে হয়। বাড়িতে ছিল উৎসবের পরিবেশ। রীতি মেনে কাজী এসে রেজিস্ট্রেশন করান। এর পরেই বরযাত্রীরা খেতে বসে মাংস কম দেওয়া হচ্ছে দাবি করে। দু’পক্ষের মনোমালিন্য হয়। অভিযোগ, এর পরেই কয়েকজন বরযাত্রী ভাঙচুর করে।

খবর পেয়ে পুলিশ এসে বর, তাঁর বাবা ও কয়েকজন আত্মীয়কে আটক করে। বাকিরা তার আগেই গ্রাম থেকে চলে যান বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান। পুলিশ জানায়, রাত পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ না পেয়ে আটক ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পরিবার সূত্রে জানা যায়, শনিবার দু’পক্ষ বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেন। মিটমাটও হয়ে গিয়েছিল প্রায়। কিন্তু তখনই বিয়ে ভাঙার কথা ঘোষণা করেন প্রিয়া। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা মেয়েটি জেদ ধরায় কাজীকে ডেকে ‘তালাকপত্র’ তৈরি করা হয়। সাজাহান বলেন, ‘‘মেয়ের কথা শুনেই তালাকের ব্যবস্থা করেছি।’’ প্রিয়ার বক্তব্য, ‘‘ওই বাড়িতে গিয়ে শান্তি পেতাম না।’’

প্রিয়ার এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন গ্রামের অনেকেই। পড়শি শেখ গিয়াসউদ্দিনের কথায়, ‘‘একদম ঠিক কাজ করেছে।’’ গলসি ২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শেখ সাবিরউদ্দিন আহমেদ পরিবারটির সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েটি উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যে কোনও প্রয়োজনে পাশে থাকব।’’

ফোন বন্ধ থাকায় রবিবার সায়নের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। নামপ্রকাশ না করার শর্তে বরপক্ষের কয়েকজনের দাবি, পাতে মাংস না পড়ার কথা বলতেই বচসা থেকে গোলমাল বাধে। বিয়ে ভাঙা নিয়ে কিছু বলতে চাননি তাঁরা। সাজাহান অবশ্য বলেন, ‘‘সামর্থ্য অনুযায়ী বন্দোবস্ত করেছিলাম। খাবার কম দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।’’

Violence marriage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy