E-Paper

ডেঙ্গি আক্রান্তের বিপদ আগাম বুঝতে পরীক্ষার কিট আবিষ্কার

এ বার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার পরে বিপদের মাত্রা বুঝতে একটি বিশেষ পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট কিটের আবিষ্কার হয়েছে। যা ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। মিলেছে পেটেন্টও।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:৪৬
An image of Dengue Kit

—প্রতীকী চিত্র।

ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগীর প্লেটলেট ক্রমশ কমতে শুরু করার পরে তা ধরা পড়ে পরীক্ষায়। কিন্তু, অনেকের ক্ষেত্রেই তত ক্ষণে শরীরের ভিতরে বড় বিপদ ঘটে যায়। অনেক চেষ্টা করেও হয়তো সেই রোগীকে বাঁচাতে পারেন না চিকিৎসকেরা। কিন্তু এই ঝুঁকির বিষয়টি যদি আগাম জানা যায়, তা হলে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। এ বার তাই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার পরে বিপদের মাত্রা বুঝতে একটি বিশেষ পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট কিটের আবিষ্কার হয়েছে। যা ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। মিলেছে পেটেন্টও।

তবে, এই কিট এখনও বাজারে আসেনি। যে গবেষক এবং চিকিৎসকেরা এই বিশেষ ‘বায়োমার্কার প্যানেল’ পরীক্ষার কিট আবিষ্কার করেছেন, তাঁদের আশা, দেশ তথা রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা এর গুরুত্ব বুঝে পদক্ষেপ করবেন। এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক-চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানাচ্ছেন, কেউ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত কি না, তা বোঝা যায় এনএস-১ কিংবা আইজিএম অ্যান্টিবডি পরীক্ষায়। কিন্তু, তার পরে রোগীর শরীরিক গতিপ্রকৃতি কোন দিকে যাবে, সেটা আগাম বোঝার কোনও উপায় নেই। শুধু কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে খেয়াল রাখতে হয়, রোগীর প্লেটলেট কমছে কি না। যদি কমে, তা হলে ব্যবস্থা নিতে হয়। কারও ক্ষেত্রে প্লেটলেট এত দ্রুত নেমে যায় যে, বড় বিপদ দেখা দেয়।

বায়োমার্কার প্যানেল পরীক্ষার প্রসঙ্গে অরুণাংশুর দাবি, ‘‘ডেঙ্গি পজ়িটিভ আসার পরে প্রতি ৪৮ ঘণ্টা অন্তর এই পরীক্ষা করলে খারাপ পরিস্থিতির পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব। প্লেটলেট কমবে কি না, অথবা অন্য কোনও সমস্যা তৈরি হবে কি না, সে সব আগেই বোঝা যাবে।’’

২০১৩ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ডেঙ্গির মারাত্মক বাড়বাড়ন্তের সময়কালে কয়েকশো রোগীর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে এই গবেষণা চালানো হয়েছিল। আইআইটি, মুম্বইয়ের কয়েক জন গবেষক এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ওই চিকিৎসক তাতে অংশ নেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, ডেঙ্গি মারাত্মক আকার ধারণ করলে শরীরে কোন খারাপ প্রোটিন বেড়ে যাচ্ছে এবং কোন প্রতিরোধী প্রোটিন কমে যাচ্ছে, সেটিই বোঝা যাবে বায়োমার্কার প্যানেল পরীক্ষার মাধ্যমে।

অরুণাংশু বলছেন, ‘‘শরীরে কোনও সংক্রমণ বাসা বাঁধলে লক্ষ লক্ষ প্রোটিন বেরোয়। তার কোনগুলি ডেঙ্গির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, তা জানতে পারা অনেকটা খড়ের গাদায় সুচ খোঁজার মতো। তাই এই বিশেষ ব্যবস্থাপনার পরীক্ষা প্রয়োজন।’’

গবেষকেরা জানাচ্ছেন, প্রথমে ডেঙ্গি আক্রান্তদের রক্ত নিয়ে বিশ্লেষণ করে দেখা হয়, ওই রোগের জন্য কোন প্রোটিন বাড়ছে এবং কোনটি কমছে। তাতে ৬-৭টি প্রোটিন পাওয়া যায়, যেগুলি রোগের ফলে বেড়ে গিয়েছে। আবার, একই রকম ভাবে কয়েক ধরনের প্রোটিন কমে যেতেও দেখা যায়। পরের বছর, অর্থাৎ ২০১৪ সালে একই ভাবে ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য কারণে জ্বরে আক্রান্তদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হয়। যাতে সেগুলির সঙ্গে ডেঙ্গির পার্থক্য স্পষ্ট হয়। গবেষকদের কথায়, ডেঙ্গির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত প্রোটিনগুলি নিয়েই এই প্যানেল তৈরি করা হয়েছে। যেটি সহজেই ডেঙ্গি রোগীর ভবিষ্যৎ নির্ণয় করতে পারবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Dengue Kit Dengue Dengue Fear Dengue Death Dengue fever

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy