মেদিনীপুরে অধীর চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র।
মারামারির ঘটনায় গ্রেফতার হয়ে জেলে রয়েছেন জেলা কংগ্রেস নেত্রী হেমা চৌবে। তবে এই ঘটনায় এখনও সে ভাবে পথে নামেননি পশ্চিম মেদিনীপুরের কংগ্রেস নেতৃত্ব। জেলা সফরে এসে তাই উষ্মা প্রকাশ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সেই সঙ্গে নেতা-কর্মীদের বৃহত্তর আন্দোলনে নামার নির্দেশ দিলেন তিনি। সেই কর্মসূচিতে নিজে থাকারও আশ্বাস দিলেন।
খড়্গপুর লোকাল থানা এলাকার কলাইকুণ্ডায় মারামারির ঘটনায় দিন কয়েক আগে হেমাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে তিনি এখন মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি। শুক্রবার মেদিনীপুরে এসে প্রথমে সেখানেই যান অধীরবাবু। তবে হেমার সঙ্গে সাক্ষাতের আবেদন বৃহস্পতিবারই নাকচ করে দিয়েছিলেন জেল কর্তৃপক্ষ। জেলের ‘চিফ ডিসিপ্লিন অফিসার’ অসীম আচার্য অবশ্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে জেল সুপারের অফিসে গিয়ে বসার আবেদন জানান। সাংসদ হিসাবে অধীরবাবু জেল পরিদর্শন করতে পারেন বলেও জানান। তবে কোনও বন্দির সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। অধীরবাবু জানিয়ে দেন, হেমার সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দিলেই তিনি জেলে ঢুকবেন। সেই অনুমতি মেলেনি।
পরে ক্ষুব্ধ অধীরবাবু বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে যেখানে জেলখানার মধ্যে বসে সন্ত্রাসবাদীরা মোবাইল ব্যবহার করতে পারে, বাইরের খাবার খেতে পারে, সারদা-কাণ্ডের চোররা জেলখানার মধ্যে মিটিং করেছে, সেখানে আমি পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ও সাংসদ হয়েও একজন মহিলার সঙ্গে ২ মিনিট দেখা করতে পারলাম না।” হেমাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন অধীরবাবু। তাঁর কটাক্ষ, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর তাঁর সাধের বোন ভারতী বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসকে এত ভয় পাচ্ছেন কেন। একজন মহিলাকে জেলখানায় মিথ্যে মামলায় ভরে রাখতে হয়। এটাই হচ্ছে বাংলার মা-মাটি-মানুষের সরকার।”
মেদিনীপুর সংশোধনাগার সূত্রে খবর, কয়েক মাস আগে সবংয়ে ছাত্র খুনে অভিযুক্ত বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তৎকালীন কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। তারপরই কারা দফতর লিখিতভাবে সব সংশোধনাগারে নির্দেশিকা পাঠায়, কোনও বিধায়ক বা সাংসদ নিয়ম মেনে অনুমতি নিয়ে জেল পরিদর্শন করতেই পারেন। কিন্তু বন্দির সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না।
এ দিন সংশোধনাগার থেকে অধীরবাবু যান মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে। সঙ্গে ছিলেন জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়, শহর কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন খান, মহিলা কংগ্রেস নেত্রী মান্তু আহমেদ, কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিল শিকারিয়া। জেল গেটের সামনে কেন একটা মাইকের ব্যবস্থা করা হল না, তা নিয়ে সকলের সামনেই ক্ষোভ জানান অধীরবাবু। পরে জেলা নেতৃত্বকে সাফ জানিয়ে দেন, হেমা চৌবের গ্রেফতারের প্রতিবাদে জেলা জুড়ে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যেতে হবে। তা সে ধর্না, অবস্থান, পথসভা হোক বা মিছিল। জেলা নেতৃত্ব জানান, পুলিশ অনুমতি দিতে চাইছে না। অধীরবাবু তখন পরামর্শ দেন, অনুমতি না দেওয়ার কথাই মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। এরপরই তৎপর হয়েছে জেলা কংগ্রেস। জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি শম্ভুনাথবাবু বলেন, ‘‘দু’-একদিনের মধ্যে আলোচনা করে আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy