Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta High Court

Calcutta High Court: বাধা কান্না, শিশুর কথা শোনাই হল  না কোর্টের

শিশুটির পালিকা মায়ের কৌঁসুলি শ্রীজীব চক্রবর্তী জানান, ওই শিশুর মা ও অন্য আত্মীয়দের এজলাস থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ।

কলকাতা হাই কোর্ট।

কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:১২
Share: Save:

দৈত্যাকার বাড়ি, কালো কোট পরা গম্ভীর গম্ভীর মুখ দেখে যে-কোনও শিশুরই ঘাবড়ে যাওয়ার কথা। তার উপরে বিরাট ঘরের মধ্যে যদি মা-ও কাছছাড়া হয়ে যায়, কান্না ছাড়া শিশুর আর কী-ই বা করার থাকে! সোমবার কলকাতা হাই কোর্টে সাধারণ শিশু-মনস্তত্ত্বের সেই স্বাভাবিক প্রকাশই দেখা গেল।

একটি মামলায় চার বছরের এক শিশুর সঙ্গে একান্তে কথা বলতে চেয়েছিলেন বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি অজয়কুমার মুখোপাধ্যায়। কিন্তু শিশুটি কান্না জুড়ে দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত কথা বলতে পারেননি তাঁরা।

শিশুটির পালিকা মায়ের কৌঁসুলি শ্রীজীব চক্রবর্তী জানান, ওই শিশুর মা ও অন্য আত্মীয়দের এজলাস থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। শিশুটির সঙ্গে একান্তে কথা বলতে চেয়েছিলেন দুই বিচারপতি। কিন্তু মায়ের হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার পরেই কান্না শুরু করে শিশুটি। বিচারপতিরা কোনও ভাবেই তার সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। পরে তাঁরা নির্দেশ দেন, আজ, মঙ্গলবার শিশুটিকে হাওড়ার শিশু কল্যাণ সমিতির অফিসে নিয়ে যেতে হবে। সেখানে ওই শিশুর সঙ্গে কথা বলবেন কমিটির সদস্যেরা। বৃহস্পতিবার শিশু কল্যাণ সমিতির রিপোর্টের ভিত্তিতে ফের এই মামলার শুনানি হবে। শিশুটির জন্মদাতা বাবাকেও সমিতির সামনে হাজির হতে বলা হয়েছে।

মেয়ে কার? সেটাই এই মামলার মূল প্রশ্ন। ২০১৭ সালে শিশুটির জন্ম। অভিযোগ, তার পর থেকেই শিশুটির বাবা ও মায়ের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। ২০১৮ সালে তার মায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে দিদিমার কাছেই থাকত সে। তাকে লালনপালনের দায়িত্ব নেন দিদিমার এক পড়শি দম্পতি। সম্প্রতি শিশুটির দিদিমাও মারা গিয়েছেন। তার পরেই তার বাবা এসে মেয়ের অধিকার দাবি করেন।

কিন্তু মেয়েকে ছাড়তে নারাজ পালিকা মা। সম্প্রতি তিনিও স্বামীকে হারিয়েছেন। মেয়ের অধিকার নিয়েই হাই কোর্টে মামলা লড়ছেন জন্মদাতা বাবা এবং পালিকা মা। আদালত জানিয়েছে, শিশুটি কার কাছে থাকবে, তা স্থির করবে শিশু কল্যাণ সমিতি। শিশুটির লালনপালন যাতে ঠিকমতো হয় এবং তার ভবিষ্যৎ যাতে সব দিক থেকে সুরক্ষিত থাকে, সেটিই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ।

শিশুটির মনে কী চলছে, সেটিই জানতে বলা হয়েছে শিশু কল্যাণ সমিতিকে। অভিযোগ, এর আগে সমিতিকে এবং হাওড়ার শিশু কল্যাণ আধিকারিককে এ ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হলেও তাঁরা সেই কাজ করেননি। ওই আধিকারিকের ভূমিকা নিয়ে এ দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হাই কোর্ট। এ দিন হাই কোর্ট যে-নির্দেশ দিয়েছে, তা যাতে কার্যকর হয়, সেই ব্যাপারে সরকারি কৌঁসুলিকে (জিপি) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছে আদালত। পরবর্তী শুনানির দিন জিপি এবং শিশু কল্যাণ আধিকারিককেও আদালতে হাজির থাকতে হবে। তার আগে শিশুটির সঙ্গে কথা বলে কার দায়িত্বে তাকে রাখা যায়, সেই সুপারিশ মুখবন্ধ খামে আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE