Advertisement
E-Paper

কর্মীরাই সব, ‘নবান্ন চলো’র আগে দলকে তাতালেন অধীর

শুধু উত্তরবঙ্গেই তাঁরা প্রাসঙ্গিক, বিধানসভা ভোটের আগে এই ধারণা থেকে দলকে বার করে আনতে চাইছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সেই লক্ষ্যেই কাল, মঙ্গলবার ‘নবান্ন চলো’য় পা মেলাবেন তাঁরা। শুধু ওই কর্মসূচিই নয়, রাজধানী শহর কলকাতায় দলের সক্রিয়তা বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দিলেন প্রদেশ সভাপতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:১৭
মঞ্চে অধীর চৌধুরী, মানস ভুঁইয়া ও প্রদীপ ভট্টাচার্য। রবিবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে সুদীপ্ত ভৌমিকের তোলা ছবি।

মঞ্চে অধীর চৌধুরী, মানস ভুঁইয়া ও প্রদীপ ভট্টাচার্য। রবিবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে সুদীপ্ত ভৌমিকের তোলা ছবি।

শুধু উত্তরবঙ্গেই তাঁরা প্রাসঙ্গিক, বিধানসভা ভোটের আগে এই ধারণা থেকে দলকে বার করে আনতে চাইছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সেই লক্ষ্যেই কাল, মঙ্গলবার ‘নবান্ন চলো’য় পা মেলাবেন তাঁরা। শুধু ওই কর্মসূচিই নয়, রাজধানী শহর কলকাতায় দলের সক্রিয়তা বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দিলেন প্রদেশ সভাপতি।

কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডকে নিয়ে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে রবিবার ছিল কংগ্রেসের কর্মী সম্মেলন। একা লড়ে এবং মূলত অপরিচিত মুখ দাঁড় করিয়েই বিগত পুরভোটে কলকাতায় পাঁচটি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস। বিজয়ী কাউন্সিলরদের মধ্যে এক জন অবশ্য সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কলকাতার সব ওয়ার্ডের প্রতিনিধিদের সামনে এ দিন অধীর বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, দল ছেড়ে কেউ কেউ যাচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু কর্মীরাই দলের সম্পদ। তাঁর যুক্তি, স্থানীয় নেতা-কর্মীদের দেখেই মানুষ কংগ্রেসকে চেনেন। তাই কর্মীদেরই এলাকায় নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বা দলের উপরের তলার নেতৃত্ব এসে সংগঠন গড়ে দিয়ে যাবেন না!

স্থানীয় স্তরে সংগঠন বৃদ্ধি যদি দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হয়, কংগ্রেসের আশু লক্ষ্য অবশ্যই নবান্ন অভিযান। সবংয়ে ছাত্র হত্যা-সহ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে কাল যে অভিযানের ডাক দিয়েছেন অধীর। ছাত্র হত্যার ঘটনা নিয়ে সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়া গত সপ্তাহে যখন সেখানে অবস্থান করছিলেন, দলের সব নেতা-কর্মীকে সামিল হতে নির্দেশ দিয়েও স্বয়ং প্রদেশ সভাপতি সেই কর্মসূচিতে সামিল হননি। গিয়েছিলেন প্রদেশ স্তরের বাকি সব নেতাই। মানসবাবু অবশ্য অসুস্থ স্ত্রীকে নার্সিং হোমে রেখেও এ দিন কলকাতার সম্মেলনে এসেছিলেন। এবং অধীরের পাশে দাঁড়িয়েই তিনি ডাক দিয়েছেন, নবান্ন অভিযান সফল করে কলকাতার কর্মীদেরও বুঝিয়ে দিতে হবে তাঁরা আন্দোলনের হিম্মত রাখেন!

নবান্ন অভিযানে সর্ব স্তরের কর্মীদের সামিল হওয়ার আবেদন জানান বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী। তাঁর মতোই প্রদেশ কংগ্রেসের আর এক সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, তাঁরা নবান্নে গিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে দাবিপত্র দিতে চান। কিন্তু ডিজি যদি দাবিপত্র না নেন, তা হলে তাঁরা মাথা নিচু করে ফিরে আসবেন না! সে ক্ষেত্রে সে দিন যা ঘটবে, তার দায় নিতে হবে রাজ্য প্রশাসনকেই! সে দিন সাঁতরাগাছি, হাওড়া স্টেশন ও কলকাতায় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে জড়ো হয়ে তিন দিক থেকে নবান্নের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে কংগ্রেস। কয়েক দিন আগে চার দিক থেকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার পরে বামেদের নবান্ন অভিযানে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেধেছিল। লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ব্যবহার করেছিল পুলিশ। স্বভাবতই রাজনৈতিক শিবিরের নজর এখন থাকবে কংগ্রেসের কর্মসূচির দিকে।

বামেদের মতোই তৃণমূল এবং বিজেপি-কে এখন এক বন্ধনীতে ফেলে কংগ্রেস যে বিরোধী রাজনীতিতে জমি খুঁজছে, তা-ও এ দিনের সম্মেলনে স্পষ্ট করে দিয়েছেন দুই প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি মানসবাবু ও প্রদীপ ভট্টাচার্য। মানসবাবু বলেছেন, নরেন্দ্র মোদী ডাক দিয়েছেন কংগ্রেসমুক্ত ভারত গড়ার। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেষ্টা করছেন রাজ্যে কংগ্রেস নিধন করার! দাদা ও দিদি মিলে গিয়েছেন! প্রদীপবাবুরও বক্তব্য, কংগ্রেসকে ‘খতম’ করার চেষ্টায় নেমেই তৃণমূল নেত্রী সারদা-মামলায় মোদীর বরাভয় পাচ্ছেন! কলকাতার আর এক উল্লেখযোগ্য নেতা সোমেন মিত্র অবশ্য সম্মেলনে ছিলেন না। প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হয়েও কলকাতার খালেদ এবাদুল্লা, অজয় ঘোষেরা কেন সম্মেলনে ডাক পাননি, তা নিয়ে বিতর্কও দেখা দিয়েছে। অধীর অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, ভবিষ্যতে আর যাতে এমন না হয়, দেখা হবে।

কলকাতায় কংগ্রেসের সাংগঠনিক জেলাগুলিকে পুনর্গঠনের প্রস্তাবও এসেছে এ দিনের সম্মেলনে। উত্তর, মধ্য, বড়বাজার ও দক্ষিণ কলকাতা— এই চারটি জেলায় এখন বিভক্ত শহরে কংগ্রেসের সংগঠন। কিন্তু সীমানা পুনর্বিন্যাসের পরে বেশ কিছু বিধানসভা আসন এই জেলাগুলির এক্তিয়ারের মাঝামাঝি পড়ে যাচ্ছে। তাই সংগঠন পুনর্গঠনের ভাবনা। কলকাতার পার্শ্বস্থ মহেশতলার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর মিনতি বাগ এ দিনই কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন।

adhir choudhury boost up congress workers vocal tonic nabanna march congress nabanna march
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy