Advertisement
E-Paper

ভোটার তালিকা পরিমার্জনের প্রাথমিক কাজ কারা করবেন? সারা দেশে বিএলও নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয় বাংলাকে দেখেই

কমিশন বলছে, কোনও একটি বুথের তৃতীয় শ্রেণি বা গ্রুপ-সি পদমর্যাদার কর্মী থেকে শুরু করে যে কোনও ঊর্ধ্বতন সরকারি আধিকারিক বিএলও হতে পারেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ২১:১২

ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

বাংলায় শুরু হতে চলেছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের কাজ। তার আগে বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) নিয়ে সমস্যায় নির্বাচন কমিশন। প্রায় দিনই কমিশনের দফতরে বিএলও নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ছে। বিরোধীরা তো বটেই বিএলও-দের নিশানা করছে শাসকদল তৃণমূলও। অথচ এক সময় এই বাংলা থেকে শিক্ষা নিয়ে সারা দেশে বিএলও নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কমিশন। ২০০৬ সালে ছিল পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। সেই সময় তালিকায় ভুয়ো ভোটার নিয়ে সরব হন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে কমিশনও বুঝতে পারে, ভোটার তালিকার যথার্থ এবং নিচুস্তরে তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি সঠিক ভাবে হচ্ছে না। বুথের তথ্য নখদর্পণে থাকবে এমন কর্মী নিয়োগ করতে হবে। তারা সিদ্ধান্ত নেয়, ভোটার তালিকা নির্ভুল করতে প্রতি বুথে একজন করে বুথ লেভেল অফিসার নিয়োগ করা হবে। যিনি ভোটারদের তথ্য সংগ্রহের কাজ করবেন।

২০০৬ সালের আগে বুথস্তরে ভোটার তালিকা সংশোধন বা পরিমার্জনের জন্য নির্দিষ্ট কোনও অফিসার ছিলেন না। নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিক (ইআরও) সাময়িক ভাবে এক জনকে নিয়োগ করতেন। যিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে নির্দিষ্ট ভোটারদের খোঁজ নিয়ে আসতেন। তালিকার বেশির ভাগ সংশোধনের কাজ নিজের মতো করে করতেন ইআরও এবং এইআরও-রা। কমিশন উপলব্ধি করে ওই পদ্ধতি মৃত বা স্থানান্তরিত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া কিংবা নতুন নাম যুক্ত করার ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্য নয়। স্থানীয় পর্যায়ে এমন কাউকে দায়িত্ব দিতে হবে, যিনি নিজের এলাকা হাতের তালুর মতো চিনবেন। যাঁর কাজ হবে ভোটার তালিকার সব তথ্য সঠিক ভাবে রাখা। এবং তার জন্য দায়বদ্ধও থাকবেন। সেই মতো কমিশন ওই কাজে বুথপ্রতি এক জন সরকারি কর্মচারী নিয়োগ করে। তাঁরাই বিএলও নামে পরিচিত। তাঁদের মূল কাজ ভোটার তালিকা, পরিচয়পত্র সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই করা। এবং সেই তথ্য ইআরও-কে দেওয়া।

কোনও একটি বুথের তৃতীয় শ্রেণি বা গ্রুপ-সি পদমর্যাদার কর্মী থেকে শুরু করে যে কোনও ঊর্ধ্বতন সরকারি আধিকারিক বিএলও হতে পারেন। কমিশন জানিয়েছে, সাধারণত শিক্ষক, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, আমিন, পঞ্চায়েত সচিব, বিদ্যুৎ বিল সংগ্রাহক, ডাকপিয়ন, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী, মিড-ডে মিলের কর্মী, পুরকর আদায়কারীদের বিএলও হিসাবে নিয়োগ করা হয়। যদি কোনও বুথে এই ধরনের কর্মী পাওয়া না যায় অথবা, বিশেষ প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী বা গ্রুপ-বি আধিকারিকদের বিএলও হিসাবে নেওয়া যেতে পারে। ভোটার তালিকা পরিমার্জনের সময় বিএলও-রা নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করেন। এই সময় কমিশনের অনুমতি ছাড়া রাজ্য তাঁদের বদলি বা ছুটিতে পাঠাতে পারে না।

এসআইআর শুরুর মুখে বিএলও নিয়ে মাথাব্যথা কমিশনের। কোথাও বিএলও পদ ফাঁকা রয়েছে, কোথাও আবার কাজে অনীহা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। এর উপর রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগে জেরবার কমিশন।ওই সব সমস্যা দ্রুত মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে তারা। শনিবার ভোটার তালিকা যাচাইয়ে তৃণমূলের দলীয় পদাধিকারীকে নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, ডায়মন্ড হারবার বিধানসভা কেন্দ্রের ৮৭ নম্বর পার্টের বিএলও আলাউদ্দিন মোল্লা তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি। আলাউদ্দিনের স্ত্রী লায়লা বিবি একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। শুভেন্দুর ওই অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরের এক আধিকারিক জানান, ওই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে বিএলও রাজনৈতিক ভাবে নিরপেক্ষ থাকবেন এটাই নিয়ম। অন্য দিকে, তৃণমূল নেতাদের একাংশ অভিযোগ করছেন, কমিশনের তরফে বিএলওদের চাপ দিয়ে বেছে বেছে নাম বাদ দেওয়ার কৌশল নেওয়া হয়েছে। কমিশনের বক্তব্য, বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা চলছে। বিএলওদের কাজ কারও নাম বাদ দেওয়া নয়।

Election Commission ECI
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy