E-Paper

নিখোঁজ নাবালকের কাকাকে ফোন ধৃতের, দাবি ইসলামপুরে

নাবালকের কাকার দাবি, এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ তাঁর মোবাইলে এই মামলায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত এবং পুলিশের হাতে ধরা পড়া মহম্মদ ফিরাজের ফোন আসে। বলা হয়, মারধরের পরে তাঁর ভাইপোকে রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৫ ০৬:৩১

—প্রতীকী চিত্র।

মোবাইলে ফোন করে পুলিশের হাতে ধরা পড়া এক জন বাড়ির লোককে প্রস্তাব দিয়েছে ‘মিটমাট’ করে নিতে, এমন দাবিকে কেন্দ্র করে নতুন মোড় ইসলামপুরের নাবালক নিখোঁজ কাণ্ডে। প্রশ্নে পুলিশের ভূমিকা। গত ৩০ মে কলকাতা লাগোয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার রবীন্দ্রনগরের কারখানায় মোবাইল চোর সন্দেহে অত্যাচারিত হওয়ার পরে, এখনও খোঁজ নেই বছর চোদ্দোর ওই নাবালকের। ফলে,ইদের দিন, শনিবারেও দুশ্চিন্তায় কেটেছে পরিবারের। যদিও ডায়মন্ড হারবার পুলিশ-জেলার এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘অভিযুক্ত এবং আক্রান্ত— দু’পক্ষই ইসলামপুরের বাসিন্দা। কার পরিবার কী বলছে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। হেফাজতে থাকা কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ এলে, আমরা অবশ্যই খতিয়ে দেখব।’’

নাবালকের কাকার দাবি, এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ তাঁর মোবাইলে এই মামলায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত এবং পুলিশের হাতে ধরা পড়া মহম্মদ ফিরাজের ফোন আসে। বলা হয়, মারধরের পরে তাঁর ভাইপোকে রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘ও বলল, ‘বুধবার একটু মারধর করেছিলাম, তার পরে ছেড়ে দিয়েছি। ছেলেটাকে মারিনি। কিছু টাকা নিয়ে মিটমাট করে নাও’। ও পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। ওর মোবাইল পুলিশ নিল না কেন বুঝতে পারছি না!’’ এ প্রসঙ্গে ইসলামপুর পুলিশ-জেলার সুপার জবি টমাস বলেন, ‘‘নাবালক এই এলাকার হলেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে রবীন্দ্রনগর থানায়। যা বলার, সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ বলবে। আমি মন্তব্য করতে পারি না।’’

পড়শি যুবকের সঙ্গে কলকাতায় কাজ করতে গিয়েছিল ইসলামপুরের ওই নাবালক। সঙ্গে ছিল তার নাবালক দাদাও। মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে নাবালককে কারখানায় উল্টো করে ঝুলিয়ে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে অত্যাচারের ভিডিও সমাজমাধ্যমে ছড়ায়। সে মামলায় ফিরাজ-সহ পাঁচ জনকে ধরেছে পুলিশ। এ দিন ওই নাবালকের আর একটি ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে। সেখানে একটি খুঁটিতে হাত বাধা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে ওই নাবালককে। তার কাছে বার বার জানতে চাওয়া হচ্ছিল, ‘কেমন করে নিয়ে গিয়েছিস মোবাইল? কাকে দিয়েছিস? কত দিয়ে মোবাইল বিক্রি হয়েছে’? ছেলেটিকে বলতে শোনা যায়, ‘ওরা আসছিল ওই দিক থেকে’।

মোবাইল-বিতর্ক প্রকাশ্যে আসার আগে, ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার কর্তারা জানিয়েছিলেন, সন্ধান পেতে ওই কিশোরের ছবি রাজ্য জুড়ে সমস্ত পুলিশ-জেলা ও সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রবীন্দ্রনগর থানা সূত্রের দাবি, কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের কর্মীদের সমাজমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে ওই ছবি পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের মর্গে বেওয়ারিশ মৃতদেহ শনাক্তকরণে উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে। ওই নিখোঁজ কিশোরের ছবি-সহ পোস্টার ছাপানো হয়েছে। সে পোস্টার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন থানা এলাকায় ছড়িয়ে দিতে অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষ ছেলেটির ছবি দেখে যদি তাঁকে এলাকায় দেখতে পান, তা হলে পুলিশকে জানাতে পারেন। পোস্টারের নীচে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ-জেলার দুটি মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে।

কারখানার মালিক শাহেনশাহ আলম ও তার ভাই ফিরোজ (ওরফে ফিরাজ) এবং তাদের এক আত্মীয় আমিরুল মহম্মদকে মুম্বই থেকে আজ, রবিবার রবীন্দ্রনগর থানায় আনা হবে। তদন্তকারীদের দাবি, তিন অভিযুক্ত জেরায় তাদের জানিয়েছে, ঘটনার পরে ওই কিশোর পালিয়ে গিয়েছে।

ইসলামপুরের বাড়িতে নাবালকের মা বলেন, ‘‘ইদের দিনে বাড়ি ফিরবে ভেবেছিলাম। চাই, ছেলে ফিরে আসুক। জানি না, ওরা বাঁচিয়ে রেখেছে কি না! পুলিশের কাছে প্রার্থনা তারা ব্যাপারটা দেখুক।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

arrest Islampur Minor Boy

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy