Advertisement
E-Paper

ব্যাধি নিরাময়ে শীতেরই প্রার্থনা

বুধবারের থেকে আরও কিছুটা কমে বৃহস্পতিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা আর সামান্য নামলেই এবং তা টানা কয়েক দিন স্থায়ী হলেই ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার দাপট কমবে বলে জানাচ্ছেন পতঙ্গবিদেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৪১
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

আবহাওয়া যে মেজাজ গরম করছে না, তাতে খানিকটা আশার আলো দেখছে স্বাস্থ্য ভবন। ধীরে হলেও পারদ পতন অব্যাহত থাকায় পতঙ্গবাহী রোগব্যাধি নিয়ন্ত্রণে বাড়তি সুবিধা মিলবে। তাই পারদ আর কতটা নামে, সর্বোপরি তার এই নিম্নগতি কত দিন স্থায়ী হয়, সে-দিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে স্বাস্থ্যকর্তারা।

বুধবারের থেকে আরও কিছুটা কমে বৃহস্পতিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা আর সামান্য নামলেই এবং তা টানা কয়েক দিন স্থায়ী হলেই ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার দাপট কমবে বলে জানাচ্ছেন পতঙ্গবিদেরা। তাঁরা বলছেন, তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রির নীচে নামলে মশারা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে, ধাক্কা খায় তাদের বংশবিস্তার। রাশ পড়ে মশাবাহিত রোগ সংক্রমণে। তাপমাত্রা চড়লে (১৮-১৯ ডিগ্রির বেশি হলে) সেই নিষ্ক্রিয় মশা ফের সক্রিয় হয়ে রোগ ছড়ায়।

আবহবিদেরা বলছেন, ডেঙ্গি প্রভাবিত উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা, বসিরহাট এলাকায় বুধবারেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ১৬ ডিগ্রির নীচে। তাই সেখানে মশার দাপট কমতে শুরু করেছে বলে দাবি স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তার। তিনি জানান, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে রোগ-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা অনেকটাই সম্ভব হবে।

রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও কোথাও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে প্রায় ১০ ডিগ্রিতে। শ্রীনিকেতনে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০.৪ ডিগ্রি। স্বাভাবিকের থেকে ছয় ডিগ্রি কম। রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৪-৫ ডিগ্রি নীচে রয়েছে বাঁকুড়া, বহরমপুরেও। শীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি নামলে শৈত্যপ্রবাহের সৃষ্টি হয়। আবহাওয়া দফতরের খাতায়-কলমে শৈত্যপ্রবাহ শুরু না-হলেও পশ্চিমের জেলাগুলিতে নভেম্বরের শেষেই যেন ডিসেম্বর-জানুয়ারির ঠান্ডা হাজির।

চিকিৎসকেরা বলছেন, ঠান্ডা থেকে বাঁচতে মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতা হল আপাদমস্তক গরম পোশাক মুড়ি দিয়ে থাকা। এই সর্বাঙ্গ ঢাকা পোশাক মশা থেকে মানুষকে বাঁচতে সাহায্য করে। সক্রিয় মশাও চামড়ায় হুল ফোটাতে পারে না। তাই পারদ নামতে থাকলেই কমতে শুরু করে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ।

পতঙ্গবিদেরা অবশ্য জানাচ্ছেন, তাপমাত্রা নামলেই হবে না, তাকে সেই অবস্থায় বেশ কয়েক দিন থিতুও হতে হবে। তবেই মশা বা জীবাণু জব্দ হতে পারে। সাধারণ ভাবে মশা এক মাস বাঁচে। বাইরে তাপমাত্রা নামতে থাকলে ঘরের ভিতরে অপেক্ষাকৃত গরম জায়গায় আশ্রয় নেয় তারা। অনুকূল পরিবেশ পেলে ফের তারা বাইরে বেরিয়ে আসে। অর্থাৎ মশাকে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় করে রাখতে পারদকে কমপক্ষে টানা দিন পনেরো ১৪-১৫ ডিগ্রির মধ্যে থাকতে হবে।

আবহবিদেরা জানান, তাপমাত্রা টানা এত দিন এতটা নীচে থাকবে না। তিন-চার-পাঁচ দিনের এক-একটা পর্যায়ে তাপমাত্রা কমে যায় অনেকটা। তার পরে ফের বাড়তে থাকে। আরও দিন দুয়েক তাপমাত্রার পতন অব্যাহত থাকবে। এ সপ্তাহের শেষে কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা পৌঁছে যেতে পারে ১৫ ডিগ্রির কাছাকাছি। কিন্তু আগামী সপ্তাহের গোড়া থেকেই তাপমাত্রা ফের কিছুটা বাড়তে পারে। উত্তর ভারত থেকে আর এক দফা উত্তুরে হাওয়া পৌঁছলে ফের নামবে পারদ। কোনও ঘূর্ণাবর্ত, নিম্নচাপরেখা বা নিম্নচাপ তৈরি হলে ফের মশাবাহিত রোগের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হবে।

রবিবার রাতের তাপমাত্রার পতন বাধা পেতে পারে বলে জানান হাওয়া দফতরের বিজ্ঞানী আশিসকুমার সেন। ‘‘ওই সময়ে একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা সিকিমের উপর দিয়ে বয়ে যাবে। তার ফলেই ওই পরিস্থিতি তৈরি হবে। ঝঞ্ঝাটি সরে গেলেই ফের পারদ নামার কথা,’’ বলছেন আশিসবাবু।

Dengue Malaria Temperature Winter
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy