Advertisement
E-Paper

‘জরুরি অবস্থার কথা মনে পড়ছে’

আমি গত ১৪ তারিখ ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলাম, মৃত সেনাকর্মীদের ‘শহিদ’ বলার বিরোধিতা করে। এটাও বলেছিলাম, খোদ ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকই যুদ্ধে নিহত সেনাদের ‘শহিদ’ বলার পক্ষপাতী নয়। প্রাসঙ্গিক লিঙ্কও দিয়েছিলাম। পোস্টটি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।

চিত্রদীপ সোম (আক্রান্ত শিক্ষক)

শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:৩৪
আক্রমণ: বনগাঁয় চিত্রদীপের বাড়ি। ইনসেটে, উন্মত্ত জনতার সামনে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে হচ্ছে তাঁকে। মোবাইলে তোলা হচ্ছে ছবি। নিজস্ব চিত্র

আক্রমণ: বনগাঁয় চিত্রদীপের বাড়ি। ইনসেটে, উন্মত্ত জনতার সামনে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে হচ্ছে তাঁকে। মোবাইলে তোলা হচ্ছে ছবি। নিজস্ব চিত্র

এই মুহূর্তে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। শুধু আমি নই, মুক্তমনা অনেক মানুষই। দেশজুড়ে যুদ্ধের স্বপক্ষে এক গণউন্মাদনা তৈরি করা হচ্ছে সুকৌশলে। মৃত সেনাদের পক্ষে সহানুভূতির হাওয়াকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারবিরোধী যে কোনও কথাবার্তা বা মতামতকেই ‘দেশদ্রোহিতা’ বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বাধীন কন্ঠস্বরের উপরে যে ভাবে আঘাত নেমে আসছে, বিভিন্ন দিকে যে ভাবে ভিন্নমত প্রকাশকারীদের উপরে আঘাত নেমে আসছে, তা আমাদের ইন্দিরা গাঁধীর জরুরি অবস্থার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।

আমি গত ১৪ তারিখ ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলাম, মৃত সেনাকর্মীদের ‘শহিদ’ বলার বিরোধিতা করে। এটাও বলেছিলাম, খোদ ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকই যুদ্ধে নিহত সেনাদের ‘শহিদ’ বলার পক্ষপাতী নয়। প্রাসঙ্গিক লিঙ্কও দিয়েছিলাম। পোস্টটি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। স্ক্রিনশট নিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও গ্রুপ শুরু করে হিংসাত্মক প্রচার। উস্কানি দেয় আমাকে আক্রমণের। এখানে একটা বিষয় লক্ষ্যণীয়, আমার বক্তব্যটির শেষ অংশটি বাদ দিয়ে প্রথম অংশটি এমন ভাবে স্ক্রিনশট তুলে প্রচার করা হয়, যাতে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে আমি দেশবিরোধী প্রচার করছি। বামপন্থী হিসাবে পরিচিত অনেক মানুষও এই গণউন্মাদনায় গা ভাসান। আমার বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় ইনবক্সে ও ফোনে গালাগাল ও হুমকি। আমার বনগাঁর বাড়িতে চড়াও হয় বহু লোক। উন্মত্ত জনতার সামনে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হই ফেসবুক পোস্টের জন্য। আমাকে দিয়ে ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলানো হয়। মাটি ছুঁয়ে ক্ষমা চাওয়ানো হয়। এরপরেই সর্বশক্তি নিয়ে আসরে নামেন আমার বন্ধুরা। দ্রুত সমস্ত ঘটনা জানানো হয় উপরমহলে। ফেসবুক ও হোয়াটস অ্যাপে একাধিক গ্রুপ তৈরি হয় আমার স্বপক্ষে দাঁড়িয়ে। সংবাদমাধ্যমকেও জানান হয় সব কিছু। জানানো হয় বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনকেও। বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় আমার সঙ্গে। সক্রিয় ভাবে পাশে দাঁড়ায় এপিডিআর, সেভ ডেমোক্রেসি ও আক্রান্ত আমরা। পাশে দাঁড়ান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, সিপিএম ও তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

Crime Violence Pulwama Attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy