Advertisement
E-Paper

বিধিই বাধা, দেরি মমতার উড়ানে

এক বার নয়, দু’-দু’বার। গত ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর পটনা থেকে আসার সময়ে কলকাতার মাথার উপরে এসেও নামতে বিলম্ব হয়।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৬

পৌঁছে গিয়েছেন কলকাতায়। অথচ মহানগরীর মাটি ছোঁয়া যাচ্ছে না। দেরি হচ্ছে প্রিয় শহরের স্পর্শ পেতে। ক্ষোভ হওয়ারই কথা। ভীষণ ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

এক বার নয়, দু’-দু’বার। গত ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর পটনা থেকে আসার সময়ে কলকাতার মাথার উপরে এসেও নামতে বিলম্ব হয়। গত শুক্রবারেও বাগডোগরা থেকে কলকাতার আকাশে পৌঁছে সেই একই ঘটনা। শুক্রবারের ঘটনা নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে গিয়ে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে এসেছেন বিধাননগর কমিশনারেটের দুই পুলিশকর্তা। তবে রবিবার রাত পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

এটিসি অফিসারদের মতে, যাত্রী হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী যে-উড়ানে থাকবেন, সেই বিমানকে তাঁরা অগ্রাধিকার দিয়ে আগে নামিয়ে আনতে চান। কিন্তু বাদ সেধেছে কেন্দ্রের একটি নিয়ম।

আরও পড়ুন: ডিএনএ পরীক্ষা নিয়ে জবাব তলব

সেই নিয়ম বলছে, রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ছাড়া দেশের আর কাউকেই আকাশে ভিআইপি-মর্যাদা দিতে রাজি নয় বিমান মন্ত্রক। অন্য দেশের প্রধানেরাও ভারতের আকাশে ওই ভিআইপি মর্যাদা পেয়ে থাকেন।

কী সুবিধা পায় ভিআইপি বিমান?

এটিসি সূত্রের খবর, নিয়ম অনুযায়ী সারা বিশ্বের আকাশে দু’টি বিমানের মধ্যে উপর-নীচে এক হাজার ফুট ব্যবধান রাখা হয়। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে আকাশে একই রুটে, একই উচ্চতা, একই অভিমুখে যাওয়ার সময়ে একটি বিমানের সামনে ও পিছনে কতটা দূরত্বে অন্য বিমান থাকবে, তার মাপ এক-একটা দেশে এক-এক রকম। ভারতে ১০ নটিক্যাল মাইল বা ১৮ কিলোমিটার ব্যবধানে দু’টি বিমান রাখা হয়। ভিআইপি বিমানের ক্ষেত্রে অথবা কোনও যাত্রী-বিমানে যদি ভিআইপি থাকেন, তা হলে সেই বিমানের সঙ্গে উপর-নীচে ও সামনে-পিছনে অন্য বিমানের ব্যবধান ঠিক দ্বিগুণ করে দেওয়া হয়।

দিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রীর বিমান কলকাতায় আসার সময়ে সেই বিমানের সঙ্গে অন্য যে-কোনও বিমানের উপর-নীচে ন্যূনতম ব্যবধান যে-হেতু বেড়ে দু’হাজার ফুট এবং সামনে-পিছনে ব্যবধান ৩৬ কিলোমিটার হয়ে যায়, তখন অনেক সময়ে ওই একই রুটের অন্য যাত্রিবাহী বিমান অন্য রুটে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। ওই সময়টুকুর জন্য খানিকটা দেরিতেই যাতায়াত করতে হয় যাত্রিবাহী বিমানগুলিকে।

উদাহরণ দিয়ে এক অফিসার জানান, ঢাকা থেকে যদি সে-দেশের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিমান ভারতের আকাশ পেরিয়ে পশ্চিমে উড়ে যায়, তা হলে সেই বিমান যত ক্ষণ ভারতের আকাশে থাকবে, তত ক্ষণ নিয়ম মেনে তার সঙ্গেও অন্য বিমানের দূরত্ব বাড়িয়ে দেওয়া হবে। তবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যে ওই বিমানে রয়েছে, সেটি ভারতের বিমান মন্ত্রক থেকে জানাতে হবে কলকাতার এটিসি-কে। বাংলাদেশের বিমানের পাইলট যদি সরাসরি এটিসি-কে জানান যে প্রধানমন্ত্রী বিমানে রয়েছেন, সে-ক্ষেত্রে সেই বিমানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে না।

প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে সেই সুবিধা দিতে সমস্যা কোথায়?

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে সেই সুবিধা দিলে অন্যান্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও সেই অগ্রাধিকার চাইতে পারেন। এ বার সব মুখ্যমন্ত্রীকে যদি ওই অগ্রাধিকার দিতে হয়, তা হলে প্রায় প্রতিদিনই বিমানের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে যাবে এবং যাত্রিবাহী বিমানগুলি সমস্যায় পড়বে। আর আলাদা করে কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে সেই সুবিধা দিতে গেলে তাঁর নাম তুলতে হবে কেন্দ্রের ওই ভিআইপি-তালিকায়।

Mamata Banerjee Aircraft Delay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy