করোনাকালীন লকডাউন দেশে পরিযায়ী শ্রমিকদের ‘দৈন্যদশা’ দেখিয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছিল তাঁদের কর্মসংস্থান, আয়, সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। এ বার সেই পরিযায়ী শ্রমিকদের বর্তমান পরিস্থিতি জানতেই পরিযায়ীদের নিয়ে দেশব্যাপী এক সমীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ইতিমধ্যেই সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে এই বিষয়ে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক।
শ্রম দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী বছর জুলাই থেকে তার পরের বছর জুন পর্যন্ত চলবে এই সমীক্ষা। দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে তথ্য সংগ্রহ করা হবে, তবে আন্দামান ও নিকোবরে এই সমীক্ষা হবে না। পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা, কাজের সন্ধানে তাঁদের স্থানান্তরের কারণ, স্বল্প মেয়াদে না দীর্ঘ মেয়াদে তাঁরা বাইরে কাজ করেন— এ সবই থাকবে সমীক্ষার আওতায়। সমীক্ষকেরা শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করবেন।
পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে সর্বশেষ বিস্তৃত সমীক্ষাটি হয়েছিল ২০০৭–০৮ সালে, ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল অর্গানাইজ়েশন (এনএসও)-এর উদ্যোগে। পরে ২০২০–২১ সালে একটি নমুনা সমীক্ষায় পরিযায়ী শ্রমিকদের কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়। তবে মহামারির পরে শ্রমবাজার, বিশেষত অনির্ধারিত খাতে কর্মরত শ্রমিকদের কর্মধারা ও চলাচলের ধরন বদলেছে বলে মনে করছে কেন্দ্র। সেই কারণে বর্তমান বাস্তবতা জানতেই নতুন করে বৃহৎ পরিসরে তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন সমীক্ষায় যাঁরা পূর্বের স্থায়ী বাসস্থান ছেড়ে অন্য রাজ্যে গিয়ে কাজ করছেন, তাঁদের পুরোপুরি পরিযায়ী শ্রমিক ধরা হবে। আর বছরে ১৫ দিন থেকে ছয় মাস বাইরে কাজ করলে তাঁকে ধরা হবে স্বল্পমেয়াদি পরিযায়ী বলে ধরা হবে। গ্রাম ও শহর— উভয় অঞ্চল থেকেই তথ্য সংগ্রহ করা হবে। কোন এলাকায় পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি, কোন কোন রাজ্যে গিয়ে তাঁরা কাজে যোগ দেন— এ সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভবিষ্যতে সরকারি নীতি প্রণয়ন, উন্নয়ন পরিকল্পনা ও গবেষণার কাজে ব্যবহার করবে কেন্দ্রীয় সরকার।