‘নতুন তৃণমূল’ বলতে তাঁর ভাবনা কী, তা স্পষ্ট করলেন অভিষেক।
নতুন তৃণমূল। এই শব্দবন্ধ প্রথম বার শোনা গিয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। গত ১২ জুলাই উত্তরবঙ্গেই ধূপগুড়ির একটি সভায় সেই মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এর পরে তা নিয়ে অনেক জল্পনা তৈরি হয়। প্রশ্ন ওঠে, সেই তৃণমূলে পুরনোদের জায়গা হবে তো? রবিবার উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে ‘নতুন তৃণমূল’ বলতে তাঁর ভাবনা কী, তা স্পষ্ট করলেন অভিষেক। আর তাতে আশ্বস্ত করলেন দলের পুরনো নেতাদের। অভিষেক বলেন, ‘‘নতুন তৃণমূল মানে সেখান পুরনোরা থাকবেন না, এমন নয়। সকলেই থাকবেন।’’ আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো শক্তি সিপিএমকে হারাতে ২০১১ সালে যেমন সবাই মিলে লড়াই করেছিলাম, তেমন ভাবেই সকলের মিলিত শক্তিতে লড়াই চাই। পুরনো তৃণমূল মানে ব্রাত্য নয়।’’
প্রসঙ্গত, কলকাতায় ‘নতুন তৃণমূল’ হোর্ডিং পড়ার পরে জোর চর্চা শুরু হয় তৃণমূলের পাশাপাশি বিরোধী শিবিরে। পরে উত্তর কলকাতায় এমন হোর্ডিং দেখা যায়, যেখানে লেখা ছিল, ‘পুরাতনই ভিত্তি, নতুনই ভবিষ্যৎ’। এ নিয়েও বিরোধীরা ‘পিসি-ভাইপো’ লড়াইয়ের দাবি তোলে। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের কর্মী সম্মেলনে যাবতীয় জল্পনার অবসান ঘটান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এ সবই বিরোধীদের চক্রান্ত। তিনি বলেন, ‘‘কখনও শতাব্দীর সঙ্গে লাগিয়ে দিচ্ছে কেষ্টকে। আবার আমার সঙ্গে অভিষেকের লাগিয়ে দিচ্ছে।’’ অভিষেকের বৃহস্পতিবারের বক্তব্যেও সেই বক্তব্যের ছোঁয়া ছিল। অভিষেক বলেন, ‘‘এই দলে কোনও লবি নেই। একটাই লবি। মমতার লবি। যিনি বুক চিতিয়ে লড়াই করবেন, বলবেন মমতা জিন্দাবাদ, তাঁকে দল সম্মান দেবে।’’
রবিবার অভিষেক আলিপুরদুয়ারের দলীয় সভা থেকে বললেন, ‘‘১২ জুলাই নতুন তৃণমূলের কথা বলেছিলাম। অনেক জলঘোলা হয়েছে। আমি বলেছিলাম, এমন তৃণমূল গড়তে হবে, যেমন মানুষ চায়।’’ ব্লক সভাপতি ঘোষণার সময় যেমনটা দেখা গিয়েছে, তেমনটা পঞ্চায়েত নির্বাচনেও দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন অভিষেক।
তবে এটাই প্রথম বার নয়। তিনি ‘নতুন তৃণমূল’ বলতে কী বোঝাতে চাইছেন, তার ব্যাখ্যা আগেও দিয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। গত সপ্তাহে কলকাতায় ইডির দফতরে টানা জেরার পরে বেরিয়ে অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘নতুন তৃণমূল মানে কী? আমি ধূপগুড়ির সভা থেকে বলে আসছি, মানুষ যে ভাবে তৃণমূলকে দেখতে চান, সেই রূপে তাকে প্রতিষ্ঠিত করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। আগামী ছ’মাসের মধ্যে নতুন তৃণমূলকে মানুষ যাতে দেখতে পান, তার জন্য যা করার আমরা করব। ব্লক কমিটিতে যখন পরিবর্তন হচ্ছে, তা দেখে আপনারা নিজেরাও বুঝতে পারবেন।’’ একই সঙ্গে জানান তাঁর স্বপ্নের ‘নতুন তৃণমূল’ আত্মসমর্পণ করবে না, নির্ভীক ভাবে বাংলার মানুষের জন্য কাজ করবে, মাঠে-ঘাটে নেমে অতন্দ্র প্রহরীর মতো কাজ করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy