Advertisement
E-Paper

রাজ্যে অনেক স্কুলই চালাচ্ছে অবৈধ সমিতি

রাজ্যের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাধিকার বিপন্ন বলে হইচই চলছে শিক্ষাজগতের একাংশে। আর রাজ্যের বহু স্কুলে গণতন্ত্র বিপন্ন বলে অভিযোগ তুলল শাসক দলেরই শিক্ষক সংগঠন ‘তৃণমূল শিক্ষা সেল’।

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৫৯

রাজ্যের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাধিকার বিপন্ন বলে হইচই চলছে শিক্ষাজগতের একাংশে। আর রাজ্যের বহু স্কুলে গণতন্ত্র বিপন্ন বলে অভিযোগ তুলল শাসক দলেরই শিক্ষক সংগঠন ‘তৃণমূল শিক্ষা সেল’।

ওই শিক্ষক সংগঠনের অভিযোগ, বৈধ পরিচালন সমিতি ছাড়াই চলছে বহু মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল। আর্থিক লেনদেনও হচ্ছে। এ বিষয়ে কয়েক মাস আগে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তাঁরা। কিন্তু পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। শাসক-সমর্থক সংগঠনের এই অভিযোগের পাশাপাশিই স্কুলে গণতন্ত্র রক্ষার দাবিতে আন্দোলন শুরু করতে চলেছে বাম-সমর্থক সংগঠন নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতি।

শিক্ষা সেলের অভিযোগ, সরকারি স্কুল ছাড়া রাজ্যের প্রায় ৪০ শতাংশ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে কোনও পরিচালন সমিতিই নেই। বাকি ৬০ শতাংশ স্কুলে পরিচালন সমিতি থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা অবৈধ। কী রকম?

স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ২০১২ সালে নাগাদ রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে শেষ বারের মতো পরিচালন সমিতির নির্বাচন হয়। তার আগে, বাম জমানায় শেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০০৯-’১০ সালে। ২০১১-য় রাজ্যে পালাবদলের পরে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিকে সরকার-পোষিত স্কুলে পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু করে তৃণমূল সরকার। প্রথম দফার সেই প্রক্রিয়া শেষ হয় ২০১৩ সালে। কিন্তু বাকি থেকে গিয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ স্কুল। স্কুল সমিতির মেয়াদ হয় তিন বছর। অর্থাৎ যে-সব স্কুল সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবেই থেকে গিয়েছে, সেগুলিতে পরিচালন সমিতির মেয়াদ তত দিনে শেষ। ২০০৯ সালের শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী পরিচালন সমিতির মেয়াদ শেষের পরে প্রশাসক নিয়োগ করে ছ’মাসের মধ্যে নির্বাচন করার কথা। কিন্তু প্রশাসক নিয়োগ তো দূরের কথা, ২০০৯-১০ সালের পুরনো পরিচালন সমিতির সাহায্যেই বহু স্কুল চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। সরকারি ভাঁড়ার থেকে মোটা টাকা চলে যাচ্ছে স্কুলের হাতে। বিনা বাধায় তা খরচও হচ্ছে।

স্কুলশিক্ষা দফতর গত মার্চে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, যে-সব স্কুলকে সরকার-পোষিত প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন করা গেল না, পরের ধাপে তাদের সেই স্তরে তুলে আনার চেষ্টা চালানো হবে। শিক্ষা দফতরের খবর, তার পরে সেই সব স্কুলকে দ্রুত পরিচালন সমিতির নির্বাচন করে ফেলতে বলা হয়। কিন্তু তার পরেও সেই কাজ হয়নি। অথচ গতানুগতিক পথেই সরকারি অনুদানের টাকা খরচ করা হচ্ছে। এটা দুর্নীতির সমতুল বলে শিক্ষক সংগঠনের অভিযোগ। এই নিয়ে ক্ষোভ জমেছে শিক্ষা শিবিরে।

অগত্যা পথে নেমেছে তৃণমূল শিক্ষা সেল। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জয়দেব গিরি বলেন, ‘‘পরিচালন সমিতি ছাড়া কোনও স্কুলে আর্থিক লেনদেন হলে তা এক প্রকার দুর্নীতিই। এটা বন্ধ হওয়া দরকার।’’ তাঁর অভিযোগ, সরকার-পোষিত স্কুলগুলিতেও ২০১৩ সালের নিয়ম মেনে পরিচালন সমিতি গড়া হয়নি। স্নাতক নন, এমন বহু অভিভাবক-প্রতিনিধি রয়ে গিয়েছেন ওই সব সমিতিতে। সংখ্যার থেকে বেশি শিক্ষক-প্রতিনিধি রাখাও নিয়মবিরুদ্ধ কাজ। পরিচালন সমিতির গোটা প্রক্রিয়াই চলছে নিয়ম ভেঙে। এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতিও। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অবৈধ পরিচালন সমিতির অর্থই হচ্ছে শিক্ষা ক্ষেত্রে গণতন্ত্রকে হত্যা করা। এর বিরুদ্ধে ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকাশ ভবন অভিযান করা হবে।’’

কী বলছে সরকার?

স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, যে-সব স্কুল এখনও সরকার-পোষিত প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠার সুযোগ পায়নি, তাদের দ্রুত সেই স্তরে উন্নীত করার কাজ শুরু হচ্ছে। অনেক স্কুলে আর্থিক গরমিলের অভিযোগ রয়েছে। সেগুলিও খতিয়ে দেখা হবে।

School Partha Chatterjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy