Advertisement
E-Paper

জেলমুক্তির এক সপ্তাহ কাটল, এখনও গৃহবন্দি পার্থ! ‘কথা দিয়ে’ও যাননি বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে জনতার দরবারে

গত কয়েক দিনে নিজেকে একেবারে গুটিয়ে নিয়েছেন পার্থ। খুব ঘনিষ্ঠ ছাড়া কারও সঙ্গে দেখাও করছেন না। প্রয়োজন হলে, পরিবারের কারও ফোন থেকে কথা বলছেন অন্যদের সঙ্গে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৫ ১২:৩২
Partha Chatterjee

পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে জেলমুক্তির। নাকতলার বাসভবন বিজয়কেতনেই রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রথম দু’দিন পরিচিত এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করলেও, গত বৃহস্পতিবার থেকে নিজেকে পুরোপুরি গৃহবন্দি করেছেন বেহালা পশ্চিমের পাঁচ বারের বিধায়ক। বাড়ি ফেরার দিনেই পার্থ জানিয়েছিলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমে পা রাখবেন তিনি। সঙ্গে জানান, বিচার চাইতে দ্বারস্থ হবেন ওই কেন্দ্রের মানুষের। জেল থেকে ফিরেই পার্থের এই সক্রিয়তা প্রশ্ন তুলেছিল, তবে কি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ফের বেহালা পশ্চিম থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুতলি পাকানো শুরু করে দিলেন তিনি? এমনও চর্চা শুরু হয়, নিলম্বিত পার্থকে তৃণমূল টিকিট না দিলে কি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী নির্দল হয়েও লড়তে পারেন? এমন নানা চর্চার মাঝে বেহালা পশ্চিমে ‘দুয়ারে বিধায়ক’ নামে একটি লিফলেট ছড়িয়ে দিয়েছিলেন পার্থের অনু্গামীরা।

তবে গত কয়েক দিনে নিজেকে একেবারে গুটিয়ে নিয়েছেন পার্থ। খুব ঘনিষ্ঠ ছাড়া কারও সঙ্গে দেখাও করছেন না। প্রয়োজন হলে, পরিবারের কারও ফোন থেকে কথা বলছেন অন্যদের সঙ্গে। অনুগামীদের বাড়িতে অযথা ভিড় করতেও নিষেধ করে দিয়েছেন পার্থের আত্মীয়- পরিজনেরা। বর্তমানে শুনশান নাকতলার বিজয়কেতন। বেহালায় থাকা পার্থ অনুগামীরা আশা করেছিলেন, জেলমুক্তির কয়েক দিনের মধ্যেই নিজের ম্যান্টনের কার্যালয়ে এসে আবারও বিধায়ক হিসাবে কাজকর্ম শুরু করবেন পার্থ। সেই আশায় বেহালা ম্যান্টনের অফিসে অল্পবিস্তর ভিড় জমতে শুরু করেছিল। কিন্তু গত এক সপ্তাহের ঘটনাক্রমে সেই ভিড় পাতলা হয়ে গিয়েছে। বেহালা পশ্চিম বিধানসভার তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বেহালা পশ্চিমে থাকা পার্থ ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল কাউন্সিলর প্রথমে অনুগামীদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, শীঘ্রই বিধায়ক হিসাবে আবারও বেহালা পশ্চিমের হাল ধরবেন পার্থ। কিন্তু তিনিও বর্তমানে ওই অনুগামীদের বিধায়ক কার্যালয়ে ভিড় না জমানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

তবে বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দা তথা দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, ‘‘বেহালা পশ্চিমের মানুষ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ভরিয়ে দিয়েছেন। তাঁর পরিচিতি থেকে শুরু করে জীবনের সব প্রাপ্তি বেহালা পশ্চিমের জন্যই। দল থেকে সাসপেন্ড হলেও, তাকে তো আর বেহালা পশ্চিমের মানুষ সাসপেন্ড করেননি। তাই পার্থদার উচিত ছিল জেলমুক্তির পর শুধুমাত্র লিফলেট বিলি না করে, নিজে এসে বেহালা পশ্চিমের মানুষের কাছে নিজের অনুপস্থিতির জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করা।’’ প্রসঙ্গত, তিন বছর তিন মাস বেহালা পশ্চিমের জনতা বিধায়কের থেকে পরিষেবা পায়নি। কারণ, নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হয়ে তিনি জেলে ছিলেন, যা বেহালা পশ্চিমের মানুষ একেবারে ভাল চোখে দেখেনি বলেই দাবি ওই নেতার।

জেলমুক্তির দিন পার্থ জানিয়েছিলেন, শুধু নিজের বিধানসভা কেন্দ্রেই নয়, বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে যোগদান করে এক দিন বক্তৃতা করতে চান তিনি। এ দিকে বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, সংবাদমাধ্যম থেকে তারা পার্থের মুক্তির খবর পেলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও বিধানসভাকে নিজের মুক্তির বিষয়ে কোনও খবর দেননি তিনি। তাই তৃণমূল থেকে নিলম্বিত হওয়ার পর নির্দল বিধায়ক হিসাবে তাঁর বসার জায়গা নির্ধারণ করা যায়নি। পাশাপাশি গ্রেফতারির কারণে গত তিন বছরের বেশি সময় বিধায়ক হিসাবে তাঁর বেতনও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেই বেতন চালু করতে পার্থকেই আবেদন করতে হবে বিধানসভার সচিবালয়ে। এখনও পর্যন্ত সেই আবেদন জমা পড়েনি বলে জানাচ্ছেন বিধানসভার এক শীর্ষ অধিকারিক।

Partha Chatterjee TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy