E-Paper

তিন দিনে রেকর্ড ম্যাপিং এ বার নজরে

কমিশন এনুমারেশনের সময়সীমা বাড়ানোর আগে কয়েক দিন ধরে টানা নথি আপলোডে সমস্যা হচ্ছিল বিএলও-দের। এই অবস্থায় কমিশন দেখছে, গত ২৩, ২৪ এবং ২৫ নভেম্বর ‘অস্বাভাবিক হারে’ তথ্য আপলোড হয়েছে।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:২৩

— ফাইল চিত্র।

তিন দিনে ২.৩০ কোটি ম‍্যাপিং। জাতীয় নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, গোটা এনুমারেশন পর্বে এত দিন যত কাজ হয়েছে, এই তিন দিনেই তার তিন ভাগের এক ভাগ কাজ হয়ে গিয়েছে। অথচ, কমিশনের পোর্টালে আপলোড-সমস‍্যার মধ্যে কী ভাবে এত কাজ হল, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন কর্তাদের একাংশ। তাই জেলা ভিত্তিক রোল-পর্যবেক্ষকদের উদ্দেশে আগের সাত দফার সঙ্গে কমিশনের নতুন নির্দেশ, এই আপলোড হওয়া তথ‍্য পুনর্যাচাই করতে হবে। নজরে রাখতে হবে ওঠা সব অভিযোগ। যে নথি তৈরির হিড়িক জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে, খতিয়ে দেখতে হবে তা-ও। এই পর্যায়ে বিএলও থেকে ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারদের (ইআরও) একাংশের ভূমিকাও কমিশনের আতসকাচের তলায় আসতে চলেছে।

কমিশন এনুমারেশনের সময়সীমা বাড়ানোর আগে কয়েক দিন ধরে টানা নথি আপলোডে সমস্যা হচ্ছিল বিএলও-দের। এই অবস্থায় কমিশন দেখছে, গত ২৩, ২৪ এবং ২৫ নভেম্বর ‘অস্বাভাবিক হারে’ তথ্য আপলোড হয়েছে। প্রথম দিন ৮০ লক্ষ, দ্বিতীয় দিন ৮৫ লক্ষ এবং তৃতীয় দিন তা ছিল ৬৫ লক্ষ! গত সোমবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মুখ‍্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগ করেছিলেন, ২৬, ২৭ এবং ২৮ নভেম্বর মিলিয়ে প্রায় ১.২৫ কোটি তথ্য আপলোড হয়েছে, যেগুলি ভুয়ো এবং তা অডিট করতে হবে।

এসআইআরের সময় বৃদ্ধির সঙ্গে এ রাজ্যে আপলোড হওয়া তথ্যের পুনর্যাচাইয়ে জোর দিয়েছে কমিশন। অবসরপ্রাপ্ত আইএএস সুব্রত গুপ্তকে বিশেষ রোল-পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। জেলাভিত্তিক আরও ১২ জন আইএএস এসআইআরে এত দিনের কাজের নজরদারি করছেন। তালিকা থেকে ‘ভূত’ তাড়াতে ইতিমধ্যেই সাত দফা বিধি নির্দিষ্ট করেছে কমিশন। তার সঙ্গে যুক্ত হল ২৩, ২৪ এবং ২৫ নভেম্বরের ‘অস্বাভাবিক এন্ট্রি’ যাচাই করা। তার সঙ্গেই বিভিন্ন ভাবে পাওয়া অভিযোগের অনুসন্ধানও করতে হবে।

কমিশন সূত্রের সন্দেহ— এই তথ‍্যের কিছুটা অসাধু ভাবে নথিবদ্ধ হয়ে থাকতে পারে। তা বৈধ করানোর চেষ্টা হতে পারে নতুন তৈরি বিভিন্ন নথি দাখিল করে। ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় নানা নথি চেয়ে আবেদনের সংখ‍্যাবৃদ্ধির কথা জানাচ্ছেন জেলা-কর্তাদেরই একাংশ। এই অবস্থায় অবৈধ ভাবে নথি তৈরি হচ্ছে কি না, খতিয়ে দেখবেন পর্যবেক্ষকেরা। এক কর্তার কথায়, “বেশ কয়েক বছর ধরে যোগ‍্য প্রায় সকলকে দুয়ারে সরকারে জাতি শংসাপত্র দেওয়ার সাফল্য দাবি করে রাজ্য নিজেই। তার পরেও এমন শংসাপত্রের বিপুল চাহিদা থেকে গেলে তা সন্দেহের। জন্ম শংসাপত্রের প্রতিলিপি দেরিতে চাওয়া নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। দেখা হবে তা-ও।”

কমিশন-সূত্রের খবর, সোমবার জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ২২০৮ বুথে কোনও মৃত, ঠিকানা বদল, ডুপ্লিকেট বা অনুপস্থিত ভোটারের সন্ধানই মেলেনি। জেলা-রোল পর্যবেক্ষকেরা কাজ শুরু করায় সেই সংখ্যা বুধবার কমে হয়েছে ২৯। কোচবিহার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হুগলিতে এমন একাধিক বুথ এলাকা রয়েছে, যেখানে এক জন ভোটারের বা তাঁদের মা-বাবার কোনও তথ্যই নেই ২০০২-এর এসআইআর তালিকায়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Special Intensive Revision West Bengal government Election Commission of India

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy